কর্তৃপক্ষের অবহেলা, উন্নয়ন কাজ স্থগিত ও মেরামতের অভাবে নগরীর অধিকাংশ সড়কের এখন বেহাল দশা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের কর্ম অবহেলার ফলে থেমে আছে পুরনো কাজ। নেওয়া হচ্ছে না নতুন পদক্ষেপও।এতে করে নগরীর বিভিন্ন সড়কে যাতায়তে বাড়ছে কষ্ট, ব্যয় হচ্ছে অতিরিক্ত সময়। যার ফলে চালক-যাত্রীরা পড়ছেন ভুগান্তিতে। ঘটছে ছোট বড় নানা দূর্গটনা।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুমিল্লা নগরীর প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড়-ধর্মপুর সড়কটি এখন ব্যাবহারের অযোগ্য হয়ে আছে। সরকার পতনের পর থেকে থেমে আছে এই সড়কের উন্নয়ন কাজ। বৃষ্টি হলেই ডুবে যায় অটো রিক্সা ও সিএনজি চালিত যানবাহন। হাঁটতে পারে না সাধারন জনগন। দিন দিন এই ভুগান্তি বাড়লেও নতুন করে কোন সংস্কার কাজ শুরু হয়নি। পূর্বের চলমান উন্নয়ন কাজ ও স্থগিত হয়ে আছে। যার ফলে এই সড়ক ব্যাবহারকারী চালক-যাত্রীদের ভুগান্তির শেষ হচ্ছে না। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ, কুমিল্লা মডার্ণ প্রাইমারী স্কুল ও মডার্ণ হাইস্কুল, ফরিদা বিদ্যায়তন, আর আর ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, কুমিল্লা আইন কলেজ, রাণীর বাজার, রেলস্টেশন, শাসনগাছা বাস টার্মিনাল, ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের সংযোগ সড়ক জাগুরজুলি এলাকার মানুষ এই সড়কে যাতায়াত করে। অনুন্নত সড়কের ফলে তাদেরকে প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষার্থী নিধি সাহা বলেন, কান্দিরপাড় থেকে কলেজে যাইতে প্রতিনিয়ত এই ভাংগা রাস্তা পার হতে হয়। এতে করে যেমন শারীরিক কষ্ট হচ্ছে আবার সময় ও বেশি লাগছে। একটা নগরীর প্রাণকেন্দ্রে এমন খারাপ রাস্তা কখনোই কাম্য নয়। কুমিল্লা শহরের অন্যান্য রাস্তার তুলনায় এই রাস্তাটা সবসময় খারাপ থাকে। বর্ষাকালে মনে হয় সাগরে ভাসছি, গ্রীষ্মকালে মনে হয় বালির শহরে হাটছি। ভাল পদক্ষেপ নিয়ে এই রাস্তাটির উন্নয়ন করা খুব প্রয়োজন।
টমছমব্রীজ-মেডিকেল সড়কটি যেন আরেক কুমিল্লার দুঃখ বলা যায়। প্রতিদিন হাজার হাজার রোগী এই রাস্তায় যাতায়াত করলেও এর কোন উন্নতি নেই। অসুস্থ রোগীরা গাড়ির ঝাকুনিতে কান্নাকাটি করতেও শোনা যায়। রোগ কমাতে এসে যেন আরো বেড়ে গেল। জরুরী রোগীর যাতায়ত গাড়িগুলাও এখানে খরচ করতে হয় অতিরিক্ত সময়। ইবনে তাইমিয়া কলেজ, ইপিজেড ও কুমিল্লা মেডিকেলসহ আরো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের লাখো মানুষের যাতায়াতের এই রাস্তাটি বর্তমানে অযোগ্য হয়ে আছে। চালক থেকে যাত্রী সবাই ভুগান্তিতে অসহ্য অবস্থা প্রকাশ করেন।
অটোরিক্সা চালক মিজানুর বলেন, এই রাস্তায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাজার হাজার যাত্রী আসা যাওয়া করে। সবার মুখেই রাস্তা নিয়ে অসুন্তষ্টিমুলক কথা শুনি। আমরা দিনে রাতে মিলিয়ে অসংখ্যবার আসা যাওয়া করি। রাতে শরীরের ব্যাথায় ঘুমাতে পারি না। যেখানে এই রস্তাটিকে অন্যান্য রাস্তা থেকে বেশি উন্নত করা দরকার, সেখানে এত বাজে রাস্তায় চলাফেরা করতে হয়। রোগীদের ক্ষেত্রে এটা আরো বেশি কষ্টের।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়েম ভূঁইয়া বলেন, রাস্তাঘাটের সমস্যার কারনে মানুষ অনেক কষ্ট করতেছে। যে সকল রাস্তাটগুলো সমস্যার সেগুলোর তালিকা করা হচ্ছে। মন্ত্রনালয় থেকেও বলা হয়েছে রাস্তার মেরামতের বিষয়গুলো। আগামী সপ্তাহে দেখবেন আমাদের কাজ শুরু হয়েগেছে।
টমছমব্রিজ থেকে বাখরাবাদ পর্যন্ত রাস্তার বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর কুমিল্লা’র নির্বাহী প্রকৌশলী সুনিতি চাকমা বলেন, বৃষ্টির কারনে পানি জমে রাস্তায় খানা খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তায় পানি থাকায় কাজ করতে পারছিলাম না। আগামী সপ্তাহ থেকে এই রাস্তাটির মেরামতের কাজ চলবে। দ্রুতই আমরা সমস্যা সমাধান করব। তিনি আরো জনান, এই সড়কটিকে আমারা আরো প্রশস্ত করে নতুনভাবে তৈরী করার জন্য পরকল্পনা গ্রহন করেছি। দুই পাশে লেন করে রাস্তা বৃদ্ধি করলে যানজট ও কমে যাবে।