কুমিল্লার দৌলতপুরে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে মারধর : ৭ দিন পর মৃত্যু

আটক-১, রিমান্ড দাবি করছেন পরিবার
স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৩ সপ্তাহ আগে

কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার ৩নং দক্ষিণ দূর্গাপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামে মো: মিজানুর রহমান(৫০) কে বেধরক মারধর করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে একই গ্রামের রাশেদুল ইসলামসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে। নিহতের স্ত্রী মমতাজ বেগম বাদী হয়ে গত ১৮ মে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ মাত্র ১জনকে গ্রেফতার করেছে।
গত ১৫ মে বৃহস্পতিবার আনুমানিক রাত ১০ টার দিকে দৌলতপুর চৌমুহনী মোড়ে খোরশেদ কন্সট্রাকশনের ভিতরে এ ঘটানাটি ঘটে।
মামলার আসামীরা হলেন, কোতোয়ালি মডেল থানার দৌলতপুর গ্রামের রাশেদুল ইসলাম(৩০),মো: রায়হান(২৮) উভয় পিতা মৃত খোরশেদ আলম, মো. আক্কাছ(৪৬) পিতা অজ্ঞাত , একই গ্রামের জিলানী (৩২) এবং হাতিগাড়া গ্রামের মো. বিল্লাল(২৭) পিতা দুলাল ওয়াদুদ সহ আরো ৫/৬ জন অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তি। মামলার ১ নং আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সরেজমিনে জানা যায়, মৃত মিজানুর রহমান একজন স্থানীয় ঠিকাদার ব্যবসায়ী। তিনি অনেক বছর ধরে ১ নং আসামি রায়হানের বাবা খোরশেদ আলমের কাছ থেকে ঠিকাদারির প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করতেন। পরবর্তীতে খোরশেদ আলম মারা গেলে তিনি নিজের পছন্দমত বিভিন্ন জায়গা থেকে মালামাল ক্রয় করতেন। তারপর থেকে রায়হান এসব বিষয় নিয়ে ভুক্তভোগী মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে টাকা পাওনার মিথ্যা ঘটনা সাজায়। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং সাজানো। এরপর থেকে নানা ভাবে রায়হান তাকে বিরক্ত করতে থাকে। যার প্রেক্ষিতে গত ১৫ মে বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে আসামী রাশেদ মিজানুর রহমানকে বাসা থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে মিজানুর রহমান উপস্থিত হলে, রাশেদ ও রায়হানসহ তার দলবল মিলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মিজানুর রহমানের উপর অতর্কিত আক্রমণ করে। ফলে মিজানুর রহমানের মাথায় প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় ও ঘাড়ে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন এবং এলাকাবাসী তাকে দ্রুত উদ্ধার করে কুমিল্লা টাওয়ার হাসপাতালের ভর্তি করে। তার অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। পরবর্তীতে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২২ মে বৃহস্পতিবার ভোর ৬ টায় মৃত্যু বরণ করেন।

নিহত মিজানুর রহমানের স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন, রাশেদুল ইসলাম ও রায়হান মাদকাসক্ত। যে কারনে আমার স্বামী তাদের বাবার মৃত্যুর পর তাদের সাথে আর ব্যবসায়ী জিনিসপত্র কেনাকাটা করতেন না। যার কারনে তারা হিংসার বশবর্তী হইয়া আমার স্বামীর বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা অভিযোগ তুলে। তারপর তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে পুর্ব পরিকল্পনা করে আমার স্বামীকে সেখানে ডেকে নিয়ে যায়। আমার স্বামী যাওয়ার কিছুক্ষনের মধ্যেই রাশেদ ও রায়হানসহ সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মারে এবং ইট দিয়ে আমার স্বামীর মাথায় এবং ঘাড়ে আঘাত করে। পরে কুমিল্লা হাসপাতালের পর ঢাকা নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। আমি আমার স্বামী হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। গ্রেফতারকৃত মূল ঘাতক রাশেদকে অনতিবিলম্বে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই আমার স্বামীকে কেন হত্যা করেছে তার রহস্য জানা যাবে। এবং আমি দ্রুত বাকী আসামীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।

আমরা সেই আসামির রিমান্ড দাবি করছি। যাতে তদন্ত করে জড়িত সকলকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়