মনোহরগঞ্জে বিলের পানিতে লাল শাপলার সমারোহ

নাছির উদ্দিন, মনোহরগঞ্জ ।।
প্রকাশ: ৪ মাস আগে

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে বিস্তির্ণ মাঠ সেজেছে লাল শাপলায়। সূর্যোদয়ের পর মাঠজুড়ে ফুটে থাকা এর নয়নাভিরাম সৌন্দর্য যে কারো নজর কাড়ে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাহারি শাপলা ফুল সকালের প্রকৃতিতে মুগ্ধতা ছড়ায়। এমন সৌন্দর্য উপভোগ করতে সকাল বেলায় বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসেন প্রকৃতি প্রেমীরা।

সরেজমিনে উপজেলার সফুরা, বানঘর, লক্ষপুর, বেতিয়াপাড়া, হাসনাবাদসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে মাঠজুড়ে ফুটে আছে বাহারি লাল শাপলা। সুর্যোদয়ের আগেই বিলের পানিতে ডানা মেলে নিজের সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলে। সকাল বেলায় পাঁপড়িতে হালকা শিশিরের ছোঁয়া এদের সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে তোলে।চারদিকে ফুটে থাকা এসব শাপলার রঙ্গে প্রকৃতি যেন গোলাপী রং ধারন করে।

এলাকাবাসি জানান, সকালবেলা বিলের পানিতে ফুটে থাকা এমন লাল শাপলার দৃশ্য ধারন করতে আশপাশের এলাকার লোকজন ছুটে আসে এসব এলাকায়। মোবাইলে এমন দৃশ্য ধারন করার পর নৌকায় চড়ে কেউ কেউ শাপলা তুলেওনিয়ে যায়। জলের উপর বিছানো থালার মতো গোলাকার বেগুনী পাতার ফাঁকে ফাঁকে লম্বা ডগার উপর উঁকি মেরে প্রতিনিয়ত তুলে ধরছে নিজের সৌন্দর্য ।

অসংখ্য পাপড়ির চমৎকার বিন্যাসে একেকটি শাপলা যে কোন মানুষের হৃদয় কাড়ে সহজেই। তাই হয়তো শাপলার স্পর্শ থেকে আটকে রাখতে পারে না যে কোন বয়সের মানুষকে। শাপলা ফুল ভোরবেলা ফোটে এবং দিনের আলো বাড়ার সাথে সাথে পাপড়ি বুজে যায়। সফুরা গ্রামের বাসিন্দা জাফর আহমেদ জানান সাধারনত বর্ষাকালে মাঠে ও বিলের পানিতে সাদা শাপলার পাশাপাশি লাল শাপলা দেখা যায়।

এবার এ এলাকায় সাদা শাপলার চেয়ে লাল শাপলাই বেশি চোখে পড়ছে।এবার বন্যার পর মনোহরগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে পুকুর, বিলে, ঝিলে ব্যাপক লাল শাপলা দেখা যাচ্ছে। বর্ষা মওসুম শেষে এ এলাকায় মাঠজুড়ে লাগানো হয় বোরো ধান তখন এসব শাপলা আর দেখা যায় না। আবার বর্ষায় পানি এলে মাঠে মাথাচাড়া দিয়ে উঠে প্রকৃতিকে রঙ্গিন করে তোলে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মিলন এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন লাল শাপলা বাংলার প্রকৃতির জন্য এক অনবদ্য সৌন্দর্যের প্রতীক। স্বাভাবিকভাবে আষাড় মাসে গোটা বিল এলাকা পানিতে ভরে থাকে। ভাদ্র মাসের দিকে প্রাকৃতিকভাবে লাল শাপলার লতা পাতাগুলো বেড়ে উঠতে শুরু করে।

আশ্বিনের মাঝামাঝি গিয়ে শাপলা ফুলের আকার যেমন বড় হয় তেমনি গোটা বিল এলাকা লাল শাপলায় একাকার হয়ে যায়। লাল শাপলার বিলগুলো হয়ে উঠে ভ্রমন পিপাসু মানুষের জন্য আনন্দ ভ্রমনের প্রথম পছন্দ। এছাড়া কৃষিতেও ভূমিকা রয়েছে লাল শাপলার। মওসুম শেষে শাপলার পাতা, কান্ড পঁচে মাটিতে জৈব পদার্থ যোগ করে। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায়ও লাল শাপলার অবদান রয়েছে।