কুমিল্লা বুড়িচংয়ে সামান্য লুর জন্য চার বছরের এক শিশুকে ডোবাতে ফেলে দেয় হাজী শাহাজাহান নামের এক শিক্ষক। শিশুর প্রতি এমন অমানবিক নির্যাতনের চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট হলে মুহূর্তেই এই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে যায়। ফলে এ নিয়ে দেশ জুড়ে চলছে ব্যাপক সমালোচনা।
গত বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সদর ইউনিয়নের বুড়িচং পূর্ব পাড়া মঞ্জুর আলী সর্দার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভিডিওতে দেখা যায়, এই শিশুটির মা যখন ওই ব্যক্তিকে বলছিলেন, “আপনার মধ্যে কি মনুষ্যত্ব নেই আপনি আমার বাচ্চাকে পানিতে ফেলে দিলেন। আপনি একজন সামাজিক মানুষ হয়ে এমন কাজ কিভাবে করতে পারলেন। একটু বালু ফেলে দিয়েছে বলে আপনি এভাবে আমার বাচ্চাকে পুকুরে ফেলে দিবেন। আপনি কি এটা যুক্তিসঙ্গত কাজ করলেন। আপনি আমার বাচ্চাকে ফেলে দেওয়ার পর না উঠিয়ে উল্টো বলছেন যে বাচ্চাটা মরে যাক।”
তখন বাচ্চাকে ফেলে দেওয়া ওই ব্যক্তি পাল্টা জবাবে বলেন, “তোমার বাচ্চা নাকি কার বাচ্চা এটা আমি দেখবো না। আমার কাছে বালির মূল্য বেশি, মানুষের কোন মূল্য নাই৷ আর আমি সামাজিক মানুষ ও না৷ আমি গত ২০ দিন ধরে সবাইকে বলতেছিলাম। কেউ আমার কথা শুনেনি। তোমার বাচ্চা এখানে এসে বালি ধরেছিলো৷ তোমার বাচ্চা আমার এখানে আসবে কেন।”
নির্যাতিত শিশুর মা শামছুন নাহার তানিয়া বলেন, আমার সন্তানকে মাষ্টার শাহাজাহান হত্যা করার চেষ্টা করেছে,আমি প্রশাসনের কাছে বিচার চাই। একজন শিক্ষক হয়ে ঘৃণিত কাজ কিভাবে করে সে। সেদিন যদি আমার মেয়ে উপস্থিত না থাকতো তাহলে আমার বাচ্চা কে হত্যা করা হতো।
অভিযোগসূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকালে বুড়িচং থানার পূর্ব পাড়া এলাকার বাসিন্দা মোঃ নজির আহম্মেদের দুই মেয়ে মোসাঃ মিফতাহুল মাওয়া (০৪) এবং মোসাঃ গালিবা সুলতানা (১০) বালি নিয়ে খেলা করছিলেন ওই এলাকার মোঃ শাহ জাহান (৫০) এর বাড়ির সামনে। এসময় একই এলাকার বাসিন্দা ও তাদের প্রতিবেশী মোঃ শাহ জাহান (৫০) পূর্ব শত্রুতার জেরে নজির আহমেদের ছোট মেয়ে মিফতাহুল মাওয়াকে এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং কোলে তুলে পুকুরে ফেলে দেয়। এসময় গালিবা চিৎকার করলে শাহজাহান তাকেও মারধর করে। চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে অভিযুক্ত শাহজাহান পালিয়ে যায়। পরে স্বজনরা আহত দুই শিশুকে উদ্ধার করে প্রথমে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক মিফতাহুল মাওয়ার অবস্থার অবনতি দেখে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। বর্তমানে শিশুটি সেখানে চিকিৎসাধীন।
এ বিষয় নিশ্চিত করে বুড়িচং থানার ওসি আজিজুল হক বলেন, আজ (শুক্রবার) সকালে শিশুর মা বাদী হয়ে বুড়িচং থানা একটি শিশু নির্যাতন মামলা করেন করেন। আমরা আসামিদের ধরার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতেছি।
কুমিল্লা পুলিশ সুপার নজির আহমেদ বলেন,ভিডিও টা দেখছি,এই ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত বিরুদ্ধে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।