জাটকা রক্ষায় গত ১ মার্চ থেকে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় মাছ শিকারে চলছে দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে ইলিশ শিকারে মেতেছে অসাধু জেলেরা। বাড়তি লাভের আশায় অসাধু কর্মকর্তাদের অর্থের বিনিময়ে চলছে মাছ শিকার। এতে করে ভেস্তে যাচ্ছে অভয়াশ্রম কর্মসূচি। তবে পুলিশ ও প্রশাসন বলছে, জাটকা রক্ষায় নদীতে প্রতিনিয়ত অভিযান চালানো হচ্ছে। নববর্ষকে কেন্দ্র করে তা জোরদার করা হবে। কারো বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সদর উপজেলার বিষ্ণপুর, আনন্দবাজার, পুরানবাজার, লক্ষ্মীপুর, বহরিয়া, হরিনা ফেরিঘাট, হাইমচর, কাটাখালী, চরভৈরবীসহ মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলার নদী পাড়ের বিভিন্ন আড়ৎসহ চরাঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, ইলিশসহ নানান ধরনের মাছ বিক্রি করছে জেলেরা। ছোট ছোট নৌকায় করে মাছ নিয়ে ঘাটে ভিড়ছে জেলেরা। দ্রুত মাছ বিক্রি করে পূণরায় মাছ শিকারে ফিরে যাচ্ছে নদীতে। নববর্ষ উপলক্ষে ইলিশের চাহিদা বেশি থাকায় দামও চড়া।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শহরের পুরানবাজার ও রনগোয়াল এলাকার বেশ কয়েকজন জেলে জানান, অনেক জেলেই পেটের দায়ে নদীতে নামছে ইলিশ ধরতে। কিছু অসাধু পুলিশ ও মৎস্য কর্মকর্তা টাকার বিনিময়ে জেলেদের মাছ ধরায় সুযোগ করে দেয়। টাকা না দিলে ধরতে পারলে মারধর করার পাশাপাশি জেলে চালান করে দেয়।
আরেক জেলে জানান, নদীতে এখন ইলিশ আগের মত নেই। তারপরও দাম বেশি হওয়ায় যা ধরতে পারি তাই লাভ। মাঝারি সাইজের প্রতি পিস ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১২শ’ থেকে ২ হাজার টাকায়। আর ১ কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায়।
বাংলাদেশ কান্ট্রি ফিসিং বোট মালিক সমিতির চাঁদপুর জেলা সভাপতি শাহ আলম মল্লিক বলেন, নববর্ষকে কেন্দ্র করে অনেক জেলে নদীতে নামছে মাছ শিকারে। নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের উৎপাদন বন্ধ করতে না পারলে জাটকা নিধন বন্ধ হবে না। আর মাছ শিকার বন্ধ করা না গেলে অভিযানের পরিপূর্ণ সফলতা আসবে না।মাধবপুর থেকে নিখোঁজ ব্যক্তির লাশ চুরুঘাট থেকে উদ্ধার মাধবপুর থেকে নিখোঁজ ব্যক্তির লাশ চুরুঘাট থেকে উদ্ধার
চাঁদপুর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএমএস ইকবাল হোসেন বলেন, বিশাল এই নদীর তুলনায় আমাদের জনবল কম। তবুও আমরা জাটকা রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তারপরেও লুকিয়ে দু-একজন জেলে হয়তো নদীতে নামতে পারেন। আমরা চেষ্টা করছি কেউ যাতে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকার করতে না পারে। পহেলা বৈশাখকে ঘিরে আমাদের অভিযান আরো জোরদার করা হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মহসীন উদ্দিন বলেন, এখানকার মানুষজন জানে এখন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ। নববর্ষ উদযাপনে চাঁদপুরের কোথাও পান্তা ইলিশ আয়োজনের খবর পাইনি। হয়তো কিছু জেলে নিষেধাজ্ঞ অমান্য করছে তবে সংখ্যায় তা খুবই নগণ্য। তাদের আইনের আওতায় আনতে আমরা তৎপর রয়েছে। আশা করি ইলিশের অভিযান বেশ সফল হবে।
চাঁদপুরে নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ৪৪ হাজার। এদের মধ্যে ৪০ হাজার জেলেকে নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে ৪০ কেজি করে ৪ মাস চাল সহায়তা প্রদান করছে সরকার। অভিযানে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ লক্ষ মিটার কারেন্ট জাল ও ২ মে.টন জাটকা জব্দ করা হয়েছে।