‘ডায়বেটিকস রোগীরা পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে রোজা রাখতে পারবেন’

'রোজা ও ডায়াবেটিস: স্বাস্থ্য ঝুঁকি, সতর্কতা ও করণীয় শীর্ষক' সেমিনারে বক্তারা - 
জাহিদ হাসান নাইম
প্রকাশ: ২ সপ্তাহ আগে

 

বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী (সচেতনতা দিবস) উপলক্ষে ‘রোজা ও ডায়াবেটিস: স্বাস্থ্য ঝুঁকি, সতর্কতা ও করণীয় শীর্ষক’ সেমিনার ও ‘আপনজন সম্মাননা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

 

শুক্রবার (২৮ ফ্রেরুয়ারি) বিকালে ব্রাহ্মণপাড়া ডায়াবেটিস সমিতির উদ্যাগে নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন হোমিও ও দেশজ চিকিৎসা’র পরিচালক ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডাইরেক্টর (এএমসি) ডা. মোঃ আবু জাহের।

 

এসময়, সেমিনারে বক্তারা বলেন ডায়াবেটিস মানবদেহে বহু জটিলতা তৈরি করে। এই রোগ হলে অন্ধত্ব, হৃদরোগ, কিডনি রোগ, স্ট্রোক ও পঙ্গুত্বের মতো অন্য সব রোগ দেহে বাসা বাঁধবে। ডায়াবেটিস একটি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণযোগ্য রোগ। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সচেতন হতে হবে। নিয়মিত ব্যায়াম, খাদ্যে শর্করার পরিমাণ কমানো, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা ও ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে। ফাস্টফুড, জাঙ্কফুড, তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

 

এছাড়া সামনে পবিত্র মাহে রমজান। এসময়ে, ডায়াবেটিকস রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন। যাদের সামর্থ্য আছে তাদের ডায়াবেটিস এমন কোনো বাধা নয়। প্রয়োজন পূর্বপ্রস্তুতি। রমজানের পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে যারা রোজা রাখেন তাদের হাইপোগ্লাইসেমিয়াসহ অন্য জটিলতা রমজানের পূর্বের চেয়েও অনেক কম হয়। রোজা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত।

 

২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বিশ্বের ৫৪ কোটির বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। প্রতি সাত সেকেন্ডে বিশ্বে একজন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়। প্রতি বছর ডায়াবেটিসের কারণে বিশ্বে প্রায় ১০ লাখ মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশে দিন দিন ডায়াবেটিস রোগী বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশে এখন এক কোটি ৩০ লাখের বেশি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত। এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০২৫ সালে দেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় দুই কোটি ৫০ লাখে দাঁড়াবে। বর্তমানে দেশে প্রতি ১২ জনে একজন ডায়াবেটিস আক্রান্ত। ডায়াবেটিস রোগীদের সুষম খাবার গ্রহণ, নিয়মিত হাঁটাচলা করা, ডাক্তারের পরামর্শমতো ওষুধ এবং ইনসুলিন গ্রহণ করা প্রয়োজন।

 

এসময় সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কুমিল্লার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. রেজা মোঃ সারওয়ার আকবর, সমাজসেবক ও শিক্ষানূরাগী মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী।

 

ব্রাহ্মণপাড়া ডায়বেটিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. আ. হ. ম তাইফুর আলমের সভাপতিত্বে মূখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ডায়বেটিস ও হরমোন বিশেষজ্ঞ ডা. মোঃ মহিউদ্দিন, মেডিসিন ও লিভার বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ ইজাজুল হক, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আবদুল লতিফ, গাইনী বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শামীমা আকতার রেখা।

 

অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্য রাখেন, ব্রাহ্মণপাড়া ডায়বেটিক সমিতির অনারারি কনসালটেন্ট ও প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ডা. মোঃ আতাউর রহমান জসীম। এসময়, ব্রাহ্মণপাড়া ডায়বেটিক সমিতি, ধান্যদৌলের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ সৈয়দ আবদুল কাইউম কে আপনজন সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়াও, সেমিনারে বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।