জন্মসনদ দিতে হয়রানি করলে ব্যবস্থা: ইসি

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ years ago

জন্মসনদ দিতে গড়িমসি বা হয়রানি করলে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ুন কবীরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, তথ্য সংগ্রহ হালনাগাদ কার্যক্রমে কোনো জনপ্রতিনিধি আবেদনকারীর জন্ম নিবন্ধন সনদ ইস্যু না করলে বা হয়রানি করলে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধির তথ্য এনআইডির মহাপরিচালককে লিখিতভাবে জানাতে হবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগ বরাবর পত্র প্রেরণ করতে হবে।

এছাড়া সব আঞ্চলিক কর্মকর্তাকে এ নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালানোরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।

সম্প্রতি ইসির মাসিক সমন্বয় সভায় জন্মসনদ পাওয়ার বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদের হয়রানির কথা বলেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা। ফলে চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদে এই সমস্যা আরো প্রকট হয়েছে। এক্ষেত্রে ভোটার তালিকা হালনাগাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার শঙ্কাও প্রকাশ করছেন কর্মকর্তারা।

কোনো কোনো আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা বলেছেন, তার এলাকায় কোনো সমস্যা নেই। আবারো কোনো আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জানিয়েছেন সেখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জন্মসনদ দিতে গড়িমসি করেন, অনেকেই দেন না।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভোটার তালিকা প্রণয়ন আইন অনুযায়ী, ফরম-২ এ জন্মসনদ নম্বর দিতে হয়। এক্ষেত্রে একজন নাগরিকের জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রয়োজন। কিন্তু ভোটার হতে ইচ্ছুক অনেককেই নানাভাবে ঘোরানো হয়। শিক্ষা সনদ, বাড়ি ভাড়ার রশিদসহ অন্যান্য কাগজপত্র থাকার পরও ভোগান্তিতে পড়েন অনেকে। এ অবস্থায় ভুক্তভোগীরা জন্মসনদ ছাড়াই ভোটার হাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানা নির্বাচন কার্যালয়ে যান। কিন্তু সুযোগ না থাকায় ইসির মাঠ কর্মকর্তারাও অপারগতা জানান। আইনে জন্ম সনদের উল্লেখ থাকায়, সেটা ছাড়া তারা কাউকে ভোটার করে নিতে পারেন না।

এবার হালনাগাদে ভোটার বৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ অর্থাৎ ৮৪ লাখ ৯৬ হাজার ৫২৬ জনকে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে কার্যক্রম হাতে নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গতবারের মতো এবারও তিন বছরের তথ্য একসঙ্গে নেয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পূর্বে যারা জন্মগ্রহণ করেছেন, তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এর মধ্যে যাদের বয়স যখন ১৮ বছর পূর্ণ হবে, তখন তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটার তালিকায় যুক্ত হবেন।

আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে হালনাগাদের কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগুচ্ছে নির্বাচন কমিশন। ২০০৭-২০০৮ সালে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়নের পর এ পর্যন্ত ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়েছে পাঁচবার। বর্তমানে তাদের তথ্য ভাণ্ডারে ১১ কোটি ৩২ লাখ ৮৭ হাজার ১০ জনের তথ্য রয়েছে। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৮৯ হাজার ৫২৯ ও মহিলা ভোটার ৫ কোটি ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ২৭ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছে ৪৫৪ জন।