শিক্ষকের মানহানিকারীদের বিচার দাবি

কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয়
স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ years ago

কুবি প্রতিনিধি ॥
কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহেরের মানহানি করা হয়েছে দাবি করে মানহানিকর মন্তব্যকারীদের বিচার দাবি করেছে কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু পরিষদ (একাংশ), শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগ। বুধবার পৃথক সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন ও প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ এনে বিচার দাবি করেছে তাঁরা।
এর আগে মঙ্গলবার কর্মকর্তা ও কর্মচারী পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধনে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, অধ্যাপক তাহের কর্মচারী সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: জসিম উদ্দিনকে মুঠোফোনে চাকুরিচ্যুত করার হুমকি দিয়েছেন। কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কাজ করে। তাঁদেরকে যদি এভাবে হুমকি দেওয়া হয়, তাহলে তাঁরা শান্তিতে থাকতে পারে না। মানববন্ধনে এ ছাড়া আরও বিভিন্ন অভিযোগ আনেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে এ সকল অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে বুধবার সংবাদ সম্মেলন করেন অধ্যাপক তাহের।
সংবাদ সম্মেলনে আবু তাহের বলেন, আমি পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের একজন সাধারণ শিক্ষক। কোনো কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারীকে চাকুরিচ্যুত করার কোনো ক্ষমতা রাখি না এবং এ ধরনের শব্দ আমি কখনো উচ্চারণ করিনি। এটা সর্বৈব মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
এদিকে অধ্যাপক তাহেরের মানহানি করা হয়েছে দাবি করে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন তাঁরা। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন তাঁরা।
একই দাবিতে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বঙ্গবন্ধু পরিষদের একাংশ (সাইদুল-খলিলুর সমর্থিত)। পরিষদের সভাপতি সাইদুল আল-আমীন ও সাধারণ সম্পাদক ড. মো. খলিলুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একজন শিক্ষকের মানহানি বিশ^বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকের মানহানি সমতুল্য মনে করে বঙ্গবন্ধু পরিষদ। তাই, এ ধরনের হীনকার্যে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।
এর আগে মঙ্গলবার কর্মচারীদের ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্যে প্রতিবাদলিপি দিয়েছে কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী ও সাধারণ সম্পাদক ড. মোকাদ্দেস-উল-ইসলাম বিদ্যুত স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার, মানববন্ধন ও মানহানিমূলক বক্তব্য ধৃষ্টতা ও ঔদ্ধত্য প্রদর্শন। এ ধরনের কর্মকাণ্ড কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক শৃঙ্খলা ও পারস্পরিক সৌহার্দের জন্য ভয়াবহ হুমকি স্বরূপ। এভাবে চলতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিবেশ শিক্ষকবৃন্দের পাঠদানের অযোগ্য হয়ে পড়বে।
ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে শাখা ছাত্রলীগও। ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ বলেন, একজন অধ্যাপক মর্যাদার শিক্ষকের নামে প্রকাশ্যে মানহানিকর বক্তব্য দিয়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর আন্দোলন করা বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল। এটা আমাদের শিক্ষক সমাজ এবং ছাত্রসমাজের জন্য লজ্জার।
শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধৃষ্টতা ও ঔদ্ধ্যত্য দেখানো হয়েছে দাবি করে উপাচার্যের নিকট এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান ছাত্রলীগ সভাপতি।
এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈনের মন্তব্য জানতে চাইলে মুঠোফোনের ক্ষুদেবার্তায় তিনি জানান, প্রশাসন অভিযোগ পেয়েছে। তাঁরা তদন্ত করে ফলাফলের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেবে।