৫ আগষ্ট মুরাদনগর থানাকে নিরাপত্তা দেওয়া স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা বিল্লাল  এখন পুলিশের মামলায় রিমান্ডে

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৪ দিন আগে

৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা সরকার পালিয়ে যাওয়ার পর সারাদেশের বিভিন্ন থানায় হামলার ঘটনা ঘটলেও সেদিন থেকেই সাবেক এমপি ও মন্ত্রী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ এর নির্দেশে
মুরাদনগর এবং বাঙ্গরা থানা ও পুলিশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বিএনপি নেতা কর্মীরা। বিএনপির যে সকল নেতা কর্মী থানার নিরাপত্তা নিশ্চিতে পাহারা ও পুলিশের খাবারের ব্যবস্থা করেছেন সে সকল বিএনপি নেতা কর্মীরা এখন পুলিশের মামলার আসামি এবং স্বশরীরে উপস্থিত থেকে থানার নিরাপত্তা দেওয়া বিএনপি নেতা বিল্লাল এখন পুলিশের মামলায় রিমান্ডে।

 

গত ২৪ মার্চ২৫ মুরাদনগরের কোম্পানিগন্জ সিএনজি স্টেন্ডে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূইয়ার চাচাত ভাই ওবায়েদ উল্লাহ সিরিয়ালের বাহিরে সিএনজি নিতে চাইলে সেখানে কর্মরত কেরানী এবং সিএনজি চালকরা বাধা দেয় এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সদর ইউনিয়নের নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ সেক্রেটারী সাজিবসহ একদল তরুনদের ডেকে এনে সিএনজি চালকদের মারধর করে এবং পুলিশ ডেকে এনে চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়ে থানায় নিয়ে যায় তারা।

শ্রমিক নেতাকে মুক্ত করতে থানার সামনে বিক্ষোভ করে সিএনজি চালকরা। তবে থানার ভিতরে ওসির রুমের সামনে দাড়িয়ে মাইক হাতে শ্রমিক নেতাকে টেনে ছিড়ে ফেলার হুমকি দেন ছাত্রলীগ সেক্রেটারী।
চলমান দ্বন্দ্ব নিরসনে ওসি এএসপি সেনাবাহিনীসহ বিএনপি নেতারা শালিসে বসেন। রাতভর শালিসে কোন সমাধান না হলেও সকালে শালিসে বসা বিএনপি নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেয় পুলিশ ও সমন্বয়ক।

মামলা দায়েরের আগেই সিএনজি স্টেন্ডের কেরানি আবুল কালামসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করে কুমিল্লা ডিবি পুলিশ।

এদিকে পুলিশের করা জিআর ৪১/২০২৫ মামলায় আজ ৭ এপ্রিল সোমবার পুলিশ ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট ১১ নম্বর আমলী আদালতের বিচারক মুমিনুল হক ১ দিনের রিমান্ড মন্জুর করে।

থানার নিরাপত্তা দেওয়া স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বিল্লাল পুলিশের করা মিথ্যা মামলায় রিমান্ডে তাহলে কি আওয়ামী লীগের আমলের ফ্যাসিস্ট পুলিশের চরিত্র এখনো বদলায়নি? এমন প্রশ্ন জনমনে।

আসামি পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক বলেন- আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদি আচরন এখনো পুলিশের মাঝে বিদ্যমান। পুলিশ এখনো কাল্পনিক মিথ্যা মামলা করছে আবার সে মামলায় রিমান্ডও চায়। অবাক করা বিষয় হল – পুলিশ আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এবং নব্য ফ্যাসিস্টদের যোগসাজশে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে এ মামলা করেছে। তার জ্বলন্ত প্রমান হল পুলিশের করা মামলায় পুলিশের পক্ষ হয়ে নিজেদের ওকালতনামা দিয়ে বিএনপি নেতা কর্মীদের জামিনের বিরোধীতা করেছে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের মনোনিত মুরাদনগর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ তমাল ও আওয়ামী লীগের মনোনীত সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট তানভির আহমেদ ফয়সাল। আওয়ামী পুলিশের করা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করে এ মামলাকারীদের বিরুদ্ধে তদনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি এ আইনজীবীর।

 

আসামী পক্ষের আরেক আইনজীবি এডভোকেট নাছির উদ্দীন আহমেদ বলেন, ২৪.০৩.২০২৫ তারিখ রাত অনুমান ৮ টা ১০ ঘটিকার সময় মুরাদনগর থানার পুলিশ একটি কাল্পনিক ঘটনার অবতারণা আনিয়া উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অপশক্তির অপব্যবহার করে অপচেষ্টা চালিয়ে একটি মিথ্যা মামলা রেকর্ড করেছে। ঐ মিথ্যা মামলায় মুরাদনগর থানার বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, সেচ্ছাসেবকদল তথা সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীদের এ মামলার আসামি করেন। এখানে উল্লেখ্য যে, মুরাদনগর উপজেলার বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জণ ও জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দসহ মোট ৩২ জনের নামে মিথ্যা মামলা রেকর্ড করা হয়েছে এবং সেখানে অজ্ঞাত দেখিয়েছেন ৭০ থেকে ৮০ জন। এ মামলায় বাদী হয়েছেন এস আই মোহাম্মদ আলী আক্কাস।

আসামি পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট সরকার মাহমুদ গিয়াসউদ্দিন বলেন- বিগত ১৭ বছর ফ্যাসিস্ট সরকার অনেক গায়েবী মামলা করেছে, মুরাদনগরে এরকম ৭০ টির উপর মামলা ছিল। আমরা আশা করেছিলাম ৫ই আগস্ট এর ছাত্র জনতার আন্দোলনের পর আমরা এই মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি পাব। আমার জানামতে পুরো বাংলাদেশের কোথাও পুলিশ বাদী হয়ে বিএনপি’র বিরুদ্ধে এরকম মিথ্যা মামলা করেনি। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় মুরাদনগর থানা পুলিশ এরকম একটি জগন্য কাজ করেছে। মিথ্যা মামলা করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি এ মামলার এজাহারভুক্ত ১০ নাম্বার আসামি সে একজন ব্রেইন স্ট্রোকের রোগী তার বিরুদ্ধে ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে এবং আদালত ১ দিনের রিমান্ড মনজুর করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। এ মামলা গুলো উপর মহলের অদৃশ্য শক্তির ইশারায় পুলিশের সার্বিক সহযোগিতায় হচ্ছে। পু্লিশ প্রথমে তাদেরকে ধরে থানায় নিয়ে যায় এরপর মামলা দায়ের করে তাদের কে চালান দিয়ে দেয়। যারা বিএনপিকে নিধন করার জন্য এই অপচেষ্টা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে যথাযথ শাস্তি প্রদানের জোর দাবি জানাই।

ব্রেইন স্ট্রোকের রোগী বিল্লালকে রিমান্ডে নেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে এডভোকেট মহসিন বলেন- আমার আসামী বিল্লাল হোসেন অসুস্থ। সে ব্রেইন স্ট্রোক করেছে তাকে রিমান্ডে নেওয়ার পর তার কোন কিছু হলে পুলিশকে সম্পূর্ণ দায়ভার নিতে হবে।

উল্লেখ্য যে, পুলিশ কর্তৃক মামলা দায়েরের আগে ও পরে পুলিশ বিএনপি নেতা কর্মীদের নানানভাবে হয়রানি ও গ্রেফতার করছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে পরেও কুমিল্লা ও ঢাকা ডিবি পুলিশের হয়রানি চলছে বলে অভিযোগ মুরাদনগরের সাধারণ মানুষের। অবিলম্বে হয়রানি বন্ধ না হলে মুরাদনগরের আপামর জনতা পুলিশের বিরুদ্ধে  ফুঁসে উঠ