বিএনপি অফিস অবরুদ্ধ করে রেখেছে পুলিশ, ঢুকতে দেয়া হয়নি ফখরুলকে

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

গতকালের সংঘর্ষের পর আজও রাজধানীর নয়াপল্টনস্থ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। কার্যালয়ে ঢুকতে দেয়া হয়নি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে। বিজয়নগর মোড়ে পুলিশ তাকে আটকে দেয়া হয়।

আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আদালতে হাজিরা শেষে বিএনপি কার্যালয়ে ঢোকার জন্য নয়াপল্টনের দিকে আসেন মির্জা ফখরুল। কিন্তু বিজয়নগর মোড়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তিনি। বিএনপি মহাসচিব নয়াপল্টন কার্যালয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করেন। তখন দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আমাদের ক্রাইম সিনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নয়াপল্টনে কাউকে ঢুকতে দেয়া হবে না।

কার্যালয়ে ঢুকতে না পেরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ১০ তারিখের সমাবেশ নস্যাৎ করার জন্য এটা সরকারের হীন পরিকল্পনা ও চক্রান্ত। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য, মানুষের অধিকার কেড়ে নেয়ার ষড়যন্ত্র। রাজনৈতিক দল হিসেবে যদি আমি আমার নিজের অফিসে যেতে না পারি তাহলে কি করে রাজনৈতিক দলের নেতারা কাজ করবে। একটি রাজনৈতিক দলের সাংবিধানিক অধিকার হচ্ছে তার স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা।
বিজ্ঞাপন
একটা গণতান্ত্রিক দলের মহাসচিব যদি তার রাজনৈতিক অফিসে যেতে না পারে তাহলে বুঝে নেন এদেশে কি গণতন্ত্র চলছে। এসময় অবিলম্বে দলীয় কার্যালয় খুলে দেয়ার দাবি জানান মির্জা ফখরুল। গ্রেপ্তারকৃত দলীয় নেতাদের মুক্তি দাবির পাশাপাশি ১০ তারিখের সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে পালনের সুযোগ করে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে নয়া পল্টন বিএনপি কার্যালয় এলাকা ঘিরে কড়া নিরাপত্তা অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। নাইটেঙ্গেল ও ফকিরাপুল মোড়ে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এ দুটি রাস্তা দিয়ে দলীয় কার্যালয়ে ভেতরের সড়কে জনসাধারনের চলাচল নিষেধ করা হয়েছে। তবে শুধুমাত্র পরিচয় পত্র প্রদর্শনে পরীক্ষার্থী ও ব্যাংক কর্মকর্তাদের চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে।

সরজমিন দেখা যায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের আশপাশে দোকান, মার্কেট এখনো বন্ধ রয়েছে। পুরো এলাকা জুড়েই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নয়াপল্টনে প্রবেশমুখে সকল গোলি ব্যারিকেড দিয়ে পাহারায় রয়েছে পুলিশ। শুধুমাত্র নাইটেঙ্গেল মোড় ও ফকিরাপুল মোড় দিয়ে এই পথে চলাচলকারী সাধারণ ও কর্মজীবী মানুষকে আইডি কার্ড দেখানোর পর ঢুকতে দিচ্ছে পুলিশ। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ড্রেস ও আইডি কার্ড দেখে যেতে দেয়া হচ্ছে। কার্ডবিহীন ও সন্দেহভাজন কাউকেই প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। এখন সুনসান পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

উল্লেখ্য, গতকাল বিকাল ৩টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। পুলিশের টিয়ার শেল ও রাবার বুলেটের আঘাতে বিএনপির একজন নেতা নিহত এবং কয়েকশ নেতাকর্মী আহত হন। পরে নয়াপল্টন কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহানগর উত্তরের সভাপতি আমানউল্লাহ আমান, দক্ষিণের সভাপতি আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবির খোকন, খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সহকারী শিমুল বিশ্বাস প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুইয়া জুয়েলসহ দুই শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।