কুমিল্লা ইপিজেডের বর্জ্য মিশ্রিত বিষাক্ত পানিতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ

সিটি কর্পোরেশনের নেই বর্জ্য শোধনাগার
সিটি কর্পোরেশনের নেই বর্জ্য শোধনাগার
প্রকাশ: ১০ মাস আগে

 

#রাতে খালে ছাড়া হয় ইপিজেডের বিষাক্ত পানি, লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ
#সিটি কর্পোরেশনের নেই বর্জ্য শোধনাগার

#এ খালে বিশুদ্ধ পানি দিলেও দুর্গন্ধ হবে

আবু সুফিয়ান রাসেল।।
রাতের আঁধারে খালে ছাড়া হয় কুমিল্লা ইপিজেডের ৪৮টি কলকারখানার বিষাক্ত পানি। গতকাল রবিবার কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের মাসিক সমন্বয় সভায় এমন অভিযোগ উঠেছে। তা মানতে নারাজ ইপিজেড কর্তৃপক্ষ। তবে গতমাসে তারা এক লক্ষ ২৮ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন। অন্যদিকে সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য শোধনাগার না থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন একজন উপজেলা চেয়ারম্যান। ইপিজেডের পানি, পরিবেশ অধিদপ্তরের তদারকি আর সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য শোধনাগার না থাকা নিয়ে উত্তপ্ত হয় জেলা প্রশাসকের মাসিক সমন্বয় সভা।

তথ্যমতে, ২০১১ সালে যাত্রা শুরু করে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন। প্রতিষ্ঠার এক যুগেও স্থাপন হয়নি বর্জ্য শোধনাগার। ইপিজেডের শিল্প—কারখানার বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্যমিশ্রিত পানি নিয়ে অভিযোগ জন্মলগ্ন থেকে। এ দু’প্রতিষ্ঠানের পানির কারণে
সদর দক্ষিণ উপজেলার ডাকাতিয়া ও সোনাইছড়ি খালসহ আশপাশের খাল বিলে গিয়ে পড়ে। কুমিল্লা ইপিজেডে ২৩৯টি শিল্প প্লট রয়েছে। ২০১৫ সালের কারখানাগুলোর উৎপাদিত পণ্যের রাসায়নিক বর্জ্য পরিশোধনাগার স্থাপন করা হয়। তবে সেটা চালু আছে কি না? চালু থাকলেও যথাযথ ক্যামিকেল ব্যবহার হয় কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জেলা প্রশাসকের মাসিক সমন্বয় সভায়।

 

সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, রাতে খালে ছাড়া হয় ইপিজেডের বিষাক্ত পানি। যথাযথ ক্যামিকেল ব্যবহার হয় কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কুমিল­া ইপিজেডের কেউ আছেন কিনা? সভায় একজন প্রতিনিধি দাঁড়িয়ে বলেন, স্যার এটা নিয়ে আপনারা যেমন কনসার্ন, আমরাও কনসার্ন। ৪৮টা প্রতিষ্ঠান চালু আছে। সবগুলো প্রতিষ্ঠানের পানি পরিশোধিত করে বের করা হয়। পরিবেশ অধিদপ্তর ২৪ ঘণ্টা আমাদের মনিটরিং করে থাকে। পানিটা আমরা সিটি কর্পোরেশনের খালে ফেলে থাকি। খালের মালিক যেহেতু সিটি কর্পোরেশন, তারা বাকীটা দেখবে।

পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোসাব্বের হোসেন মোহাম্মদ রাজিব জানান, সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে ইপিজেডের বর্জ্য শোধনাগার মনিটরিং করা হয়। তাদের গতমাসে এক লক্ষ ২৮ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছে।

 

সিটি কর্পোরেশন নির্বাহী প্রকৌশলী মাঈন— উদ্দিন চিশতী বলেন, বর্জ্য শোধনাগার স্থাপনে টাকার বিষয়। এটা আমরা করতে পারিনি। এখন খাল খননের কাজ চলমান আছে। ইপিজেডের বিষাক্ত পানির কারণে খাল আর জমির মাটিও এখন বিষক্ত হয়ে গেছে। ২০০৩ সাল থেকে বর্জ্যমিশ্রিত পানি এ খাল দিয়ে যায়। এখন এটার সমাধান হলো খালের নিচে ও উপর উভয় দিকে দেয়াল তৈরি করে দেওয়া। এ মাটি এতটাই বিষক্ত ডিস্টিল ওয়াটার দিলেও মাটির সাথে মিশে দুর্গন্ধ হবে।

মাসিক সমন্বয় সভার সভাপতি ও কুমিল­া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, এ জন্য মাসিক সমন্বয় সভা। এ সমস্যা আর কতদিন? এটা সমাধান দরকার। এ পানি সদর দক্ষিণ, লালমাই, লাকসাম হয়ে নাঙ্গলকোট যায়। সুতরাং কাউকে দোষারোপ না করে সমস্যার সমাধান করা দরকার।