”চলমান রাজনীতি ও জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির একাল-সেকাল” বিষয়ক টক শো অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১১ নভেম্বর ) রাতে দৈনিক আমাদের কুমিল্লা ও জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল কুমিল্লার জমিনের যৌথ উদ্যোগে এ টক শো অনুষ্ঠিত হয়। সাংবাদিক, সংগঠক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক লেখক শাহাজাদা এমরানের সঞ্চালনায় ১৫২ তম পর্বের টক-শো তে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মজলিসে শুরা সদস্য, সাবেক বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মোবারক হোসাইন। এসময় টকশোতে চলমান রাজনীতি ও জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির একাল-সেকাল নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা উঠে এসেছে।
আলোচনায়, ড. মোবারক হোসাইন বলেন, গত ৫ আগষ্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে একটি নতুন বাংলাদেশর সূচনা হয়েছে। একটি মীমাংসিত বিষয়কে অন্যায় ভাবে দমন করতে গিয়ে এই ফ্যাসিবাদের বিদায় হয়েছে। যা আল্লাহ তায়ালার বড় একটি নেয়ামত। আর বর্তমানে যিনি দায়িত্বে আছেন তিনি নিঃসন্দেহে একজন বড় মাপের মানুষ। ড. ইউনুস শুধু বাংলাদেশেরই না তিনি নোবেল জয়ী একজন বিশ্ব নেতা। তাকে বিশ্বের সবাই চিনে। বর্তমানে যারা সরকারে আছেন তারা চেষ্টা করছেন দেশের সংস্কার করার জন্য। বিভিন্ন চেয়ারে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা বসে আছে । তাদেরকে চিহ্নিত করে সংস্কার করতে একটু সময় লাগবে। ১৬ বছরের জঞ্জাল কয়েক মাসে সমাধান করা সম্ভব না। তবে তাদের উচিত সংস্কারের পাশাপাশি দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থাও করা।
এমপি বাহার এবং তার মেয়ে সূচি কুমিল্লা ৫ এরিয়া দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, যারা এই খুনিদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে তারা শহীদের রক্তের সাথে বেঈমানী করেছে। এ কাজে যারা জড়িত তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা দরকার।
আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা জন্য ইসলামি দল গুলোর ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। সবাই চায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হোক কিন্তু কেউ ঐক্য করতে চায় না। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে শহীদের রক্তের সাথে কেউ যেন বেঈমানী না করে। তারা চাচ্ছে দূর্নীতি ও সন্ত্রাস মুক্ত একটি স্বাধীন বাংলাদেশ। তরুন ছাত্রদের সেই ভাবনা বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
আপনারা দেখেছেন গত ১৬ বছর সব চেয়ে মজলুম দল হচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আমার সেই দলের সিনিয়র নেতাদেরকে একটি ভূয়া ট্রাইবুনাল করে ফাসি দিয়েছে। সেখানে আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মতো জনপ্রিয় নেতাকে তারা হত্যা করেছে। সেই হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর চেয়ে নির্যাতিত আর কোন দল নেই।
আমাদের দলে নিজের থেকে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। দল যাকে চায় তাকেই সবাই সমর্থন করে। আমার দলের সিনিয়র নেতারা আমাকে কুমিল্লা ৫ বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া মনোনীত করেছে। আমি কেন্দ্রীয় ভাবে দায়িত্ব পালন করায় নিজ এলাকায় ঐরকম ভাবে সময় দিতে পারি নি। এখন এলাকাতে সময় দেওয়ার চেষ্টা করছি। আমি বিশ্বাস করি মানুষ যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেবে।
কুমিল্লার দুঃখ বলা হয় গোমতী নদীকে। সেই গোমতীকে সংস্কার করে উন্নয়ন করতে হবে। আর আমার নির্বাচনী এলাকা বুড়িচং – ব্রাহ্মণপাড়ার রাস্তা ঘাটের অবস্থা খুবই খারাপ। অনেকটাই যাদুঘরে রাখার মতো। উন্নয়নের দিক থেকে আমরা অনেক পিছয়ে আছি। এই উপজেলা গুলোতে উন্নয়ন করতে হলে সবার আগে রাস্তা ঘাট গুলো সংস্কার করতে হবে। আমাদের কুমিল্লার গ্যাস ছাড়া দেশে যাচ্ছে অথচ আমরাই গ্যাস পাচ্ছি না। বুড়িচং- ব্রাহ্মণপাড়া সীমন্তবর্তী এলাকা তাই এই দুই উপজেলা দিয়ে শুনেছি বিপুল পরিমাণে মাদক আসে। উন্নয়ন করতে হলে এই দুই উপজেলা থেকে মাদককে চিরতরে নির্মূল করতে হবে।
মানুষের ইচ্ছে শক্তি থাকলে সবই সম্ভব। মাদক নির্মূল করতে হলে আমাকে বেশি বেশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। এটা করা গেলেই মাদক নির্মূল হয়ে যাবে।
শিক্ষা বিষয় তিনি বলেন, বর্তমানে আমরা দেখেছি দেশে এ প্লাসের সংখ্যা অনেক বেশি। তারা এ প্লাস পায় কিন্তু ঐরকম মেধাবী না। তারা অনেকটাই তলাবিহীন জুড়ির মতো। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে অনেক সংস্কার করতে হবে। বহি বশ্বের মতো বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করতে হবে যেখানে ছাত্ররা পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেকে যোগ্য হিসেবে তৈরি করতে পারবে। কুমিল্লা ৫ বুড়িচং- ব্রাহ্মণপাড়ায় বিএনপির দুই প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশী হয়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। হাজী জসিম ভাই ও চেয়ারম্যান মিজান ভাই দু’জনই আমার প্রিয় লোক । যে মনোনয়ন পাবে আমি তার সাথেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে প্রস্তুত ইনশাআল্লাহ।