আগামীকাল শনিবার কুমিল্লা বিভাগীয় সমাবেশ। নগরজুড়ে ব্যানার পোস্টারের ছড়াছড়ি। প্রস্তুত হচ্ছে মঞ্চ। দলীয় নেতাকর্মীদের মনে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। কুমিল্লার এই বিভাগীয় সমাবেশে যুক্ত হতে চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা থেকে দলে দলে নেতাকর্মীরা ছুটছেন কুমিল্লা অভিমুখে।
বৃহস্পতিবার টাউনহল সমাবেশ স্থলে গিয়ে দেখা যায়, টাউনহলের উত্তরপাশে চলছে মঞ্চ নির্মাণের কাজ। বাঁশ ও লোহার রডের সমন্বয়ে তৈরী মঞ্চ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য বক্তব্য দিবেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতেই অন্তত ২৪ হাজার নেতাকর্মী দূরদুরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন বলে জানান, কেন্দ্রীয় বিএনপির বহিস্কৃত নেতা কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। তিনি জানান, তার নিজের ৭৮ টি ফ্ল্যাটসহ নগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে ২৫ হাজার নেতাকর্মীকে থাকা ও খাবারের ব্যবস্থা করেছেন।
সাক্কু বলেন, কুমিল্লার ১৭ টি উপজেলার পাশাপাশি চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা থেকে নেতাকর্মীরা আসছেন। তাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় কাটছে। সাক্কু জানান, আমরা আজ শুক্রবার এই নেতাকর্মীদের নিয়ে সমাবেশস্থলে জুম্মার নামাজ আদায় করবো। তবে পুলিশ গত কয়েকদিন ধরে তালিকা করে করে আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নিচ্ছে। নেতাকর্মীদের মধ্যে আতংক তৈরীর জন্য আমার ব্যানার পোস্টার ছিড়ে ফেলা হচ্ছে। তবে এসব কাণ্ডে আমি ভয় পাই না।
এদিকে নগরীর রাম ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চারটি গরু এনে রেখেছেন মহানগর বিএনপি নেতারা। জানা গেছে, রাতে আরও ছয়টি গরুসহ মোট ১০টি গরু জবাই করা হবে সমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের ভূরিভোজের জন্য। বৃহস্পতিবার রাত থেকে সমাবেশস্থল কান্দিরপাড় এলাকায় নেতাকর্মীদের খাবারের আয়োজন করেছেন তারা।
মহানগর বিএনপির আহবায়ক উৎবাতুল বারী আবু বলেন, ১০ গরুর ব্যবস্থা হয়েছে। নেতাকর্মীরা অনেকে শহরে পৌঁছে গেছেন। তাদের ভূরিভোজের জন্যই এই আয়োজন। রাত থেকে খাবার দাবারের আয়োজন শুরু হয়েছে। কুমিল্লায় হবে স্মরণকালের সেরা সমাবেশ। এটার জন্য আমাদের প্রস্তুতি অনেক বেশি। কোন নেতাকর্মী যেন কষ্ট না পায় তার জন্য আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা থাকবে।
কুমিল্লা দক্ষিন জেলা বিএনপির আহবায়ক হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াছিন বলেন, বৃহস্পতিবার রাত এবং শুক্রবার সকালেই নেতাকর্মী সবাই পৌছে যাবেন। আমি বৃহস্পতিবার রাতেই দেখেছি সড়কে নেতাকর্র্মীদের ঢল। চারদিকে আজ উৎসবের আমেজ। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে বিএনপির নেতাকর্মীরা আজ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
এদিকে বিএনপির সমাবেশ নিয়ে আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলা পুলিশ সর্তক রয়েছে বলে জানান, কুমিল্লা পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান। পুলিশ সুপার বলেন, যে কোন সমাবেশ আয়োজন হলে পুলিশ সর্তক থাকে। এটা স্বাভাবিক। আমরাও সর্তক থাকবো যেন কোন প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়ে সাধারণ মানুষের কোন সমস্যা না হয়। এছাড়াও আমাদের বাড়তি নজরদারী থাকবে সড়কগুলোতে। যেন যানজট সৃষ্টি না হয়।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া টাউনহল মাঠে সবশেষ করেন। দীর্ঘ ৮ বছর পর আগামীকাল শনিবার একই মাঠে বিভাগীয় সমাবেশ করবে।