বরিশালে কাঁচামরিচের সেঞ্চুরি, সবজিতে স্বস্তি

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

কাঁচামরিচ পাইকারি বাজারে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। গত দুই থেকে তিনদিন ধরে কাঁচামরিচের এমন মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান খুচরা বিক্রেতারা। এছাড়া অন্য সবজির মূল্য কমে সাধারণের নাগালের মধ্যেই রয়েছে।

তবে খুচরা বাজারে কাঁচামরিচের এমন মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান, বরিশাল নগরীর একমাত্র পাইকারি কাঁচামালের বাজার বরিশাল বহুমুখী সিটি মার্কেটের ব্যবসায়ীরা।

বহুমুখী সিটি মার্কেটের দুলাল বাণিজ্যালয়ের মালিক আমিন শুভ জাগো নিউজকে জানান, তারা গত কয়েকদিন ধরেই কাঁচামরিচ ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করছেন। সেই কাঁচামরিচ খুচরা বাজারে ব্যবসায়ীরা ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি করছেন বলে জানান তিনি।

শুভ আরও জানান, পাইকারি বাজারে কাঁচামরিচ ছাড়া সব সবজির দাম কমেছে। গত সপ্তাহে বিটকপি (শালগম) ১৫ টাকা কেজি বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা। ফুলকপি গত সপ্তাহে কেজি ১৮ টাকা করে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ টাকা করে। টমেটো গত সপ্তাহে কেজি ৫০ টাকা করে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা করে।

নতুন আলু গত সপ্তাহে কেজি ২০ টাকা করে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়। বেগুন গত সপ্তাহে কেজি প্রতি ছিল ২০ টাকা, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা। বাঁধাকপি ২০ টাকা করে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা। মিষ্টি কুমড়া ২৫ টাকা বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। গাজর গত সপ্তাহে কেজি প্রতি ৩৫ টাকা করে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩২ টাকা করে। সিম গত সপ্তাহে কেজি প্রতি ২৫ টাকা করে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা করে।

বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে বরিশাল নগরীর বাংলাবাজার এলাকার খুচরা সবজি বিক্রেতা নূর আলম জাগো নিউজকে বলেন, গত দুই-তিন দিন ধরে কাঁচামরিচের দাম বেড়েছে। দুইদিন আগেও পাইকারি ৩০ থেকে ৪০ টাকায় কিনেছি। এখন সেই কাঁচামরিচ কিনতে হচ্ছে দ্বিগুণ দামে। তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে কেজি ১০০ টাকা করে। এছাড়া অন্য সবজি ফুলকপি ২০ টাকা, বাঁধাকপি ২৫ টাকা, সিম ৩০ টাকা, সালগম ২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

নগরীর বাংলাবাজারে বাজার করতে আসা শাহিন বলেন, গত কয়েকদিন আগে কাঁচামরিচ কিনেছি ৫০ টাকায়। এখন সেই কাঁচামরিচ কিনেছি ১০০ টাকা করে। দাম বাড়লেও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস না কিনে তো আর উপায় নেই। তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি প্রয়োজন।

আরেক ক্রেতা মনির বলেন, পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জেনেছি যে, কাঁচামরিচ ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ সেই কাঁচামরিচ বাজার ভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো দাম নিচ্ছে।

পাইকারি বাজারের তুলনায় খুচরা বাজারে তিন গুণ বেশি দামে মরিচ বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাবাজার এলাকার সবজি ব্যবসায়ী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, পাইকারি মোকাম থেকে সবজি কেনার পর পরিবহন ব্যয় ও শ্রমিক মজুরি দিয়ে আনতে হয়। তারপর বাজারে সবজি নিয়ে বসলে সেজন্য ভাড়া দিতে হয়। লাইটের জন্য আলাদা টাকা দিতে হয়। অনেক সময় সবজি নষ্ট হয়ে গেলে আমাদের লোকসান গুনতে হয়। তাই খুচরা বাজারের সঙ্গে পাইকারি দরের তুলনা করে লাভ নেই।

এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক অপূর্ব অধিকারী  বলেন, কেউ অযথা মূল্যবৃদ্ধি করলে তার বিরুদ্ধে জরিমানা করাসহ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তাছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বিষয়ে বাজার তদারকিমূলক অভিযান নিয়মিত অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।