কেনাকাটায় প্রযুক্তির ছোঁয়া

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ years ago

দরজায় কড়া নাড়ছে সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গোৎসব। শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পূজার কেনাকাটায় লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমলে চলছে কেনা-কাটা। তবে এবার কিছুটা ভিন্নতা লক্ষ্য করা গেছে দোকানগুলোতে। বুধবার সন্ধ্যার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের বিভিন্ন মার্কেটে সরেজমিনে গিয়ে দেয়া যায়, দোকানিরা তাদের দোকানের জামা-কাপড় হাতে নিয়ে দেখাচ্ছেন ক্রেতাদের। ক্রেতারা তাদের পছন্দ মত জামা কাপড় দেখছেন। এই কেনা কাটায় দেখা যায় প্রযুক্তির ছোয়া।

ক্রেতারা তাদের পছন্দের জামা কাপড় মোবাইলে ছবি তুলে ইমু, হোয়াসআপ ও ম্যাসেনজারের মাধ্যমে পাঠাচ্ছন তাদের স্বজনদের কাছে। স্বজনেরা সেই ছবি দেখে পছন্দ করছেন। কেউ আবার ভিডিও কলের মাধ্যমে জামা-কাপড় দেখিয়ে পছন্দ করানোর চেষ্টা করছেন তাদের স্বজনদের। এ যেন প্রযুক্তি নির্ভর বেচা কেনা।

নিউ মার্কেটে জেলা শহরের বনিক পাড়ার বাসিন্দা সুমা বনিক জানান, আমার শ্বশুর বাড়ি জেলার কসবা উপজেলার চন্ডিদেওয়ার এলাকায়। জেলা শহরের বনিক পাড়ায় আমার বাবার বাড়ি। যেহেতু শহরে বাবার বাড়িতে বেড়াতে এসেছি, পূজার ও বেশি দিন বাকী নেই সেই সুযোগে শ্বশুর বাড়ির স্বজনদের জন্য পূজার কেনাকাটা করতে মার্কেটে এসেছি। দোকান থেকে আমি আমার পছন্দ মতো কাপড় পছন্দ করে মোবাইলে ভিডিও কলের মাধ্যমে স্বজনদের দেখাচ্ছি। স্বজনেরা সে কাপড় দেখে পছন্দ করে দিচ্ছেন তাদের পছন্দ মতো কাপড়।

তিনি আরও বলেন, কসবা থেকে সবাইকে নিয়ে এসে জামা কাপড় কেনা সম্ভব না। কারণ যাতায়াত ভাড়া অনেক পড়বে। প্রযুক্তির কল্যাণে দোকান থেকে ভিডিও কলের মাধ্যমে যার যার পছন্দ মতো জামা কাপড় দেখিয়ে খুব সহজেই কিনে নিতে পেরেছি।

সুব্রত রায় নামে আরেক ক্রেতা বলেন, আমি আমার ছোট মেয়েকে নিয়ে এসেছি তার জন্য কাপড় কিনতে। বাড়িতে আমার আরও দুই মেয়ে রয়েছে। দোকানে তাদের জন্যও কাপড় পছন্দ করে মোবাইলে ছবি তোলে দিয়ে যাচ্ছি। তারা যদি ছবি দেখে পছন্দ করে তাহলে অন্য সময় এসে সে জামা কাপড় নিয়ে যাব।

জেলা শহরের পাইকপাড়ার বাসিন্দা শিল্পী সাহা জানান, পূজার বেশি দিন আর বাকী নেই। জেলা শহরের পাইকপাড়া আমার শ্বশুর বাড়ি। বাবার বাড়ি নরসিংসীতে। বাবার বাড়িতে বাবা, মা, ছোট দুই ভাই রয়েছে। পূজাতে তাদের উপহার দিতে হবে। আমি আমার পছন্দ মতো কাপড় পছন্দ করে, সেই কাপড়ের ছবি তোলে হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে পাঠাচ্ছি। সেই কাপড় দেখে তারা তাদের পছন্দ জানাবে। পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যাব।

নিউ মার্কেটের এলিগেন্স গার্মেন্টসের বিক্রেতা মাসুম শেখ জানান, পূজার বেচা-কেনা এখনো তেমন শুরু হয়নি। আগামী সপ্তাহ থেকে পূজার বেচা-কেনা বাড়বে বলে আশা করি। এখন যারা দূরের স্বজনের উপহার পাঠাবেন, সেই সব ক্রেতাদেরই দোকানে আসছেন।

তিনি আরো জানান, কোন ক্রেতা মোবাইলে ছবি তোলে তার স্বজনের কাছে পাঠাচ্ছেন, আবার কোন ক্রেতা ভিডিও কলের মাধ্যমে তার স্বজনকে দোকানের কাপড় দেখাচ্ছেন। স্বজনেরা পছন্দ করে দিলেই ক্রেতারা সেই জামা-কাপড় কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

ফরিদ মিয়া টাওয়ারের ইজি লাইক ফ্যাশনোর দোকানি এমরান জানান, পূজার কেটাকাটা আগামী সপ্তাহ থেকে জমজমাট হবে বলে আশা করি। এখন ক্রেতারা এসে ঘুরে ঘুরে জামা কাপড় দেখছেন। দোকানের কাপড় ছবি তোলে বিভিন্ন মাধ্যমে তাদের স্বজনদের দেখাচ্ছে। কেউ বা আবার ভিডিও কলের মাধ্যমে দেখাচ্ছে। পরে ছবি দেখে জামা কাপড় পছন্দ করলে তারা কিনে নিয়ে যায়। ক্রেতাদের সুবিধার জন্য আমরা এভাবেই তাদের দেখাচ্ছি।