নাঙ্গলকোটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি লাখ-লাখ মানুষ, নিহত ১

২০০ কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা
নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি :
প্রকাশ: ৭ মাস আগে

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে উপজেলার অনেক এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার অধিকাংশ এলাকায় লাখ-লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। গ্রামীণ অধিকাংশ সড়ক ও ফসলি মাঠ পানিতে তলিয়ে গেছে। উঁচু জমিতে করা আমন ধানের বীজতলা পানিতে ডুবে গেছে। ভেসে গেছে পুরো উপজেলার পুকুর ও খামারের মাছ। মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে পোল্ট্রি শিল্প। পানিতে তলিয়ে পৌরসভার দাউদপুর গ্রামের কেরামত আলী নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

বিশেষ করে উপজেলার সাতবাড়িয়া, বক্সগঞ্জ, ঢালুয়া, মৌকারা, রায়কোট উত্তর, রায়কোট দক্ষিণ, জোড্ডা পূর্ব, জোড্ডা পশ্চিম, আদ্রা উত্তর, আদ্রা দক্ষিণ, বাঙ্গড্ডা ও পেরিয়া ইউনিয়নের বেশির ভাগ এলাকা তলিয়ে গেছে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় বুধবার সন্ধ্যা থেকে উপজেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বহুতল ভবনকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন।

জানা যায়, ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পানিতে ডাকাতিয়া নদীর পানি বিপদসীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পানি উপচে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। উপজেলার ঢালুয়া-চিওড়া ও বক্সগঞ্জ-গুনবতী আঞ্চলিক সড়ক সহ বিভিন্ন আঞ্চলিক সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নৌকায় করে বণ্যার্ত মানুষকে উদ্ধার করে নিকটস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলেও বেশির ভাগ মানুষ এখনো পানিবন্দী। বন্যার পাশাপাশি পুরো উপজেলা বুধবার সন্ধ্যা থেকে থেকে বিদ্যুৎ নেই। পানি বন্দি মানুষের রান্না করার অসুবিধার কারণে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন বৃদ্ধ, শিশু ও অসুস্থরা।

নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া আক্তার লাকী বলেন, টানা বৃষ্টির ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলের কারনে বুধবার সকাল থেকে নাঙ্গলকোট উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে গেছে। ভারি বর্ষণের ফলে আরো অবনতির আশংকায় উপজেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বহুতল ভবনকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। বণ্যার্ত মানুষকে নিকটস্থ আশ্রয় কেন্দ্রে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া উপজেলার সাতবাড়িয়া, বক্সগঞ্জ, মৌকরা, রায়কোট, জোড্ডা পূর্ব, জোড্ডা পশ্চিম ইউনিয়নে ১মে.টন করে চাউল সহায়তা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া শুকনা খাবারের জন্য চাহিদা দেয়া হয়েছে, প্রাপ্তি সাপেক্ষে বিতরণ করা হবে।