ভিক্টোরিয়া কলেজ নবাব ফয়জুন্নেসা হল : নানা সমস্যায় বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠছে ছাত্রীরা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ years ago

স্টাফ রিপোর্টার।।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ছাত্রীদের একমাত্র হল নবাব ফয়জুন্নেসা হলের প্রভোস্টের পদত্যাগ, হলের সমস্যা সমাধান এবং ছাত্রীবান্ধব প্রভোস্ট নিয়োগের দাবিতে বিক্ষুদ্ধ হয়ে উঠছে শিক্ষার্থীরা ।

শুক্রবার একাধিক আবাসিক ছাত্রী আমাদের কুমিল্লাকে বলেন, কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের দাবী না মানেন তাহলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবো। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নবাব ফয়জুন্নেসা হলে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী কলেজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকের একাধিক গ্রুপে হল প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করে পোষ্টও দেন।

শুক্রবার (৮ এপ্রিল) বিকালে নবাব ফয়জুন্নেসা হলের একাধিক ছাত্রী অভিযোগ করেন, হলের পানির ট্যাঙ্কির পানি খাওয়া কিংবা গোসল করা কোনোটিরই উপযোগী নয়। করোনা পরবর্তী সময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত দীর্ঘ ৬ মাস ঢাকনা বিহীন ট্যাঙ্কির পানি পান করে আসছে হলের মেয়েরা। শুধু তাই নয়, যেখানে পুরাতন ভবনগুলো বসবাসের জন্য অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সেখানেই ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছি আমরা ।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে অর্ধশতাধিক এ শিক্ষার্থীরা জানায়, হল প্রভোস্টরা বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। তারা শিক্ষার্থীদের প্রায় সময়ই বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের দয়া করে থাকতে দিয়েছি এটাই বেশি। দুর্ব্যবহার হচ্ছে হল প্রশাসনের নিত্যদিনের কাজ।

এছাড়া আমাদের বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করা, নতুন ভবনে হল প্রশাসনের অবৈধ ভাবে পাঁচটি রুম দখলমুক্ত করা, হলে প্রভোস্টরা নিয়মিত আসা, হলের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা, অতিরিক্ত অর্থ আদায় বন্ধ করাসহ বিভিন্ন দাবি মানতে হবে। অন্যথায় আমরা আরোও কঠোর কর্মসূচি গ্রহন করবো। আমরা এসব দাবি প্রভোস্ট ও কলেজ অধ্যক্ষকে ৬ মাস আগেই লিখিত অভিযোগ করেছি, কিন্তু এটির কোনো সুরাহা হয়নি।

নবাব ফয়জুন্নেসা হলের প্রভোস্ট মাসুদা তোফা বলেন, ১৬ ডিসেম্বর হল চালু হয়। হলে দায়িত্ব নেওয়ার পর, হলে কিছু সমস্যা ছিল যেগুলো আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। অধ্যক্ষ স্যারের সাথে কথা বলে আমরা সুপেয় পানির ব্যাপারে কথা বলেছি, স্যার বলেছেন জুনের মধ্যে কাজটা করে দিবে। সম্প্রতি যখন জানতে পারলাম প্রজেক্ট পিছিয়েছে তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি দ্রুত সমস্যা সমাধানের। ১৬ ডিসেম্বর হল চালু হলেও করোনার কারনে পুনরায় হল বন্ধ হয়ে যায় ১ মাসের জন্য। প্রতিনিয়িত আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলছি, তাদের সমস্যাগুলো সমাধানে চেষ্টা চলছে।

আমাদের বিরুদ্ধে মেয়েদের অভিযোগ সম্পূর্ন ভিত্তিহীন। হলের পুরাতন ভবন থেকে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের নতুন ভবনের তুলা হয়েছে। তারা আমাদের কাছে অভিযোগ না করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেমন খুশি লিখছে। আমরা নোটিশ করেছি, মেয়েদের সাথে আলোচনা করে তাদের দাবিকৃত সমস্যাগুলো অধ্যক্ষ স্যারের সহযোগিতায় সমাধান করবো ।

এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু জাফর খান বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন পানির ট্যাংক ও উন্নত মানের নিরাপদ পানি ফিল্টার সংযোগ করা হয়েছে। বিভিন্ন সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে। হলের পাশে ভালো ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় শিক্ষার্থীদের সমস্যা হচ্ছে। আবাসন সংকট নিরসনে বর্ধিত নতুন ভবনের জিনিসপত্র ক্রয় হয়ে গেলে এ সমস্যা আর থাকবে না। মেয়েদের দাবির বিষয়গুলো আমরা আলোচনা করছি। আশা করি দ্রুত সমাধান হবে।