পাইলস সমস্যায় শিশুর জিহ্বায় অস্ত্রোপচার, নার্স বললেন ‘এখন কথা বলতে পারবে’

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি।।
প্রকাশ: ১ বছর আগে

লক্ষ্মীপুরে আবদুর রহমান আরিয়ান নামের এক শিশুর পাইলস চিকিৎসায় জিহ্বার নিচের অংশে অস্ত্রোপচার করেছেন চিকিৎসক। শুক্রবার দুপুরে লক্ষ্মীপুর টাউন হলের সামনে ডা. আউয়াল শিশু সার্জারি সেন্টার ও জেনারেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে বিকেলে লক্ষ্মীপুর শহর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আবদুল ওদুদ হাসপাতালে গিয়ে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলেন।

এ ঘটনায় চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. জামাল সালেহ উদ্দিন আরজু ভুল স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার ভুল হয়েছে। তবে এতে কোনো সমস্যা হবে না। যদি কোনো সমস্যা হয়, তাহলে সব দায়ভার আমার। প্রয়োজনে আমি এ ঘটনায় লিখিত দেবো।’ জামাল সালেহ চাঁদপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও হাসপাতালটির মালিক।

ভুক্তভোগী আরিয়ান সদর উপজেলার টুমচর ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের টুমচর গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে।

শিশু আরিয়ানের বাবা নিজাম উদ্দিন ও মা লিপি আক্তার জানান, আরিয়ানের পায়খানা করতে সমস্যা হতো। এজন্য সম্প্রতি তাকে সদর হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক ইসমাইল হাছানকে দেখানো হয়। তবে ওষুধ দিয়েও ভালো হয়নি। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তাকে ডা. আউয়াল শিশু সার্জারি সেন্টার ও জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়।

ডা. জামাল সালেহ শিশুটিকে দেখে পাইলসে সমস্যার কথা বলেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নার্স এসে আরিয়ানকে অপারেশন কক্ষে নিয়ে যান। এক পর্যায়ে অচেতন করার ইনজেকশন পুশ করা হয়। পরে শিশুর বাবাকে অপারেশন কক্ষ থেকে বের করে দেন। কিছুক্ষণ পর শিশু আরিয়ানকে বেডে আনেন নার্সরা। তারা বলেন, ‘শিশুর জিহ্বার সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। সে এখন কথা বলতে পারবে’।

নার্সের এ কথা শুনেই শিশুর মা লিপি মূর্ছা যান। তিনি বলেন, ‘ছেলের পাইলসে সমস্যা ছিল কিন্তু জিহ্বা কাটা হলো কেন?’। এরপরই হাসপাতালে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

আরিয়ানের বাবা নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আমার বাবুর পায়খানা করতে সমস্যা হতো। চিকিৎসক হাত দিয়ে সমস্যাটি দেখবেন বলেছিলেন। পাইলসের অপারেশনেরও কথা ছিল না। কিন্তু তিনি ছেলের জিহ্বা অপারেশন করে ফেলেছেন। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করবো।’

লক্ষ্মীপুর শহর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আবদুল ওদুদ বলেন, দুপক্ষের সঙ্গেই কথা বলেছি। ভুক্তভোগীদের থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. আহম্মদ কবির বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।