চান্দিনায় তলিয়ে গেছে ৬ হাজার হেক্টর আউশ ধানের মাঠ

চান্দিনা প্রতিনিধি।।
প্রকাশ: ৮ মাস আগে

কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলায় সপ্তাহ ব্যাপী টানা বৃষ্টির কারণে ফসলের মাঠ পানিতে তলিয়ে গেছে। চলতি মৌসুমে পেকে যাওয়া আউশ ধান ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে কৃষকরা। উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় এবছর ৯হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে আউশ ধানের আবাদ করা হয়েছে। এর ৪০শতাংশ ধান ইতোমধ্যে কৃষকরা ঘরে তুলেছে। বাকী প্রায় ৬হাজার হেক্টর জমির আউশ ধান ফসলের মাঠে রয়ে গেছে। এর বেশিরভাগই আক্রান্ত। দীর্ঘদিন পানি আটকে থাকলে ক্ষতির সম্মুখিন হবে এই ফসলটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) উপজেলা কৃষি বিভাগ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। কর্মকর্তা জানিয়েছেন উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ৬২০ হেক্টর জমিতে আমনের বীজতলা করা হয়েছিল। বেশিরভাগ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বীজতলা থেকে পানি না নামলে এগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
চান্দিনার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার সোহেল জানান, শধুমাত্র পৌর এলকার ৩৩৫ হেক্টর জমির আউশ ধান ঝুঁকিতে রয়েছে। সপ্তাহের মধ্যে কাটতে না পারলে সমস্যা হতে পারে।
উপজেলার পানিপাড়া গ্রামের উদ্যোক্তা আবুজর গিফারী জানান, ১০ একর জায়গায় মৎস্য চাষ প্রকল্প গড়ে তুলেছেন তিনি। বর্তমানে পাহাড়ি পানির ঢল তীব্র স্রোতের সাথে মাঠে প্রবেশ করছে। প্রকল্প রক্ষা করার জন্য বাজারে জালও পাওয়া যাচ্ছে না। পানি বাড়তে থাকলে বিশাল অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখিন হবেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কৃষকরা অনেক আশা নিয়ে আউশ ধান আবাদ করেছিল। ফলন ভালো হয়েছিল। পেকে সোনালী কালার হয়েছে। এখন কাটার সময় হয়েছে। একটানা বৃষ্টির পানিতে সমস্ত ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এদিকে অতি বৃষ্টির কারণে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ২৪৫ হেক্টর জমিতে চাষ করা মৌসুমী সবজী লাউ, ঢেঁড়শ, করোলা, বেগুন, বরবটি, চিচিঙ্গা, ধুন্দুলসহ বিভিন্ন সবজী আবাদী জমিও পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে এগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
অপরদিকে বিভিন্ন এলাকায় মাছের ঘের পানিতে তলিয়ে গেছে। প্রকল্প থেকে পানির সাথে বেড়িয়ে গেছে মাছ। ক্ষতির মুখে পড়েছেন চাষীরা। পানিপাড়া গ্রামের মোতালেব হোসেন, কালাম ভূইয়া, ইব্রাহীম ভূইয়া সহ অনেকের মৎস্য প্রকল্প ইতোমধ্যে পানিতে ভেসে গেছে। আবার কিছু প্রকল্পের পাড়ে পানি ছুই ছুই অবস্থা। ফলে আতঙ্কে রয়েছেন তারা।
এব্যাপরে চান্দিনার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম জানান, এ উপজেলার কৃষকরা ২৫ হেক্টর জমিতে ইতোমধ্যে রোপা আমন আবাদ করেছিলো। সেগুলোও পানিতে তলিয়ে গেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে, রৌদ্রের দেখা পেলে কৃষকরা ধান কাটতে পারবে। সপ্তাহের মধ্যে ধান কেটে মারাই ও শুকাতে পারলে আর্থিক ক্ষতি কিছুটা কম হবে। তিনি কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে বলেন- যাদের বীজতলা ক্ষতি হবে তারা বিআর-২২ জাতের বীজ দিয়ে পুনরায় বীজতলা করতে পারবেন। এটা এই মৌসুমে আবাদ করার সময় রয়েছে।