অবিলম্বে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ করতে হবে

কুমিল্লায় সংবাদ সম্মেলনে বাকশিস নেতৃবৃন্দদের ঘোষণা
স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ years ago

চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে ঢাকায় মহাঅবস্থান ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির (বাকশিস) নেতারা। বুধবার বিকেলে কুমিল্লা নগরীর রেইসকোর্স এলাকার একটি রেষ্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। আগামী ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ওই কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাকশিসের কুমিল্লা জেলার সিনিয়র সহ-সভাপতি এমদাদুল হক পলাশ। সঞ্চালনা করেন বাকশিসের কুমিল্লা জেলার সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবদুর রহমান।

এ সময় বাকশিসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যাপক সরওয়ার জাহান ভূঁইয়া দোলন, আলী মর্তজা ভূঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মো.নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া, হুমায়ুন কবির মজুমদার, অধ্যক্ষ রেজাউল করিম, অধ্যক্ষ আবু তাহেরসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

লিখিত বক্তব্যে এমদাদুল হক পলাশ বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদ- হলে শিক্ষকরা শিক্ষার মেরুদ-। কিন্তু আজ শিক্ষক সমাজ অবহেলিত ও বিভিন্নভাবে হয়রানি-নির্যাতনের শিকার। শিক্ষকদের চাকরির নিরাপত্তা, আর্থিক সচ্ছলতা, সামাজিক মর্যাদা নেই বলে মেধাবিরা এই পেশায় আসতে চান না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষকরা রাজনৈতিক হয়রানির শিকার হয়ে চাকরি হারিয়ে পথে পথে ঘুরছেন। শিক্ষাক্ষেত্রে বর্তমানে বৈষম্য বিদ্যমান। সরকারি ও বেসরকারি স্কুল, কলেজ এবং মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের সমযোগ্যতা ও সমঅভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও সরকারি ও বেসকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেলে পার্থক্য রয়েছে। সরকারি স্কুল-কলেজের ছাত্রদের যে সিলেবাস, বেসরকারি স্কুল-কলেজের ছাত্রদেরও একই সিলেবাসে পড়ানো হয়। কিন্তু তাদের পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা ও বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট দেওয়া হয়। আমাদের বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন স্কেলের ২৫ শতাংশ ও কর্মচারীদের ৫০ শতাংশ উৎসব ভাতা দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, আমাদের চাকরি জাতীয়করণের জন্য সরকারের অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন নেই। বর্তমানে সারাদেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩৬ হাজার ৭২৬টি আর এতে শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৯০৭ জন। বর্তমানে সরকার শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বাবদ প্রদান করছেন ১২০০০ কোটি টাকা। আর প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ হলে সরকারকে প্রদান করতে হবে মোট ১৭৮২০ কোটি টাকা প্রায়। আর প্রতিষ্ঠান থেকে সরকারের আয় হবে প্রায় ৫ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। ডিগ্রী পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষক কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ করলে সরকারের আয় হবে ৮০ কোটি টাকা প্রায়। জাতীয়করণ হলে বর্তমানে যে হারে শিক্ষকরা নির্যাতিত হচ্ছেন এবং চাকরি হারাচ্ছেন সেই সমস্যার সমাধান হবে। আর বর্তমানে রাজনৈতিক দলের লোকেরা অর্থের বিনিময়ে বেসরকারি স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসায় অযোগ্য ব্যক্তিদের চাকরি দিচ্ছেন। তাই এই অবস্থা থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করতে হলে যত দ্রুত সম্ভব বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ করতে হবে। আমরা এই দাবিতে আগামী ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবসে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মহাঅবস্থান ধর্মঘট পালন করবো।