গা*জায় হ*ত্যাযজ্ঞ ঠেকাতে মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান ইরানের সর্বোচ্চ নেতা খামেনির

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ দিন আগে

গাজায় ইহুদিবাদী ইসরায়েলের আগ্রাসন পুনরায় শুরু হওয়ার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এই আগ্রাসনকে অত্যন্ত বড় ধরনের অপরাধ ও বিপর্যয়কর বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়োতুল্লাহ আলী খামেনি। এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধে মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা’র উদ্ধৃতি দিয়ে তেহরান থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

খামেনি বলেছেন, ‘এটি পুরো মুসলিম উম্মাহর সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়। তাই গোটা উম্মাহকে সব ধরনের মতভেদ ভুলে এই হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে এবং ইউরোপ ও আমেরিকাসহ বিশ্বের সব অঞ্চলের মুক্তিকামী সবাইকে এই বিশ্বাসঘাতকতামূলক ও বিপর্যয়কর পদক্ষেপ মোকাবিলা করতে হবে, যাতে আবারও শিশু-হত্যা, ঘরবাড়ি ধ্বংস ও ফিলিস্তিনি জনগণকে শরণার্থী হতে না হয়।’

ইরানের সর্বোচ্চ এই নেতা বলেছেন, ‘মার্কিন সরকার এই বিপর্যয়ের দায়দায়িত্বের শরিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, মার্কিন সরকারের ইশারায় অথবা তাদের সম্মতিতে এই অপরাধযজ্ঞ চালিয়েছে ইসরায়েল।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘ইয়েমেনের ওপর ও দেশটির বেসামরিক জনগণের ওপর হামলাও আরও এক অপরাধযজ্ঞ, যা অবশ্যই ঠেকাতে হবে।’

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বৃহস্পতিবার ফার্সি নববর্ষ ১৪০৪ শুরু হওয়া উপলক্ষে দেওয়া ভাষণের একাংশে এসব মন্তব্য ও আহ্বান তুলে ধরেন।

ইরানা জানিয়েছে, আলী খামেনি ইরানের জন্য নতুন ফার্সি বছরের নামকরণ করেন ‘উৎপাদনের জন্য পুঁজি-বিনিয়োগের’ বছর হিসেবে।

তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, দামেস্কে ইরানের কয়েকজন সামরিক উপদেষ্টার শাহাদাত বরণ, ইরানি জাতির জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি’র শাহাদাত এবং এরপর তেহরান ও লেবাননের তিক্ত ঘটনাবলীর কারণে ইরানি জাতি ও ইসলামী উম্মাহ বেশ কয়েকজন মূল্যবান ব্যক্তিত্বকে হারিয়েছে এই ফার্সি বছরে।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেছেন, বড় বড় নানা দুর্ঘটনা ও জটিল সমস্যা সত্ত্বেও ইরানি জাতি দৃঢ় আধ্যাত্মিক মনোবল ও ঐক্য এবং উচ্চমানের প্রস্তুতি দেখাতে সক্ষম হন। যার বহিঃপ্রকাশ দেখা গেছে প্রিয় প্রেসিডেন্টের মৃত্যুর পর তাকে শেষ বিদায় জানাতে আসা বিপুল জনগণের উচ্চতর মনোবল ও শ্লোগানগুলোতে। এ থেকে প্রমাণ হয়েছে, বড় ধরনের বিপদ-মুসিবতও ইরানি জাতির মধ্যে দুর্বলতার অনুভূতি সৃষ্টি করতে সক্ষম নয়।

এএফপি জানায়, আলী খামেনি নির্ধারিত আইনি-সময়সীমার মধ্যে খুব দ্রুত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠান ও সরকার গঠনের মাধ্যমে দেশকে নেতৃত্বের শূন্যতা থেকে মুক্ত করার ঘটনাকে ইরানি জাতির আরও একটি উচ্চতর আধ্যাত্মিক সক্ষমতা ও উচ্চতর মনোবলের প্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন।

লেবানন ও ফিলিস্তিনি জাতির নানা সংকট মোকাবেলার ক্ষেত্রেও ইরানি জাতি উদার চিত্তে তাদের লেবাননি ও ফিলিস্তিনি ভাইবোনদের সহায়তায় বন্যার জোয়ারের মত সাহায্যের বিপুল চালান পৌঁছে দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা। এর মধ্য দিয়েও ইরানি জাতির উচ্চতর মনোবল ও আধ্যাত্মিক শক্তি ফুটে উঠেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

খামেনি এই প্রসঙ্গে প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রতি ইরানি জনগণের বিস্ময়কর সহায়তা বিশেষ করে ইরানি নারীদের স্বর্ণালংকার উপহার দেওয়ার ঘটনাকে ইরানের ইতিহাসের অবিস্মরণীয় ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন।

তিনি এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘ইরানি জাতির দৃঢ় সংকল্প ও ইচ্ছাশক্তি, প্রস্তুতি ও আধ্যাত্মিক মনোবল প্রিয় এই জাতির ভবিষ্যৎ ও সবসময়ের জন্য মূল্যবান পুঁজি এবং এর ফলে এই দেশটির ওপর আল্লাহর অনুগ্রহের ধারা অব্যাহত রয়েছে।’