ঢাকা থেকে নোয়াখালীগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে ফুটফুটে এক ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক প্রসূতি। শনিবার সন্ধ্যা সোয়া ৮ টার দিকে কুমিল্লা স্টেশনের অদূরে সদর রসুলপুর ক্রসিং এলাকায় সন্তান জন্ম দেওয়ার এই ঘটনা ঘটে।
প্রসূতির নাম তানিয়া আক্তার (১৯)। তিনি নরসিংদী জেলার মাধবদী এলাকার এরশাদ মিয়া( ২১) এর স্ত্রী। তানিয়া আক্তারের বাড়ি নোয়াখালী জেলার সদর উপজেলার সোনাপুর এলাকায়। তিন বছর আগে বিয়ে হয় তাদের।
মা ও শিশুকে কুমিল্লা নগরীর শাসনগাছা খিদমাহ স্পেশালাইজড হাসপাতাল ভর্তি করা হয়। নবজাতক ও মা দু’জনই সুস্থ রয়েছেন বলে হাসপাতালের চিকিৎসক জানিয়েছেন।
ওই ট্রেনে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী মাঈন উদ্দিন বাবলু জানান, নরসিংদী স্টেশন থেকে নোয়াখালীর উদ্দ্যেশ্যে উপকূল এক্সপ্রেসের ‘খ’ বগির ৪৮-৪৯ নং সিটে উঠেন এরশাদ-তানিয়া দম্পতি। ট্রেনটি রসুলপুর ক্রসিং এলাকায় আসতেই প্রসব বেদনা উঠে তানিয়ার। বিষয়টি জানতে পেরে ট্রেনে কর্তব্যরত গার্ডরা ওই বগির অন্য যাত্রীদের সরিয়ে নেন এবং সেখানে থাকা মহিলা যাত্রীদের সহযোগীতায় তার প্রসবের ব্যবস্থা করেন। সবার সহযোগিতায় চলন্ত ট্রেনেই নিরাপদে ফুটফুটে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন তানিয়া। পরে, ট্রেনটি কুমিল্লা স্টেশনে থামলে ট্রেনে কর্তব্যরতরা দ্রুত মা ও নবজাতককে খিদমা হাসপাতালে ভর্তি করেন।
কুমিল্লার সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসাইন রোববার ( ৬ নভেম্বর) দুপুরে জানান, সদর রসুল পুরে ট্রেনে সন্তান প্রসবের খবর জানতে পেরে আমি ফোন করে খিদমাহ হাসপাতালে সন্তানের মা তানিয়া আক্তারের সাথে কথা বলেছি। সন্তান ও মায়ের খোঁজ খবর নিয়েছি। মা ও সন্তান দুজনেই সুস্থ্য আছেন। পিতা মাতার সাথে কথা বলে বুঝতে পারলাম তারা দুজনেই অনেক খুশি। খিদমাহ হাসপাতাল কতৃপক্ষের সাথে কথা বললে তারা জানান, এখন পর্যন্ত ট্রেনে জন্ম নেয়া নবজাতক শিশু ছেলেটি ও মা তানিয়া আক্তার সুস্থ্য থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের রিলিজ করে দেন।
রোববার বেলা ২ টা ৪০ মিনিটে খিদমা জেনারেল ও স্পেশালাইজড হাসপাতালের এমডি মাফফুজুর রহমান ভুইয়া জানান, ‘ সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসাইন স্যার আমাদের হাসপাতালে ফোন করে ট্রেনে জন্ম নেয়া নবজাতকের মায়ের সাথে কথা বলেন। তিনি মা ও নবজাতক ছেলের খোঁজ খবর নেন। আমরাও অত্যন্ত খুশি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন বিল নেইনি এবং ঘন্টা খানেক আগে একটি এ্যামবুলেন্স ভাড়া করে তাদেরকে নোয়াখালী বাসায় পৌছে দেয়ার ব্যাবস্থা করি। আমাদের এ্যাম্বুলেন্স অন্য রোগী থাকায় এ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া ডাক্তার এনামুল নিজ থেকে দিয়ে তাদের বাড়ীতে পৌঁছানোর ব্যাবস্থা করেন। “