ডিম-মুরগির দাম বাড়িয়ে মুনাফা লুটেছে মধ্যস্বত্বভোগীরা: বিপিআইসিসি

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ years ago

চাহিদা ও সরবরাহের তফাতের কারণে দেশের বাজারে হঠাৎ করেই বেড়ে যায় ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দাম। আন্তর্জাতিক বাজারে ফিড তৈরির কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি, ডলারের বিপরীতে টাকার ব্যাপক দরপতন, পণ্য আমদানিতে মাত্রাতিরিক্ত জাহাজ ভাড়া ও লোডশেডিং পরিস্থিতি ডিম ও মুরগির মাংসের উৎপাদন খরচ বহুলাংশে বাড়িয়ে দিয়েছে। এ কারণে খোলা বাজারে আমিষের সবচেয়ে বড় জোগান দেওয়া ডিম ও মুরগির দামও বাড়ে হু হু করে। অনাকাঙ্ক্ষিত এ মূল্যবৃদ্ধির পেছনে এক শ্রেণির সুযোগ সন্ধানী মধ্যস্বত্বভোগীর মুনাফা লুটার অপপ্রয়াসও দায়ী। এমনটিই মনে করে পোল্ট্রি শিল্পের কেন্দ্রীয় সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)। ডিম-মুরগির দাম বাড়ায় ভোক্তাদের ভোগান্তি নিয়েও উদ্বেগ ও দুঃখ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।

শুক্রবার (১৯ আগস্ট) বিপিআইসিসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও বিপিআইসিসির সমন্বয়ে শক্তিশালী মনিটরিং ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং তৃণমূল খামারিদের সুরক্ষায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তার সঠিক বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করত হবে।

বিপিআইসিসি জানায়, গত ১৬ আগস্ট বিপিআইসিসির জরুরি বৈঠকে ডিম-মুরগির হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান বিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ৬ আগস্ট পাইকারি বাজারে মুরগির কেজিপ্রতি দাম ছিল ১৩৬ টাকা। প্রতিটি বাদামি ডিমের দাম ছিল ৯ দশমিক ১০ টাকা ও সাদা ডিমের দর ছিল ৮ দশমিক ৭০ টাকা। কিন্তু ডিজেল, পেট্রল, অকটেন ও কেরোসিনের নতুন বর্ধিত দাম কার্যকর হওয়ার ঘোষণা আসার পরদিনই অর্থাৎ ৭ অক্টোবর থেকে সারাদেশে বাস-ট্রাক-পিকআপসহ পরিবহন সংকট দেখা দেয়। অনেক অনেক মালিক পরিবহন বন্ধ রাখে, অনেকে আবার অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে। যেহেতু ডিম ও মুরগির ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশের জোগান দেয় গ্রামীণ তৃণমূল খামারিরা, তাই পরিবহন সংকটে সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ায় ঢাকাসহ অন্যান্য জেলা ও বিভাগীয় শহরে ডিম ও মুরগির সরবরাহ কমে যায়, বিপরীতে বাড়ে দাম।

এরমধ্যে গত ১৩ ও ১৪ আগস্ট মধ্যস্বত্বভোগীদের কারসাজিতে খোলা বাজারে ডিম ও মুরগির দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে। পাইকারি পর্যায়ে প্রতিটি বাদামি ডিম ১০ দশমিক ৯০ টাকা এবং ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭০-১৭৫ টাকায় উঠে। টিসিবির তথ্যানুযায়ী, খুচরা পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের দাম ১৩ দশমিক ৭৫ টাকা এবং ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি ২০০ টাকায় উন্নীত হয়। অথচ হঠাৎ করেই এ দাম বাড়ার পেছনে সাধারণ খামারিদের কোনো হাত নেই। এরপর পরিবহন ব্যবস্থা ক্রমে স্বাভাবিক হলে ১৫ আগস্ট থেকে আবারও ডিম-মুরগির দাম কমতে শুরু করে।

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ব্রয়লার মুরগির পাইকারি দর প্রতি কেজি প্রায় ৪০-৪৫ টাকা কমে ১৩০-১৩৫ টাকায় এবং প্রতি ১০০ পিস বাদামি ডিমের দাম ১৩০ টাকা কমে ৯৬০ টাকায় (প্রতিটি ৯.৬০ টাকা) ও সাদা ডিম ১৪০ টাকা কমে ৯৫০ টাকায় (প্রতিটি ৯.৫০ টাকা) বিক্রি হয়েছে।