তিতির পালন করে মাসে আয় ৩ লাখ টাকা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ years ago

ময়মনসিংহের ত্রিশালে মোখ্যপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত আকন্দ ভিটা কৈতরবাড়ী গ্রাম। সেই গ্রামের বিদেশ ফেরত রফিক গত এক বছরে তিতির পাখি পালন করে বাজিমাত করেছেন। তিতিরের ডিম ও বাচ্চা বিক্রি করে মাসে আয় করেন তিন লাখ টাকা।

পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে দীর্ঘ ১৮টি বছর প্রবাসে কাটান রফিকুল ইসলাম। তবে তাতে ভাগ্যের চাকা ঘুরেনি। দেশে বাড়ির চারপাশে অনাবাদি মাটিতে গড়ে তুলেন মাল্টা, লেবু ও পেঁপের বাগান। ফল বিক্রি করেও প্রতি বছর আয় করেন ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা।

এরপর ২০২০ সালে ৩০০টি তিতির পাখি নিয়ে শুরু করেন খামার। প্রথম বছরেই তিনি তিতির খামার থেকে ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন করে সফলতা অর্জন করেন। বর্তমানে তার খামারে বড় তিতির পাখির সংখ্যা প্রায় ৭০০। এদের থেকে প্রতিদিন ডিম সংগ্রহ করেন। মাসে সাড়ে তিন হাজারের মতো ডিম উৎপাদন হয়। খামারি রফিক এ ডিম থেকে ইনকিউবেটরের মাধ্যমে মাসে তিন হাজার বাচ্চা উৎপাদন করেন। তিনি একদিনের বাচ্চা প্রতিপিস ১০০ টাকা দরে ও ডিম প্রতি পিস ৫০ টাকা দরে বিক্রি করেন। পাশাপাশি বড় তিতির পাখিগুলো একেকটা বিক্রি করেন ১ হাজার টাকা ধরে। গত এক বছরে তিতির পাখি বিক্রি করে তিনি বাজিমাত করেছেন। তিতির পাখি বছরের বেশির ভাগ সময় ডিম দিয়ে থাকে।

খামারি রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি ১৮ বছর সৌদি আরবে প্রবাস জীবন পার করি। সেখান থেকে ফিরে বাড়ির পাশে জমিতে মাল্টা, লেবু, পেঁপের বাগান করে ভালোই লাভবান হই। পরে অন্য একজনের সঙ্গে পরামর্শ করে এ উপজেলায় আমিই প্রথম তিতির পাখির খামার গড়ে তুলি। প্রথম বছরই ডিম, বাচ্চা উৎপাদন করে ভালোই সাড়া পাই। এ খামার এখন আরও বড় করার চেষ্টা করছি। আমার খামারে ২০ হাজার তিতির পাখি লালনপালনের পরিকল্পনা আছে। কিন্তু আমার খামারে আসার রাস্তা খারাপ হওয়ার কারণে ডিম, বাচ্চা বিক্রিতে পাইকারের লেবার খরচ বেশি হওয়ায় দাম কিছুটা কম পাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, তিতির পাখির রোগবালাই অনেক কম হয়। খাবার হিসেবে চাল, সবুজ ঘাস, কুড়া, লতাপাতা, পোকামাকড় ইত্যাদি খায়। লালনপালনেও খরচ অনেক কম। তিতির পাখির ডিম, মাংস অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর।

উপজেলা ভেটেনারি ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, বাংলাদেশে তিতির পাখির বেশ চাহিদা রয়েছে। এ উপজেলায় রফিকুল ইসলামই প্রথম এ খামার গড়ে তুলেছেন। তিতির পাখির খামার ভালো লাভজনক। এ পাখির তেমন রোগবালাই হয় না। খাবারের খরচও কম। সবুজ ঘাস এদের প্রধান খাবার। অন্যান্য পাখির থেকে এর মাংস, ডিম অনেক সুস্বাদু। এর ডিম, মাংসের দামও অনেক বেশি। আমরা তার খামারের খোঁজখবর রাখছি। তার যে কোনো প্রয়োজনে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করব।