কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন স্থানীয় মুসলিম সমাজ। মানবতা যেখানে প্রাধান্য পেয়েছে। উপজেলার রায়কোট উত্তর ইউনিয়নের সনাতন ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত গ্রাম চান্দেরবাগ। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সীমান্তবর্তী ডাকাতিয়া নদী তীর ঘেষা এ গ্রামে মাত্র কয়েকটি মুসলিম পরিবারের বসবাস বাকিরা সব সনাতন ধর্মাবলম্বী। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি ও ভারতীয় পানিতে ডাকাতিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে পুরো গ্রামটি তলিয়ে যায়। আশপাশে আশ্রয়কেন্দ্র না থাকায় গ্রামের হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা পার্শ্ববর্তী পিপড্ডা গ্রামের মসজিদে আশ্রয় নিয়েছেন।
জানা যায়, উপজেলার সীমান্তবর্তী চান্দেরবাগ গ্রামের বাসিন্দারা অনেকটা অবহেলিত। তাদের অধিকাংশই মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। টানা বৃষ্টি ও ভারতীয় পানিতে ডাকাতিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে গ্রামটি ডুবে যায়। গ্রামের অনেক বাসিন্দা আশপাশে কোনো আশ্রয়কেন্দ্র না পেয়ে পাশের গ্রামের মসজিদে অবস্থান করেন । বাকিরা ও মুসলমানদের বিভিন্ন বাড়ির ছাদে অবস্থান নিয়ে জীবন রক্ষা করেছেন। ওই গ্রামের বাসিন্দা গীতা রানী বলেন, ডাকাতিয়া নদীতে পানি বৃদ্ধি পায় আবার কমে যায়। গ্রামে রাস্তা সমান পানি হয়। কিন্তু কখনো ঘরে পানি উঠেনি। এবার পুরো গ্রাম ডুবে গেছে। কোনো রকম জীবন নিয়ে মসজিদে অবস্থান করছি। আশেপাশের মানুষ শুকনো কিছু খাবার দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, আগ থেকে আমাদের গ্রাম অবহেলিত। রাস্তাঘাট ভালো না। ঘর থেকে কিছুই বের করতে পারিনি। সব পানিতে ডুবে গেছে। পিপড্ডা গ্রামের বাসিন্দা নজির আহমদ বলেন, বন্যা হলেই সবার আগে আমাদের গ্রাম ও চান্দেরবাগ পানিতে ডুবে যায়। এবারের মতো বন্যা আমার জীবনে দেখিনি। পানিতে সব কিছু তলিয়ে গেছে। আমাদের কিছুই নেই। আশপাশে আশ্রয় কেন্দ্র না থাকায় এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে চান্দেরবাগ গ্রামের কয়েকটি হিন্দু পরিবারকে মসজিদে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে।
নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুরাইয়া আক্তার লাকি বলেন, চান্দেরবাগ গ্রামের মানুষের সমস্যার বিষয়ে শুনেছি, ইতিমধ্যে তাদের কিছু সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।