বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা ডিবি হারুন সর্বশেষ মিডিয়াকে যা বললেন

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৫ মাস আগে

গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে ঢাকার অতিরিক্ত কমিশনার (সাবেক ডিবি প্রধান) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদের অবস্থান নিয়ে চলছে ধোঁয়াশা। শোনা যাচ্ছে, তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। কিন্তু বিষয়টি এখনও নিশ্চিত নয়। তবে সম্প্রতি অজ্ঞাত স্থান থেকে ইউটিউব চ্যানেল নাগরিক টিভিতে নাজমুস সাকিবের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন আলোচিত এই পুলিশ কর্মকর্তা।

সেখানে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান, আন্দোলন দমনে তার ভূমিকাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন। দাবি করেছেন, তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, তাকে মোয়া বানানো হচ্ছে।

‘যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি, কমিশনার ও আমাকে হুকুমের আসামি করা হয়। তখন আমি অবাক হলাম। আমি তো ডিবিতে কাজ করি। ডিবির কাজ হলো মামলা তদন্ত করা। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নির্দেশ দিলে আমরা গ্রেপ্তার করি। মোহাম্মদপুরে তো আমি গিয়ে মারামারি করিনি, এটা তো আমার কাজ না। অতিরিক্ত কমিশনার কি মারামারি করতে যায়? আর ডিএমপিতে কমিশনারের পরে ছয়জন অতিরিক্ত কমিশনার। আমি হলাম ৬ নম্বর কমিশনার। সেখানে আমার নামে যখন মামলা হলো তখন তো একটু…।’

হারুন বলেন, আমি তখন আরও অবাক হলাম। আমি ‍যদি চাকরিতে জয়েন না করি তাহলে প্রসিডিং করবে। আর যোগ দিলে আমাকে দিয়ে জোর করে চাকরি করাবেন। এটা শোনার পরে আমার মনে হলো রিস্ক। মানে আমার লাইফ ঝুঁকির মধ্যে। এখন মানুষকে ধরে যেভাবে পেটানো, ডিম মারা হচ্ছে। যদি আমাকে…। আগে তো বাঁচতে হবে। আমি ইচ্ছাকৃতভাবে একটু চুপ আছি।

হারুন বলেন, ৫ আগস্টের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি-ভিডিও ছড়ায়, যেখানে দাবি করা হয় ছাত্র-জনতার হাতে গণপিটুনি খেয়েছেন হারুন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফেসবুক, ইউটিউবে নানা গুজব আছে। আপনারা মরার ছবিসহ নানা গুজব দেখেছেন। আমি এগুলো নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। যারা এগুলো বলে তারা টাকা-পয়সা পাওয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাড়ে। এগুলো গুজব।

পুলিশ সদর দপ্তরের দেয়াল টপকে পালাতে গিয়ে ব্যথা পাওয়ার বিষয়ে সাবেক ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি পুলিশ সদর দপ্তরে যাইনি।’

সরকারপ্রধান (শেখ হাসিনা) সবাইকে বিপদে ফেলে চলে গেছেন- এ বিষয়ে জানতে চাইলে হারুন বলেন, এ নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। আমি ছোট মানুষ। আমি ডিএমপির প্রধানও না, পুলিশের প্রধান না। আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমাকে মোয়া বানানো হচ্ছে। আমি কেন আলোচিত এর একটাই কারণ, যেখানে অপরাধ হয়েছে সেখানে আমি মানুষকে সেবা দিয়েছি। মানুষ যখন যে সমস্যায় পড়েছে তারা থানায় না গিয়ে ডিবিতে আসত। ডিবিতে আমার চাকরিজীবনে মানুষের উপকার করেছি। কারো ক্ষতি করিনি।

অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি অনেক বড় বড় কাজ করেছি, তবে পুরস্কার পাইনি। আমি আমার বিবেকের তাড়নায় কাজ করেছি।

দেশবাসী কেন আপনাকে ঘৃণা করে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ১২ বছর চাকরি করেছি। আমার কোনো অন্যায় থাকলে আপনি আমাকে ছাড়তেন? তখন আপনারা কোথায় ছিলেন? এখন আমি একটু অড পজিশনে পড়ে গিয়েছি, এখন যদি বলে হারুন খুব খারাপ… তাহলে আমি কী খারাপটা করেছি বলেন। আমি কার ক্ষতি করেছি? আমার কাছে যারা-যেসকল আসামিরা ছিল… এমনও বড় বড় বিএনপি নেতারা আমার কাছে গিয়েছিল.. তারা আমাকে বলতো আমার ফ্যামিলি প্রবলেম আছে, আমার ফ্যামিলি প্রবলেম সলভ করে দিও। এসব বিষয়ে আমি আরেকদিন কথা বলব।