নোয়াখালীর পদযাত্রায় যাওয়ার পথে কুমিল্লার লাকসামে বিএনপির গাড়ি বহরে ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলা, আহত ৮৫

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১০ মাস আগে

বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নোয়াখালীতে পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করতে প্রায় ৭০/৭৫টি গাড়িবহর নিয়ে যাত্রা করে কুমিল্লার মুরাদনগর ও তিতাস উপজেলা বিএনপি। পথিমধ্যে লাকসামে পৌঁছালে ওই গাড়ি বহরে হামলা চালায় সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা। এতে কমপক্ষে মুরাদনগর উপজেলার ৬০জন এবং তিতাস উপজেলার ১৫/২০জন নেতাকর্মী আহত হন। ভাঙচুর করা হয় ৪০-৪৫টি মাইক্রোবাস ও গাড়ি। শুক্রবার দুপুর একটায় জেলার লাকসাম উত্তর বাইপাস সড়কের উত্তর মোড়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহতরা কুমিল্লার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অপরদিকে, দেলোয়ার হোসেন নামে এক কর্মী আহতের খবর পেয়ে তার ৬০ বছর বয়সী পিতা আবুল কাসেমের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহত নেতাকর্মীদের মধ্যে রয়েছেন, মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোল্লা মজিবুল হক, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক এডভোকেট নাছির উদ্দিন, উপজেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক নায়েব আলী, মুরাদনগর সদর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি বসিরুল ইসলাম মোল্লা, কুমিল্লা উত্তর জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাছির উদ্দিন, উপজেলা স্বেচ্ছসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ওমর ফারুক বাদশাসহ অন্তত ৬০ নেতাকর্মী।
এদিকে, এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে আহত মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোল্লা মজিবুল হক বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা ব্যাহত করতে এ হামলা চালানো হয়েছে। অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। একইসঙ্গে এই সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি।
অপর দিকে, বিএনপির ১ দফা দাবীর আন্দোলনের অংশ হিসেবে নোয়াখালীর মাইজদী যাবার পথে লাকসামে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা। হামলায় তিতাস উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোঃ ওসমান গণি ভূইয়ার ব্যক্তিগত গাড়িসহ বেশ কিছু গাড়ি ভাংচুৃর হয়েছে।

তিতাস উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ জানান, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক আখতারুজ্জামান সরকার আক্তার, তিতাস উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোঃ ওসমান গনি ভূঁইয়া এবং সদস্য সচিব মেহেদি হাসান সেলিম ভূইয়ার গাড়ি বহরেও হামলা করেছে দূর্বৃত্তরা।
এবিষয়ে তিতাস উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ওসমান গণি ভূইয়া ও সদস্য সচিব মোঃ মেহেদী হাসান সেলিম ভূইয়া বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান সরকারের নেতৃত্বে আমাদের একটি গাড়ি বহর নোয়াখালীর মাইজদী যাচ্ছিলাম বিভাগীয় কর্মসূচীতে অংশ নিতে। পথিমধ্যে লাকসামের রেল জংশনে পৌঁছলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা আমাদের গাড়ি বহরে
সন্ত্রাসী হামলা করে। তারা আকস্মিক এলোপাথাড়ি হামলা চালায়। এতে আমাদের ১৫/২০জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
ছাত্রলীগ ও যুবলীগের বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর হামলার বিষয়ে জানার জন্য লাকসাম উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ও পৌরসভার মেয়র আবুল খায়েরের সেল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অপরদিকে, একই বিষয়ে লাকসাম পৌরসভা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. রফিকুল ইসলাম হীরা বলেন, লাকসাম উপজেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ছেলেরা খুবই ভালো ছেলে। তারা এ ধরনের হামলা করতেই পারে না। যেহেতু এখানে বিএনপির দুই গ্রুপ রয়েছে সুতরাং তারাই এই অপকর্মটি করে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের উপর দায় চাপাতে চাচ্ছে।
লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, এই ধরনের কোন ঘটনার বিষয়ে আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।