‘সাম্প্রতিক কুমিল্লা শহরের পরিবহন সেক্টর ও প্রাসঙ্গিক কথা’ বিষয়ক ১৪৪তম টক শো অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (৬ অক্টোবর) রাতে কুমিল্লা আল নূর হসপিটালের সৌজন্যে দৈনিক আমাদের কুমিল্লা ও জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল কুমিল্লার জমিনের যৌথ উদ্যোগে এ টক শো অনুষ্ঠিত হয়। সাংবাদিক, সংগঠক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখক শাহাজাদা এমরানের সঞ্চালনায় টকশো তে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহবায়ক রেজাউল কাইয়ুম।
এসময় টক শো তে সাম্প্রতিক কুমিল্লা শহরের পরিবহন সেক্টর নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা উঠে এসেছে।
আলোচনার এক পর্যায়ে, রেজাউল কাইয়ুম বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মুক্তিযোদ্ধার ছেলেরাও অংশ নিয়েছিলো। পতিত স্বৈরাচার সরকার বহু লোককে অত্যাচার নির্যাতন করেছে। তার ফলস্বরূপ ছাত্ররা এবং জনতারা আর সহ্য করতে না পেরে এই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল। বিএনপি ধৈর্য্য ধরেছে, না হলে দেশে আরো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতো। দেশনেতা তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা নেতাকর্মীরা সবাই ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিলাম এবং ঘরে ফিরে গিয়েছিলাম। আমার বাবা, দাদা সবাই সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন । একমাত্র আমিই রাজনীতিতে এসেছি। কোনো ট্রান্সপোর্ট এর মালিক যদি বলতে পারে আমি চাঁদা নিয়েছি তাদের কাছ থেকে, কিংবা চাঁদা নিয়ে তাদেরকে বাস চলাচলের অনুমতি দিয়েছি, তাহলে আমি সাথে সাথে রাজনীতি থেকে অবসর নেব। আমি গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়ার বা বন্ধ করার কে ? আমার তো এখানে কোন গাড়ি নেই। আমার অপরাধ শাষনগাছা এলাকায় আমার বাড়ি।
জনগণ যেখানে সুবিধা পাবে সেখানেই যাবে। নতুন নতুন বাস সার্ভিস আসলে সেখানে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হবে এবং এতে ভাড়া কমবে ও জনগণ লাভবান হবে। অনেকে প্রতিহিংসা থেকে আমার নামে বিভিন্ন ধরনের বদনাম ছড়াচ্ছে।
পরিবহন মালিক সমিতির কয়েকজন ঘুরেফিরে এই পরিবহন সেক্টরটাকে পরিচালিত করেছে। আমি কোথাও থেকে চাঁদা চেয়েছি এটা কেউ প্রমাণ করতে পারলে আমি এর শাস্তি গ্রহণ করব। পরিবহন বন্ধ করা কিংবা চালু করার ক্ষমতা তো আমার হাতে নেই। এখানে আমি কি করতে পারি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্ররা ঢাকার ভাড়া ২২০ টাকা করে দিয়েছিলো, তারা পরে আবার সেটা ২৫০ করে দিয়েছিলো। তারা ৩০০ করার পরিকল্পনাও করেছিলো। নতুন পরিবহন আসায় তাদের সেই পরিকল্পনা সফল হয় নাই। তাই তারা আমার নামে দুর্নাম ছড়াচ্ছে। পরিবহন সেক্টরকে জিম্মি করেছে রেখেছে আবদুর রব জুলহাস। তার ভাই ডা. আনিস আওয়ামীলীগের বড় নেতা ছিলেন। গত ১৬ বছর ভাইয়ের দাপটে সে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর অত্যাচার করেছে। শাষনগাছার শ্রমিক দলের নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছে। সে বিএনপির নাম ভেঙ্গে চলেছে কিন্তু গত ১৬ বছর বিএনপির কোন কাজ সে করে নাই।
আমাদের ১৬ বছরের আন্দোলন ছিল জুলুমের বিরুদ্ধে। এখন সেই জুলুমকে আমরা প্রশ্রয় দিতে পারি না। বর্তমানে বিভিন্ন রুটে ৩/৪ টি করে গাড়ি চলছে। এতে প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হচ্ছে। অর্থাৎ, সার্ভিস যত বেশী হবে ভাড়া তত কমবে। ঢাকা রুটেও ট্রান্সপোর্ট বাড়ছে, যার ফলে ভাড়াও ধীরে ধীরে কমে যাবে।
আর, অনেকে বলে শাসনগাছা এলাকায় আমার ছেলেদের দিয়ে জিবি নেওয়া হয়। এটা মিথ্যা কথা। আমরা এর বিরুদ্ধে। এমন কাউকে পেলেই পুলিশে ধরিয়ে দেওয়া হবে। আমার বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়ানোর কারণে আমি জুলহাসের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সেই ১৯৮৬ সাল থেকে আমি জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সাথে রয়েছি। ২০১৭ সালে উপজেলা নির্বাচনে দল আমাকে নমিনেশন দিয়েছিলো। আশা করি আগামীতেও দিবে। আর জনগণ আমাকে বিজয়ী করবে। কিন্তু, নমিনেশন না দিলে আমি বিদ্রোহ করবো না। যাকে দিবে তার পক্ষেই কাজ করে যাব। যদি নমিনেশন দেয়, তাহলে বিজয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। মানুষ বিপদের সময় আমাকে পায়। আমরাও মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়াই। প্রতিটা মানুষের হৃদয়ে থাকার জন্য আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি।
আমি নির্বাচিত হলে, এই সদর উপজেলাকে জুলুমমুক্ত করবো, বেকারত্বমুক্ত করতে চেষ্টা করবো, শিক্ষার হার বাড়াবো। মাদক মুক্ত করার চেষ্টা করবো। মাদক বিক্রেতাদের পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করবো। সদর উপজেলাকে মডেল উপজেলায় রূপান্তরিত করব ইনশাআল্লাহ।