গোমতীর পানি কমতে শুরু করেছে। গতকাল শনিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত যদিও নদীটির পানি বিপৎসীমার ৯২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা দুপুর ১টায় ছিল ৯৫ সেন্টিমিটার। তবে বন্যাদুর্গত এলাকায় খাবার ও পানি সংকট দেখা দেওয়ায় দুর্ভোগ আরও বাড়ছে। একই সাথে গোমতী বাঁধের উত্তর পাড়ের অরণ্যপুর ও ঝাকুনীপাড়া এলাকায় গতকাল দুপুর থেকে তিনটি স্থানে ক্ষুদ্রাকারে ফাটল দেখা যায় এবং এতে পানি চুয়ে চুয়ে আসছে। এটা পাউবো কুমিল্লা ও এলাকাবাসীর নজরে আসার সাথে সাথে বিজিবিসহ সবাই সম্মিলিত ভাবে ফাটল স্থানে মেরামত করেন। এ ছাড়াও একই পাড়ের আরো কয়েকটি স্থানে দেখা গেছে স্থানীয়রা গাছ কেটে ও বালু বস্তা ফেলে সম্ভাব্য সতর্কতা বজায় রাখছে। কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মো. ওয়ালিউজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে গোমতীর বাঁধ ভাঙার পর থেকে বুড়িচং উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তবে ভারত থেকে নেমে আসা পানির তীব্রতা থাকায় গোমতীর পানি প্রতি ঘণ্টায় ১ সেন্টিমিটার করে কমছে। সুতরাং আমরা এখনও ঝুঁকিতে নেই এটা বলা যাচ্ছে না। এদিকে ভাঙনের ফলে বুড়িচং উপজেলার দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য ও খাবার পানির সংকট। যদিও জেলা প্রশাসন থেকে দাবি করা হয়েছে, দুর্গত এলাকায় সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে পর্যাপ্ত খাদ্যসহায়তা পাঠানো হচ্ছে। তবে পর্যাপ্ত ট্রলার ও নৌকা সংকটে দুর্গত এলাকায় খাদ্যসহায়তা পাঠানো যাচ্ছে না বলে জানা গেছে। গোমতীর বাঁধ ভেঙেছে বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুরবুরিয়া নামক স্থানে। সেখানকার ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রে সরকারিভাবে কিছু ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সেখানে রয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। ত্রাণ অপ্রতুল রয়েছে। যদিও আজ শনিবার ভোর থেকে ত্রাণের গাড়ি নিয়ে দুর্গত এলাকায় যেতে দেখা গেছে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকতা মোহাম্মদ আবেদ আলী শনিবার দুপুরে বলেন, বুড়িচং উপজেলায় গোমতীর বাঁধ ভেঙে পৌনে ২ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ৫৪৫ জন ৩৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, শুক্রবার বিকেলে এক ট্রাক শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেকেই ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছেন। আজ আরও খাবার বরাদ্দ দেওয়া হবে।