কুমিল্লা নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কলেজের তিন শিক্ষার্থীর হিজাব কেটে দিলেন শিক্ষক

# বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা বললেন, ক্যাম্পাসে আমাদের শালীনতা কিভাবে বজায় রাখবো ? # শিক্ষক বললেন, অবশ্যই আমার এটি করা ঠিক হয়নি, এ বিষয়ে আমি অনুতপ্ত
রুবেল মজুমদার ।।
প্রকাশ: ৩ মাস আগে

কুমিল্লার নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কলেজের তিন শিক্ষার্থীর হিজাব কেটে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মিরন নাহার নামে এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা।
গতকাল বুধবার (২৪ জানুয়ারী) দুপুরে ওই কলেজের ক্যাম্পাসে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় অভিযুক্ত শিক্ষকদের অবরুদ্ধ রেখে আন্দোলন চলছে । এ সময় ঐ শিক্ষিকার পদত্যাগের দাবিতে নানান শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করে তোলে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ। আন্দোলনের এক পর্যায়ে তারা মিডওয়াইফারি কলেজের ৬ জন শিক্ষককে কক্ষে আটকে রেখে বাইরে থেকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এরপর শুরু করে বিক্ষোভ। এসময় তাদের স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠে মিডওয়াইফারি কলেজ প্রাঙ্গণ।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ করে বলেন, গত ২১ জানুয়ারী নার্সিং কলেজের ২য় বর্ষের এক শিক্ষার্থীর হিজাব কেটে দিয়েছেন আমাদের নার্সিং কলেজের শিক্ষিকা মিরন নাহার। পরে, শিক্ষার্থীদেরকে হিজাব কেটে ছোট করে পড়ার কথা বললে শিক্ষার্থীরা এতে দ্বিমত পোষণ করেন। কিন্তু, ওই শিক্ষিকা শিক্ষার্থীদের কোনো কথার তোয়াক্কা না করেই বারবার হিজাব কাটার কথা বলেন ও বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেন।
দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদাউস বলেন, এভাবে যদি আমাদের হিজাব কেটে পড়তে বলা হয়, বা কেটে ফেলা হয় তাহলে আমি বলব মেয়েদের নিরাপত্তা কোথায়। ক্যাম্পাসে আমাদের শালীনতা কিভাবে আমরা বজায় রাখবো।
আরেক শিক্ষার্থী মৌরী রহমান বলেন, আমাদের প্রথম বর্ষ দ্বিতীয় বর্ষ এবং তৃতীয় বর্ষ শিক্ষার্থীদের কে বেল্ট দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। তাই আমরা মেয়েরা যারা হিজাব বড় করে পড়ি তাদের বেল্ট দেখা যায় না। তাই আমাদের হিজাব কেটে দেওয়া হয়েছে। আমি বলব বেল্ট দ্বারাই কেন চিহ্নিত করতে হবে, অন্য কোন উপায়ও তো এটা করা যায়। আমি আমাদের ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা চাই। মেয়েরা যাতে শালীনভাবে চলাফেরা করতে পারে এটা চাই।
৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আকতার বলেন, আমাদের এই বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। কাল(আজ ) সারাদেশে নাসিং শিক্ষার্থীরা আমাদের সাথে আন্দোলনে যুক্ত হবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নার্সিং কলেজের শিক্ষিকা মিরন নাহার বলেন, একজন মুসলিম হিসেবে অবশ্যই আমার এটি করা ঠিক হয়নি। এ বিষয়ে আমি অনুতপ্ত। শিক্ষার্থীদের কে নিয়মের মধ্যে আনার জন্য আমি এটি করেছিলাম। তবে হিজাব কেটে দেওয়া বা কাজী হাতে নেওয়া আমার উচিত হয়নি। আমি দ্রুতই আমাদের শিক্ষকদেরকে সাথে নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়টির একটি সুষ্ঠু সমাধান করব।
তবে কুমিল্লা নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কলেজের নার্সিং ইন্সট্রাক্টর ইনচার্জ আকবরী খানমকে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করল তাকে পাওয়া যায়নি।