কুমিল্লা জেলা এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলন ও দাম ভালো থাকায় খুশি কৃষক। হিমাগারে জায়গা-স্বল্পতার কারণে উৎপাদিত আলু সংরক্ষণ নিয়ে চিন্তায় পড়তেন কৃষক। তবে সেই শঙ্কা এখন কেটেছে। বাজারে বাড়তে শুরু করেছে আলুর দাম।
এদিকে জেলার পর্যাপ্ত কোল্ড স্টোরেজ আছে বলে জানাচ্ছেন আলু ব্যবসায়ী ও কৃষকরা। এ বছর হিমাগার মালিক সমিতি প্রতি বস্তায় ভাড়া নির্ধারণ করেছে ১০০ কেজিতে ৩০০ টাকা করে। কিন্তু সব মিলে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের কোল্ড স্টোরেজে ভাড়া দিতে হচ্ছে ৩০০ টাকা করে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানা যায়, আবহাওয়া ভালো ও বন্যায় চরের কৃষিজমিতে পলি জমার কারণে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বরাদ্দ না থাকায় অন্যভাবে সহায়তা করতে না পারলেও কৃষি কর্মকর্তারা পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের সহযোগিতা করছেন। পুরো জেলায় চলতি মৌসুমে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ হাজার ২৫৪ হেক্টর। এ পর্যন্ত অর্জন হয়েছে ৮হাজার পাঁচশত দশ হেক্টর ।
কৃষকরা বলছেন, জমি থেকে আলু তুলতে শ্রমিকদের খরচ বহন করতে হিমশিম খেতে হয়। এছাড়া জেলার বাইরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় স্থানীয় মধ্যস্বত্ব ভোগীদের কাছে আলু বিক্রয় করতে হয়। ফলে কৃষকের চেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছেন মধ্যস্বত্ব ভোগী আলু ব্যবসায়ীরা।
কুমিল্লার গোমতি নদী চর এলাকার আলু চাষি রাজিব সাহা বলেন, বাজারে হঠাৎ করে আলুর দাম কমে যাওয়ায় তেমন লাভ হচ্ছে না। গত কয়েকদিন আগেও প্রতি বস্তা (৮০ কেজি) আলু প্রকার ভেদে ২৮শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা বস্তা বিক্রি হয়েছে। এখন আলু বিক্রয় হচ্ছে ২হাজার টাকা বস্তা।
একই এলাকার আলু চাষি দুলাল জসিম সর্দার বলেন, মাত্র তিন বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছি, আলু তোলা শুরু করছি, সম্পূর্ণ আলু তোলার পর বোঝা যাবে লাভ ক্ষতি। আমরা জমি থেকে সরাসরি মধ্যভোগী আলু ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করায় তেমন একটা লাভ করতে পারচ্ছেন না।
চান্দিনা এলাকার আলু চাষি মাহফুজ আহমেদ, দুই বিঘা জমিতে ৪০ বস্তা (৮০ মন) আলু উৎপাদন হয়। বিঘাপ্রতি খরচ হয় ২০ হাজার টাকার উপরে। আর ২০ বস্তা আলু বিক্রি হয় ৩০ হাজার টাকা। সব খরচ বাদ দিয়ে বিঘা প্রতি ৮/১০ হাজার টাকা লাভ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
দেশের বৃহত্তম কাঁচা বাজার চান্দিনার নিমসার বাজারের মধ্যস্বত্ব ভোগী আলু ব্যবসায়ী শফিকুল রহমান বলেন, আমরা কৃষকের জমি থেকে কম দামে আলু কিনে ভ্যানে করে পুকুরে নিয়ে ধুয়ে বস্তায় ভরি তারপর নিমসার বাজারে নেওয়া হয় । পরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করি। এখানে শ্রমিকদের খরচ দিয়েও মোটমুটি ভালোই লাভ হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপপরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, কুমিল্লার কৃষকরা পুরনো জাতের ডায়মন্ড আলু চাষ করে । যার কারণে আলুর উৎপাদন অনেক কম হয়।