‘আমরা বৃহত্তর সদর দক্ষিণে রাজনৈতিক সহাবস্থান নিশ্চিত করতে চাই’

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম চৌধুরী
জাহিদ হাসান নাইম।।
প্রকাশ: ৪ মাস আগে

‘চলমান রাজনীতি ও প্রেক্ষিত সদর দক্ষিণ উপজেলা বিএনপি’ বিষয়ক টক শো অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২০ নভেম্বর) রাতে কুমিল্লা আল নূর হসপিটালের সৌজন্যে দৈনিক আমাদের কুমিল্লা ও জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল কুমিল্লার জমিনের যৌথ উদ্যোগে ১৫৪ তম পর্বের এ টক শো অনুষ্ঠিত হয়। সাংবাদিক, সংগঠক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখক শাহাজাদা এমরানের সঞ্চালনায় টকশো তে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম চৌধুরী।

এসময় টকশো তে চলমান রাজনীতি ও কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা বিএনপি সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা উঠে এসেছে।

আলোচনার এক পর্যায়ে মাহবুব আলম চৌধুরী বলেন, আমি স্কুল জীবনে জাসদের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম। পরবর্তীতে আমি কলেজ জীবনে জাসদের আরেকটি সংগঠন বাসদে যোগ দিই। পরে অনার্সে ভর্তি হয়ে তৎকালীন তুখোড় ছাত্রনেতা আলাউদ্দিন ভাইয়ের হাত ধরে আমি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে যোগ দিয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নিই৷ ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রদলের কমিটিতেও আমি ছিলাম। এরশাদ পতনের আন্দোলনে আমার সক্রিয় অংশ ছিলো। আমি রাজনীতি করতে গিয়ে ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে দীর্ঘদিন জেলে কাটিয়েছি। আমার পরিবারকে হেনস্থা করা হয়েছিলো। জুলাই আন্দোলনে অনেক ভাই রক্ত দিয়েছে তাদেরকে আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি৷ আর সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেছি। তবে গত ১০০ দিনে আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো দৃশ্যমান সংস্কার আমরা না দেখলেও আমাদের নেতা দেশনায়ক তারেক রহমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সময় দিতে বলেছেন। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিৎ নির্বাচনী রোডম্যাপ দিয়ে সামনে আগানো। আমি বৃহত্তর সদর উপজেলার ছাত্রদলের আহবায়ক ও পরবর্তীতে সভাপতিও ছিলাম। আমি সদর দক্ষিণে আমার যতোটুকু সম্ভব আমরা কাজ করে গিয়েছি। দল করতে গিয়ে আমি আড়াইমাস জেল খেটেছি। এছাড়াও, আমাকে আদালতে হামলা করা হয়েছিলো তখন আমার স্ত্রীকেও হামলা হয়েছিলো। প্রতিটি কর্মসূচিতে আমি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছিলাম। সদর দক্ষিণে আমাদের দলে বিভিন্ন বিভাজন সৃষ্টি হয়েছিলো৷ বিভাজনে ঠেলে দিলে আমাদের পাশাপাশি দলও ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সাবেক এমপি মনিরুল হক চৌধুরী নিজস্ব বলয়ে কমিটি গঠন করেছেন। এটা আমরা জেলায় জানানোর পরেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি। আমরা চাই ঐক্যবদ্ধ বিএনপি। কোনো কোনো কারণে আমাদের মতের মিল হয় না৷ এই কারণে আমরা সদর দক্ষিণ বিএনপি কে ঐক্যবদ্ধ করতে পারছি না৷

তিনি আরো বলেন, চাঁদাবাজদের কোনো দল নেই৷ যারা আপোসকামী তারা যুগে যুগে সুযোগসন্ধানী। দলের কেউ যদি চাঁদাবাজে সম্পৃক্ত হয় আমরা তাকে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার হাতে তুলে দিবো।

আর, কুমিল্লা সিটির ৯টি ওয়ার্ড সদর দক্ষিণ উপজেলার। সেগুলোর আলাদা মহানগর কমিটি রয়েছে। সেগুলোর দায়িত্বে আমি নেই।

তিনি আরো বলেন, এক এগারোর পরে আমাদের দল বিভিন্ন সময় মেরুকরণ হয়েছে। ২০০১ সালে মনির ভাইয়ের পক্ষে কাজ করেছি, এরপর, ২০০৮ এ সুমন ভাইয়ের পক্ষে এরপর আবার মোবাশ্বের ভাইয়ের পক্ষে কাজ করেছি। অর্থ্যাৎ, দল যাকে মনোনয়ন দিয়েছিলো আমি তার পক্ষে কাজ করে গিয়েছি। লালমাইয়ে সাংগঠনিক কোনো কমিটি নেই। আগামীতে ত্যাগী নেতাদের নিয়ে কমিটি করা নিয়ে আমরা আশাবাদী৷ আর আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি একজন সম্ভাব্য প্রার্থী৷ আমি মনে করি, এখন বয়স্কদের তুলনায় তরুণদেরকে এগিয়ে দেওয়া উচিৎ। আমরা যেভাবে দলের জন্য কাজ করেছি, আশা করি আমাদের নেতা তারেক রহমান আমাকে মূল্যায়ন করবেন। আর নমিনেশনের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী৷ তবে দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। দল যাকে মনোনয়ন দিবে, আমি তার জন্যই কাজ করবো।

আর আমি নির্বাচিত হলে এই আসনে আমি তৃণমূল পর্যায়ের ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন করতে চাই। সদর দক্ষিণে মাদক কিংবা চাঁদাবাজদের ঠাঁই হবে না।

সবশেষ বলতে চাই, আমি আজকের মাহবুব চৌধুরী হওয়ার কারণ আমার দল। তাই আমি আমি দলকে কিছু দিতে চাই। দলের জন্য কাজ করে যেতে চাই। আমরা বৃহত্তর সদর দক্ষিণে রাজনৈতিক সহাবস্থান সৃষ্টি করতে চাই। কুমিল্লা-১০ আসনের সকলে জানাতে চাই, আমাদের সুখে দুখে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত এই দলের জন্য কাজ করে যেতে চাই।