বিল্লাল হোসেন ।।
স্বাস্থ্য খাতে চলমান রাষ্ট্র সংস্কারের অংশ হিসেবে, কুমিল্লা জেলার সকল বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে ভুয়া নার্স অপসারনের দাবিতে, মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেন কুমিল্লা জেলার নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কলেজসমুহের শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও তাদের ডিপ্লোমা শেষে ইন্টার্নি করার সময় বিশাল অংকের যে টাকা নেওয়া হয় সেটা বন্ধের দাবি জানানো হয়।
গতকাল(বুধবার) সকাল ১০ টায় কুমিল্লা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসুচি পালন করেন তারা। এসময় মানববন্ধনে যোগ দিয়েছিলেন, কুমিলা ডায়াবেটিক এসোসিয়েশন নার্সিং ইন্সটিটিউট, আর্ট নার্সিং কলেজ, ভিক্টোরিয়া নার্সিং কলেজ ও লাকসাম মডেল নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থীরা।
রোগীদের চাহিদার উপর ভিত্তি করে দেশে এখন বৃদ্ধি পাচ্ছে হাসপাতাল ও গড়ে উঠছে নতুন নতুন ক্লিনিক প্রতিষ্ঠান। যেখানে প্রতিনিয়ত ভীড় করছে রোগীদের সংখ্যা। এসব রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য প্রয়োজন মানসম্মত আসবাবপত্র এবং যোগ্যতাসম্পন্ন সেবক/সেবিকা। কিন্ত এসবের কোন নিয়ম না মেনে নিজেদের মত করে যাকে যাকে তাকে নিয়োগ দিয়ে রোগীদেরকে বিপাকে ফেলছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যার ফলে সঠিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। বাড়ছে মৃত্যুঝুকি।
কুমিল্লা ডায়েবেটিক এসোসিয়েশন নার্সিং ইন্সটিটিউট এর ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন বলেন, দেশের সকল প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানগুলা নন রেজিস্টার্ড কর্মীদের নিয়ে নার্সিং কাজ পরিচালনা করছে। যার ফলে আমরা ৩ বছরের ডিপ্লোমা করে ৬ মাসের ইন্টার্নি করেও আমরা চাকরির বাজারে অবমুল্যায়নের স্বীকার। তাই অযোগ্য মানুষদের সরিয়ে যোগ্যদের জায়গা দেওয়ার প্রথা শুরু করতে আমরা আজকে মানববন্ধনে দাড়িয়েছি।
লাকসাম মডেল নার্সিং কলেজের শিক্ষার্থী সাকিব বলেন, কুমিল্লা শহরের প্রায় সবগুলা বেসরকারি হাসপাতেল অসংখ্য ভুয়া নার্স দিয়ে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। যাদের কেউ তিন মাস, কেউ ছয় মাসেরর কোর্স করেই হাসপাতেল কাজ করে যাচ্ছেন। অথচ বাংলাদেশ নার্সিং এন্ড মিডওয়াইফারি কাউন্সিল কর্তৃক ঘোষণা দেওয়া আছে, দেশের কোন সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নার্সিং হিসেবে যোগ দিতে নার্সিংয়ে ডিপ্লোমা সম্পন্ন করতে হবে। কিন্ত এটা কেউ মানছে না। যার ফলে আমরক যোগ্যতা থাকতে হবে নার্সিংয়ে কাজ করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। কুমিল্লা জেলার সিভিল সার্জন মহোদয় আমাদের আস্বস্ত করেছেন যে, ওনি খুব দ্রুতই পদক্ষেপ নিয়ে এটা সংস্কার করবেন।
কুমিল্লা সিভিল সার্জন নাসিমা আক্তার বলেন, নার্সিং ইন্সটিটিউট এর শিক্ষার্থীদের দাবিটি যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য। আমরা তাদের স্মারকলিপি গ্রহন করেছি। এ বিষয়ে আমি জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের সাথে আলোচনা করব। সকল প্রতিষ্ঠানে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হবে। যাতে অযোগ্য কর্মীদেরক চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে পারি। দেশ এখনো অস্থিতিশীল একটা পরিবেশের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাই আমাদের এই কার্যক্রম পরিচালনা করতে একটু সময় লাগবে।