দেবিদ্বারে পাওনা টাকা চাওয়ায় ভ্যানচালককে হত্যা, ঘাতক গ্যারেজ মালিক পলাতক

কুমিল্লার দেবিদ্বারে পাওনা টাকা চাওয়ায় মো. শফিউল্লাহ (৪৫) নামে এক ভ্যানচালককে নির্মমভাবে হত্যা করেছে তারই বন্ধু ও গ্যারেজ মালিক রাসেল (৩০)। মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার ভানী ইউনিয়নের ত্রিবিদ্যা গ্রামে রাসেলের অটোরিকশা গ্যারেজে এ মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহত শফিউল্লাহ ভানী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোসলেম উদ্দিনের ছেলে। তিনি পেশায় একজন অটোভ্যান চালক। অভিযুক্ত রাসেল একই ইউনিয়নের আন্দিরপাড় এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে এবং পেশায় একজন অটোরিকশা মেকানিক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শফিউল্লাহ ও রাসেলের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব ছিল। দু’জনের মধ্যে আর্থিক লেনদেনও ছিল বেশ। চার মাস আগে রাসেলের কাছে শফিউল্লাহর প্রায় ৪৫ হাজার টাকা পাওনা ছিল। এ নিয়ে একবার দুজনের মধ্যে হাতাহাতি পর্যন্ত হয়, পরে স্থানীয় সালিসে বিষয়টি মীমাংসা হয়।
মঙ্গলবার আবারো টাকার বিষয় নিয়ে দুজনের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে রাসেল ক্ষিপ্ত হয়ে গ্যারেজে থাকা একটি লোহার রড দিয়ে শফিউল্লাহর মাথা ও মুখে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই শফিউল্লাহ মারা যান। পরে রাসেল লাশ গ্যারেজে ফেলে সাটার বন্ধ করে পালিয়ে যায়।
নিহতের প্রতিবেশী সবুজ নামে একজনকে ফোনে ঘটনাটি জানায় রাসেল। সবুজ স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে গ্যারেজে গিয়ে লাশ দেখতে পায় এবং পুলিশকে খবর দেয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
নিহতের স্ত্রী তাসলিমা বেগম বলেন, “আমার ৩ ছেলে ও ৩ মেয়ে আছে। রাসেল আমার স্বামীকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। পাওনা টাকা না দিলে না দিত, কিন্তু এমনভাবে মারবে কেন? আমি ঘাতক রাসেলের ফাঁসি চাই।”
দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামসুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে রাসেল ও তার পিতা কেরামত আলীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘাতক রাসেলকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।”