উন্নয়নের ছোঁয়ায় পাল্টে যাচ্ছে ভিক্টোরিয়ার আভ্যন্তরীণ চিত্র

সাইমুম ইসলাম অপি ।।
প্রকাশ: ১ বছর আগে

একদিনের মুশলধারে বৃষ্টি দুই যুগের সমস্যা সৃষ্টি। একটি সুন্দর পরিকল্পনা সকল প্রশ্নের ইতি টানা। জলাবদ্ধতা কিংবা কচুরিপানা, মশার উপদ্রব কিংবা সাপের আনাগোনা সমস্যা যাইহোক অল্প সময়ে সমাপ্ত করা কলেজ প্রশাসনের পরিকল্পনা।

‘‘জলাবদ্ধতায় নাকাল দেশের প্রাচীনতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সামান্য বৃষ্টিতেই পানিবন্দি শিক্ষার্থী ও কলেজ। বৃষ্টির পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে হাঁটু সমান পানি। স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশের কারনে ক্লাস করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। কলা ভবনের পেছনের অংশে পানি ও ময়লা-আবর্জনা জমে প্রজনন বেড়েছে মশার। খেলার মাঠে কচুরিপানা চাষ করছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ।’’

সময় বদলেছে। সময়ের সাথে সাথে এই টাইটেলগুলোরও পরিবর্তন ঘটছে। দুই যুগেরও অধিক সময় যাবৎ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের জলাবদ্ধতা এবং অন্যান্য যে সমস্যাগুলো ছিল তা সমাধানের কাজের প্রতিফলন ঘটবে খুব শীগ্রই। শীগ্রই কলেজের বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্য শিক্ষার্থীদের হাতছানি দিয়ে ডাকবে। উন্নয়নের ছোঁয়ায় খেলার মাঠ, জলাবদ্ধতা সৃষ্টিকারী স্থান এবং বিভিন্ন ভবনের পেছনের পানি ও ময়লা-আবর্জনা সৃষ্টিকারী স্থানগুলোর চিত্র বদলে যাচ্ছে। এখন বৃষ্টি শিক্ষার্থীদের সমস্যা নয় বরং আনন্দের কারন হয়ে উঠবে। খেলার মাঠ- কচুরিপানা, সাপ ও মশার প্রজনন বৃদ্ধি নয় বরং শিক্ষার্থীদের শরীর চর্চা ও বিনোদনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে রুপান্তরিত হবে। সেই লক্ষ্যেই কুভিক ক্যাম্পাসে এগিয়ে চলছে উন্নয়নের কাজ।

ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মু. জামাল হোসাইন ভূঁইয়া বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন জরুরি। কারন ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন না হলে পানি অপসারণের ব্যবস্থা হবে না। যার ফলে বৃষ্টিতে আবার ক্যাম্পাস পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। সেই জন্য কলেজ প্রশাসনের নিচু জায়গাগুলো ভরাটের পাশাপাশি ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা প্রয়োজন।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মু. কাউসার বলেন, ভিক্টোরিয়া কলেজের জলাবদ্ধতা এটি দীর্ঘদিনের একটা সমস্যা। যেভাবে কাজ চলছে সম্পূর্ণভাবে সমাপ্ত হলে জলাবদ্ধতা নিরসনের পাশাপাশি কলেজের আভ্যন্তরীণ সৌন্দর্য উপভোগ্য হয়ে উঠবে। নতুন করে ভরাট করা জায়গাগুলোতে ফল গাছ বা ফুলের বাগান করলে কলেজের ভেতর একটা মনোরম পরিবেশের সৃষ্টি হবে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুকুল মজুমদার বলেন, বিগত সময়ে দেখেছি অতি বৃষ্টির কারনে ক্যাম্পাসে হাঁটু সমান পানি জমে গিয়েছিলো। জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ শেষ হলে বৃষ্টিতে আমাদের আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। মাটি ভরাটের কাজ শেষে ভরাটকৃত জায়গাগুলোতে গাছ রোপন করলে শিক্ষার্থীরা বিশুদ্ধ বাতাস নিতে পারবে।

ভিক্টোরিয়া কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মু. মঈন উদ্দিন বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে যে সমস্ত জায়গাগুলো ভরাট করা হচ্ছে এগুলো ক্যাম্পাসে পানিবদ্ধতা এবং শিক্ষার্থীদের বিচরণের আয়তন বাড়াবে। জলা জঙ্গল পরিষ্কার হয়ে কলেজের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে। মশা, কীটপতঙ্গের অভয়ারণ্য না হয়ে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত হবে। দৃষ্টিনন্দন ফুলের বাগান তৈরি হবে। ভবনগুলোর অবকাঠামোগত স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পাবে।

ভিক্টোরিয়া কলেজের প্রিন্সিপাল অধ্যাপক ড. আবু জাফর খান বলেন, দীর্ঘদিন যাবৎ এই কলেজে থাকার কারনে কলেজের উন্নয়নের জায়গাগুলোর সাথে আমি বেশ পরিচিত। কলেজের জলাবদ্ধতা নিরসন, খেলার মাঠ সংস্কার, লাইব্রেরি আধুনিকায়ন এবং ক্যারিয়ার ক্লাব সহ কলেজ ও শিক্ষার্থীর প্রয়োজনে যা যা করা দরকার আমরা করবো ইনশাআল্লাহ।

প্রাচীন শিক্ষা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে কুমিল্লাঞ্চলের মানুষের মাঝে জ্ঞানের প্রসার বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি বারবার বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ কলেজের তালিকায় সেরা দশের অর্জনটিও নিজের করে রেখেছেন। জলাবদ্ধতা নিরসন হলে কলেজে বৃষ্টির পানিতে আর পানি জমবে না। কলা ভবনের পেছনে এখন আর ময়লা-আবর্জনা জমে মশার প্রজনন বাড়বে না। এখন শুনা যাবে না খেলার মাঠে কচুরিপানা চাষ করছে ভিক্টোরিয়া কলেজ। আভ্যন্তরীণ চিত্র কলেজের দ্বিগুন সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে এমনটাই প্রত্যাশা।