মনোহরগঞ্জে প্রবাসীর স্ত্রীকে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা, ভাসুর গ্রেপ্তার

# ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা বললেন- চাকরি জীবনে এমন নৃশংস হত্যাকান্ড দেখিনি
স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে তুচ্ছ ঘটনায় এক প্রবাসীর স্ত্রীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে ভাসুরের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ভাসুরকে আটক করেছে পুলিশ। খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করতে ঘটনাস্থলে যাওয়া পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন- তিনি চাকরি জীবনে এমন নৃশংস হত্যাকান্ড আর দেখেননি।
বুধবার (২৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৭টায় উপজেলার সরসপুর ইউনিয়নের বাতাবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ৩ সন্তানের জননী নিহত শারমিন আক্তার মনি (২৮) ওই গ্রামের প্রবাসী মাসুদ আলমের স্ত্রী। অভিযুক্ত খোরশেদ আলম (৩৫) পেশায় অটোরিকশা চালক। তিনি ওই গ্রামের মন্তাজুর রহমানের ছেলে।
নিহতের ভাই সালে আহাম্মদ জানান, ১২ বছর আগে মাসুদ আলমের সাথে আমার বোন শারমিন আক্তার মনির বিয়ে দেই। বিয়ের পর থেকেই তার মেঝো ভাসুর খোরশেদ আলম সামান্য বিষয় নিয়েও মনির গায়ে একাধিকবার হাত তোলে। এ নিয়ে শালিসে কয়েকবার সে দোষি সাব্যস্থ হয়। এতে মনির প্রতি সে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে পড়ে। বুধবার সকালে কাপড় শুকানোর রশি নিয়ে উভয়ের কথা কাটাকাটি হয়। কিছুক্ষণ পর মনি ঘরের পাশে ফেরিওয়ালা থেকে মাছ কিনছিল। এ সময় খোরশেদ ঘর থেকে ধারালো দা এনে মনিকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মুখমন্ডল বিকৃত, ডান কান ও ডান স্তন কেটে ফেলে। এছাড়া দুই হাত-দুই পা কেটে ঝুলিয়ে দেওয়াসহ পিঠে ও দেহের অন্যান্য স্থানে জখম করে। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মনোহরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য লাকসাম নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহত মনির ৩ সন্তানের মধ্যে ছোট ছেলে হামিদের বয়স ৪ মাস, অপর ছেলে সামীরের ৪ বছর। মেয়ে মিম আক্তার (৮) বাতাবাড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২য় শ্রেণিতে পড়ে। শারমিন আক্তার মনি ১০ ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট। সে সোনাইমুড়ি উপজেলার জয়াগ ইউনিয়নের মৃত ছায়াদুল হক মোল্লার।
মনির ভাবি নাছিমা আক্তার এ হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করে বলেন, ঘাতক খোরশেদের বিরুদ্ধে শিশু অপহরণ, হত্যা, মানুষজনকে মারধরসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে, খবর পেয়ে মনোহরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক আব্দুল আলিম ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করেন। তিনি বলেন, আমার চাকরি জীবনে এমন নৃশংস হত্যাকান্ড আর দেখিনি।
মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আলম জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের মেঝো ভাই সালেহ আহমেদ বাদী হয়ে খোরশেদ আলমকে আসামি করে মনোহরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় শাহপুর এলাকা থেকে অভিযুক্ত আসামি খোরশেদ আলমকে আটক করা হয়েছে।