খুলনায় স্বস্তি ফিরিয়েছে শীতকালীন সবজি

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

খুলনার বাজারগুলোতে তেল চিনির দাম না কমলেও নাগালের মধ্যে নিত্যপণ্যের দর। হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া মাছ ও পেঁয়াজের দামও কমেছে বেশ। কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে পানি দামে। একই সঙ্গে শীতকালীন সবজির দামও অর্ধেকে নেমে এসেছে। ফলে কয়েকদিন আগেও বাজারে এসে যারা অস্বস্তিতে পড়েছিলেন তারাই এখন স্বস্তিতে কেনাকাটা করছেন।

শনিবার (২৬ নভেম্বর) নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, খোলা বাজারের চাল বিক্রি অব্যাহত থাকা এবং বাজারে নতুন চালের আমদানি বাড়তে থাকায় বাজারে ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের চাল। কয়েক দিন আগেও যা বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬৯/৭০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন চালের দাম আরও কিছু কমে যাবে।

নগরীর বড় বাজারের চাল বিক্রেতা অশোক কুণ্ডু বলেন, খুলনার বাজারে নতুন চাল আসতে শুরু করায় দাম কেজি প্রতি ২-৩ টাকা করে কমছে বিভিন্ন ধরনের চালের। আমন ধান কাটার মৌসুম চলছে। কিছু কিছু এলাকায় আগাম কাটার ফলে সেই সব চাল বাজারে আসতে শুরু করেছে। ক্রেতারাও এখন নতুন চাল খুঁজছেন।

এদিকে বাজারে প্রায় প্রতিদিনই নতুন নতুন দামে বিক্রি হচ্ছে শীতকালীন সব সবজি। শুরুতে চড়া অবস্থায় থাকা শীতের সবজিগুলোর দাম এখন অর্ধেকেরও নিচে নেমে এসেছে। আরও দরপতন হবে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

বর্তমানে বাজারে ফুলকপি ৪০ টাকা, বিটকপি ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, সিম ৪০ টাকা, লাউ ৩০ থেকে ৪০ টাকা পিস, টমেটো কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, ঝিঙে ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, আলু ২৮ থেকে ৩০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০ টাকা থেকে ৪০ টা, ডিমের হালি ৩৮ থেকে ৪৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নগরীর গল্লামারী বাজার, মিস্ত্রিপাড়া বাজার, ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজার, টুটপাড়া জোড়াকল বাজার ও রূপসা বাজার ঘুরে জানা যায়, বাজারে এখন মাছের আমদানি কয়েকদিন আগের চেয়ে বেড়েছে। ফলে খাল বিল শুকিয়ে যাবার অজুহাতে মাছের যে বাড়তি দাম ব্যবসায়ীরা নিয়েছেন তা আর নিতে পারছেন না।

টুটপাড়া জোড়াকল বাজারের মাছ ব্যবসায়ী রমজান আলী, নান্টু, আব্দুর রহিম বলেন, গত মাসের চেয়ে খুলনার বাজারে এখন মাছের আমদানি বেশি। চিংড়ি, রুই কাতলা, মৃগেল, গ্রাস কার্প, তেলাপিয়া, পাঙ্গাশ, পাবদা, পার্শে, শোল, টাকি যা মাছের ভরপুর আমদানি হচ্ছে। ফলে মাছের দাম কমেছে।

এই বিক্রেতারা বলেন, বাজারে এখনও ইলিশ মাছের চাহিদা আছে। তবে দাম রয়েছে আগের মতোই। বর্তমানে আগের দরেই বিক্রি হচ্ছে এই মাছ। এছাড়া রুই, কাতলা, মৃগেল মাছ আকার ভেদে ১৮০ থেকে ৩০০ টাকা, পারশে মাছ আকার ভেদে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, চাষের পাঙ্গাশ ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, রূপচাঁদা ৬০০ থেকে ১০০০ টাকা, পাবদা ৩০০ টাকা, দেশি মাগুর ৬০০ টাকা, শোল মাছ ৫০০ টাকা, ভেটকি মাছ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, আইর মাছ সাইজ অনুযায়ী ২৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, ভোলা ৩০০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৫০০ থেকে ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে বাজারে নিত্য পণ্যের দাম নাগালের মধ্যে থাকলেও চাল, ডাল, তেল, চিনির দাম না কমায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বৃহত্তর আমরা খুলনাবাসীর সভাপতি ডা. মো. নাসির উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহাবুবুর রহমান।

নেতারা বলেন, বাজারে মজুতদাররা কারসাজি করলেও তা উৎখাত করতে পারছে না কেউ। তারা চাল, ডাল তেল চিনি মজুত করে দাম বাড়িয়ে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোকে বেকায়দায় ফেলে দিচ্ছে।

জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ পরিচালক মো. ইব্রাহীম হোসেন বলেন, বাজার দর স্বাভাবিক রাখতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে জরিমানাও করা হচ্ছে। অভিযোগ ছাড়াও জাতীয় ভোক্তা অধিকার দপ্তর নিয়মিত অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রেখেছে।