‘কিছুতেই মানতে পারছি না, আমার আব্বুর পা নেই’

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ years ago

অবস্থার অবনতি হওয়ায় অবশেষে গায়ক আকবরের ডান পা কেটে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।

আকবরের ফেসবুক আইডি থেকে তার মেয়ে অথৈ লিখেছেন, ‘আব্বুর অপারেশন শেষ হয়েছে। আব্বুর ডান পা কেটে ফেলে দিয়েছে। খুব কষ্ট হচ্ছে আমার। আব্বুর দিকে আমি তাকাতে পারছি না। আমি কিছুতেই মানতে পারছি না, আমার আব্বুর পা নেই। আল্লাহ তুমি আমাদের সঙ্গে এমন কেন করলে? সবাই আব্বুর জন‍্য দোয়া করবেন।’

বর্তমানে রাজধানীর রামপুরার বেটার লাইফ হাসপাতালে ভর্তি আছেন আকবর। গত ১০ অক্টোবর থেকে সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই গায়কের চিকিৎসায় সহযোগিতা করছে। আকবরের চিকিৎসার দায়িত্বে আছেন অধ্যাপক ডা. সৈয়দ সামসুদ্দিন আহমেদ।

জানা গেছে, কিডনি জটিলতাসহ বেশকিছু রোগে ভুগছেন তিনি। তার দুই কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। আর কিডনির অবস্থা খারাপ হওয়ায় শরীরে পানি জমেছিল। পানি জমার কারণে আকবরের ডান পা নষ্ট হয়ে গেছে। যার ফলে তার পা কেটে ফেলে দেয়া হয়েছে।

এর আগে অসুস্থ হয়ে গত মাসের ১৪ সেপ্টেম্বর অসুস্থ হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি হন আকবর। এরপর সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। কিন্তু অর্থে টান পড়ায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর তাকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে আসেন তার স্ত্রী।

গায়ক হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার আগে যশোরে রিকশা চালাতেন আকবর আলি গাজী। খুলনার পাইকগাছায় জন্ম হলেও আকবরের বেড়ে ওঠা যশোরে। পরিবার নিয়ে বর্তমানে ঢাকার মিরপুরে পরিবার নিয়ে বাসা ভাড়া করে থাকেন আকবর।

২০০৩ সালে যশোর এম এম কলেজের একটি অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন আকবর। সেই গান শুনে মুগ্ধ হয়ে বাগেরহাটের এক ব্যক্তি হানিফ সংকেতের ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে চিঠি লিখে এই গায়কের কথা জানান। এরপর ‘ইত্যাদি’ কর্তৃপক্ষ আকবরের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

ওই বছর ‘ইত্যাদিতে’কিশোর কুমারের ‘একদিন পাখি উড়ে’ গানটি আলোচনায় নিয়ে আসে আকবরকে। এরপর নিজের মৌলিক গান ‘তোমার হাত পাখার বাতাসে’ দিয়ে করেন বাজিমাত। গানটির অডিও-ভিডিও দুটোই ছিল সুপারহিট।

দেশ-বিদেশের মঞ্চে গান গেয়ে জীবন কাটাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ করেই কিডনির অসুখে আক্রান্ত হন আকবর। দেখা দেয় ডায়াবেটিসও। ছন্দপতন ঘটে জীবনের। অনেক বছর ধরেই দুরবস্থা চলছে। মাঝে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও ফের ভাগ্যের পরিহাসে সংকটের মুখোমুখি আকবর। সুস্থ হয়ে আবারও সবাইকে গানে মাতাবেন, এমনটাই প্রত্যাশা তার পরিবারের।