সম্প্রতি এক বিকেলে দেখা যায়, নগরের কান্দিরপাড় জিলা স্কুল সড়ক লাগোয়া বধূয়া ফুড ভিলেজে শতাধিক ধরনের ইফতারির পসরা সাজানো হয়েছে। রেস্তোরাঁটিতে এবারও ইরানি জিলাপির চাহিদা বেশি। প্রতি কেজি ইরানি জিলাপি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, তারাই কুমিল্লায় সবার আগে পাকিস্তানি বিফ বিরিয়ানি ও আফগানি খাসির কাবলি পোলাও নিয়ে এসেছে। মাত্র ২০০-২২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে এই মুখরোচক খাবার। আর ৭০০ টাকায় মিলছে খাসির আস্ত পায়ের রোস্ট। মাটির হাঁড়িতে রান্না করা প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৩৫০ টাকায়। এ ছাড়া আস্ত সোনালি ডিম ভেতরে দিয়ে তৈরি করা খাঁচি কাবাবের দাম পড়ছে ৩৭০ টাকা।
প্রতিবছরই ইফতারে নতুন নতুন আইটেম যুক্ত করা হয় জানিয়ে বধূয়া ফুড ভিলেজের স্বত্বাধিকারী ফুয়াদ আহমেদ বলেন, ‘এবারও শতাধিক আইটেম নিয়ে হাজির হয়েছি আমরা। এই সংখ্যা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছি। পাকিস্তানি বিফ বিরিয়ানি, আফগানি খাসির কাবলি পোলাওসহ কয়েকটি আইটেম আমরাই প্রথম কুমিল্লায় নিয়ে এসেছি। আমাদের ইরানি জিলাপি কয়েক বছর ধরেই চাহিদার শীর্ষে। আমাদের এখানে নেহারি, তাওয়া ঝাল ফ্রাই, জাফরানি দুধ নান রুটি, নাগরিস কোপতা, বিফ টিক্কা কাবাব, শাহি হালিম, বাদামের শবরত, ফিরনি, গাজরের হালুয়া, চিকেন সাসলিক চিকেন টিক্কা, চিকেন ললিপ, বিফ শিক, বিফ সাসলিক, চিকেন তন্দুরি, চিকেন কেরাম লেগ, সামি কাবাব, জালি কাবার, চিকেন টোস্টসহ শতাধিক আইটেম রয়েছে।’
চার দশকের বেশি সময় ধরে কুমিল্লা নগরের মানুষের কাছে জনপ্রিয় ডায়ানা হোটেলের হালিম। রমজান মাসে নগরের রাজগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত এই হোটেলে প্রতিদিনই শতাধিক কেজি হালিম বিক্রি হচ্ছে। এই হালিমের স্বাদ বেশ ভালো বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
বর্তমানে গরু, খাসি ও মুরগির মাংস দিয়ে তৈরি বিভিন্ন মুখরোচক খাবার মানুষ বেশি পছন্দ করছেন বলে দাবি করেন কান্দিরপাড় এলাকার বাসিন্দা বেলাল হোসেন। তাঁর মতে, কয়েক বছর ধরেই কুমিল্লার ইফতারি বাজারে নতুন নতুন আইটেমের সংযোজন হচ্ছে।
কুমিল্লার ইতিহাসবিদ আহসানুল কবীর বলেন, চার দশক আগেও কুমিল্লার মানুষের ইফতারে এসব মুখরোচক ও বৈচিত্র্যময় খাবার ছিল না। আগে কুমিল্লার মানুষের ইফতারে পাতে থাকত দই, চিড়া, কলা, খই-মুড়ি ইত্যাদি। এরপর আসে ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, মুড়িসহ বিভিন্ন আইটেম। রাজধানীর দেখাদেখি গত চার দশক সময়ের মধ্যে প্রতিনিয়তই কুমিল্লার মানুষের রুচির পরিবর্তনও ঘটেছে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কুমিল্লায় এখন নতুন নতুন ইফতারি তৈরি হয়। এ কারণে বর্তমানে নগরের হোটেল ও রেস্তোরাঁগুলোর ইফতারি বিক্রির আয়োজনে মুখরোচক ও বৈচিত্র্যময় খাবার দেখা যাচ্ছে। প্রথম আলো