নাঙ্গলকোট উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া আক্তার লাকী জানান, এ উপজেলার প্রায় শতভাগ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। আমরা দুর্গতদের তালিকা করার চেষ্টা করছি। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো চালু করা হয়েছে। বন্যাদুর্গতদের ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
জেলার চৌদ্দগ্রামের গুণবতী গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন জানান, এ গ্রামের একটি বাড়িও প্লাবিত হওয়া থেকে বাকি নেই। বাড়িঘর, মাছের ঘের, ফসল সব পানির নিচে। মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, আকস্মিক এমন বড় বন্যায় মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়েছে। এলাকাগুলো থেকে বিচ্ছিন্নভাবে খবর পাচ্ছি। চেয়ারম্যানরা অধিকাংশ কাজে যোগ না দেওয়ায় ইউপি সচিবদের থেকে তথ্য নিচ্ছি। তথ্য পেলে ত্রাণসহ অন্যান্য সহায়তা শুরু করব। লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
জেলার মনোহরগঞ্জের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ বলেন, পুরো উপজেলার প্রায় সব সড়ক পানির নিচে। পুকুর, দিঘি থেকে শুরু করে মাছের ঘের- সব কিছুই প্লাবিত হয়েছে। মানুষের দুর্ভোগ এখন অবর্ণনীয়।
বুড়িচংয়ের বাজেবাহেরচর গ্রামের বাসিন্দা সুমন মিয়া জানান, আমাদের গ্রামসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি নিচু গ্রাম গোমতীর পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ঘরে থাকতে ভয় পাচ্ছি। সাপ-বিচ্ছু ঘরে ঢুকে পড়তে পারে।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমেন শর্মা বলেন, গোমতী নদীর সদর অংশের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রতিনিয়ত পানি বাড়ছে। উপজেলার পাঁচথুবি ও আমড়াতলী ইউনিয়নের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হয়েছে। আমরা মাঠে রয়েছি।
জেলার দেবীদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, গত বুধবার রাতে সেচ প্রকল্পের ড্রেন ছাড়াও কয়েকটি স্থান দিয়ে কিছু পানি বের হচ্ছিল। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তা বন্ধ করা হয়। কিন্তু অবস্থা এখন বেগতিক। বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করতে যাচ্ছে।
কুমিল্লা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী বলেন, জেলায় বুধবার পর্যন্ত ১৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার আরো কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হবে। বন্যাদুর্গতদের চাল ও শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।