কুমিল্লায় ২৯ চোরাই গাড়িসহ চক্রের ১৮ জন গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

কুমিল্লায় র‌্যাবের অভিযানে গাড়িচোর চক্রের ১৮ জন গ্রেফতার হয়। এ সময় চোরইকৃত ২৯ চোরই গাড়ি ও বিপুল পরিমান যন্ত্রাংশ জব্দ করা হয়।

সোমবার বেলা ১১ টায় কুমিল্লা র‌্যাব ১১ এর কমান্ডার মেজর সাকিব মোহাম্মদ সাকিব হোসেন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
গ্রেফতারকৃতরা হলো জেলার আদর্শ সদর উপজেলার আড়াইওড়া গ্রামের মৃত মনোহর আলী এর ছেলে কাউসার আলী খলিল (৪৫) একই গ্রামের ওহাব কাজীর ছেলে মোঃ কাইয়ুম (৪২), মোঃ মুক্তার হোসেন মুসার ছেলে মোঃ সাজিদ হোসেন (২০), ভাটপাড়া গ্রামের নান্নু মিয়ার ছেলে নাজমুল হোসাইন রবিউল (১৯, হাড়ং গ্রামের মোঃ আলম মিয়ার ছেলে মোঃ আবু কাউসার (৩৫), বদরপুর গ্রামের মোঃ হোসেনর ছেলে মোঃ পিয়াস (৩৩), আড়াইওড়া গ্রামের মৃত দিদার বক্সের ছেলে মোঃ জহির মিয়া (৪০), মধ্যম মাঝিগাছা গ্রামের মোঃ হান্নান মিয়ার ছেলে মোঃ জামশেদ হোসেন (২১), দেবিদ্বার উপজেলার নবীয়াবাদ গ্রামের মৃত সামসুল আলমের ছেলে মোঃ সাইফুল ইসলাম জাহাঙ্গীর (৪৫), শিমরা গ্রামের আনোয়ার হোসেনর ছেলে হৃদয় হাসান (১৯), বুড়িচং উপজেলার কংশনগর গ্রামের ধনু মিয়ার ছেলে শুক্কুর আলী (২৩) ,বুড়িচং উপজেলার পারোয়ারা গ্রামের শাহ আলমের ছেলে রিপন মিয়া ওরফে আব্দুল আলীম (২৭), চান্দিনা উপজেলার শ্রীমন্তপুর গ্রামের মোঃ মোহর আলীর ছেলে মোঃ সাইফুল (৩২), ব্রাহ্মণপাড়া সাহেবাবা গ্রামের মইনুল হোসেনের ছেলে মোঃ আল আমিন (২৪), শাসনগাছা গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে মনির মিয়া (৩৯), আড়াইওড়া গ্রামের কাজী মঞ্জিলের ছেলে মজিদ (৩০), বুড়িচংয়ের পারুয়ারা গ্রামের ধনু মিয়ার ছেলে মোঃ তাজুল ইসলাম (৩২), পশ্চিম সিংহ গ্রামের শাহজাহানের ছেলে মোঃ ওমর ফারুক (২৮)।

মেজর সাকিব জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায়। মূলত ৩ টি গ্রুপের সমন্বয়ে তারা গাড়ি চুরি ও নতুন করে বাজারজাত করে। প্রথম গ্রুপ যাত্রীবেশে শহরের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করে গাড়িগুলোকে টার্গেট করে এবং সুযোগ বুঝে ড্রাইভারকে জিম্মি করে বা ড্রাইভারের অনুপস্থিতে সেগুলো চুরি করে। এছাড়াও চুরিকৃত গাড়িগুলো যেন সহজে কেউ খুজে না পায় সেজন্য তারা এক এলাকা হতে গাড়িগুলো অন্য এলাকায় নিয়ে যায়। দ্বিতীয় গ্রুপের কাজ হলো চুরিকৃত গাড়িগুলো বিক্রির জন্য যে এলাকা থেকে গাড়িগুলো চুরি হয়েছে ওই এলাকা ব্যতীত অন্য এলাকার গ্যারেজ মালিকদের নিকট গাড়িগুলো বিক্রি করা এবং তাদের নিকট পৌছে দেওয়া হয়)

মূলত চক্রের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করে থাকে তৃতীূয় গ্রুপের সদস্যরা। এই গ্রুপের সদস্যরা দ্বিতীয় গ্রুপের সদস্যদের নিকট হতে গাড়িগুলো স্বল্পমূল্যে ক্রয় করে তাদের নিজস্ব গ্যারেজে নিয়ে অতি দ্রুত গাড়িগুলোর ব্যাটারী ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ খুলে রং পরিবর্তন করে কয়েকটি গাড়ির যন্ত্রাংশ একত্রিত করার মাধ্যমে নতুন গাড়িতে পরিণত করে এবং নতুন গাড়ি হিসেবে গ্রাহকের নিকট বিক্রি করে। নতুন গাড়িটির সাথে চুরি হয়ে যাওয়া গাড়িটির কোন মিল খুজে পাওয়া যায় না বলে এই চক্রের সদস্যরা নির্ভয়ে এ্ই কাজ পরিচালনা করে আসছে। আসামীদের স্বীকারোক্তি মতে আরো জানা যায়, তারা প্রায় ১০ বছর যাবৎ এই ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত। মূলত তৃতীয় গ্রুপ দ্বিতীয় গ্রুপের মাধ্যমে চুরিকৃত গাড়িগুলো প্রায় ৩০-৫০ হাজার টাকা মূল্যে প্রথম গ্রুপের নিকট থেকে ক্রয় করে এবং দ্বিতীয় গ্রুপের সদস্যদেরকে প্রতিটি গাড়ি বাবদ ৫-১০ হাজার টাকার সম্মানী পায়। ৩য় গ্রুপ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ পরিবর্তনের মাধ্যমে পুরাতন গাড়িকে নতুন গাড়িতে পরিণত করে প্রায় ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায় বিক্রি করে।

গ্রেফতারকালে চক্রের সদস্যদের নিকট হতে ১ টি কাভার্ড ভ্যান, ২ টি মোটরসাইকেল ও ২৬ টি ব্যাটারীচালিত গাড়িসহ অসংখ্য যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়। এ অভিযানে বেশ কয়েকজন চোর ও গ্যারেজ মালিক পালিয়ে যায়। তাদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করা হবে।