‘মাদক নিয়ন্ত্রণে সব সংস্থার সদস্যদের ডোপ টেস্টের আওতায় আনা হবে’

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ years ago

মাদক নিয়ন্ত্রণে সরকারি-বেসরকারি সব সংস্থার সদস্যদের ডোপ টেস্টের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দ্রুতই নতুন কর্তৃপক্ষের অধীনে পুলিশের পাশাপাশি সরকারি চাকরি, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিসহ সব ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট চালু হবে।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে সমাজ কল্যাণ ও উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস) আয়োজিত আলোচনাসভায় মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. শামসুল হক টুকু।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামসুল হক টুকু জানান, ডোপ টেস্ট কার্যক্রমকে সফল করতে সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে এরই মধ্যে পৃথক কর্তৃপক্ষ গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ও এ বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে।

মাদকবিরোধী দিবস উপলক্ষে ‘মাদক প্রতিরোধে ডোপ টেস্টের ভূমিকা’ শীর্ষক এ আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন স্কাস চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা। সাংবাদিক নিখিল চন্দ্র ভদ্রের সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি, এস এম শাহজাদা ও সৈয়দা রুবিনা আক্তার, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী প্রমুখ।

মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন একাত্তর টেলিভিশনের যুগ্ম-প্রধান বার্তা সম্পাদক পলাশ আহসান। মূল প্রবন্ধে জানানো হয়, দেশে প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ লাখ মাদকাসক্ত রয়েছে। প্রতিবছর মাদকের পেছনে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা নষ্ট হচ্ছে। বর্তমানে শিশু ও নারীদের মধ্যে মাদকাসক্তের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে ছেলেদের মতো মেয়েরাও ইয়াবা অবলীলায় গ্রহণ করছে। বিগত ১০ বছরে মাদকাসক্তির কারণে ২০০ মা-বাবা খুন হয়েছেন। অন্যান্য অপরাধের মূলেও রয়েছে এই মাদক।

প্রবন্ধে আরো বলা হয়, মাদকসেবীদের প্রতিদিন গড়ে ১৫০ টাকার মাদক লাগে। এই হিসাবে একজন মদকাসক্ত বছরে ৫৪ হাজার ৭৫০ টাকার মাদকের জন্য ব্যয় করে। দেশে ২৫ লাখ মাদকাসক্ত ধরা হলে তারা বছরে ১৩ হাজার কোটি টাকার মাদক সেবন করে। এসব মাদকের পুরোটাই অবৈধভাবে দেশে আসছে। আর পাচার হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। এই অবস্থা পরিবর্তনে বিদ্যমান মাদক আইনকে যুগোপযোগী করার পাশাপাশি মাদক বিস্তার রোধে সব ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট কার্যকর করার বিকল্প নেই।

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু বলেন, পুলিশের ডোপ টেস্ট কার্যক্রম চলছে। গাড়িচালকদের ডোপ টেস্ট শুরু হয়েছে। চাকরি ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট শুরুর নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এর পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ডোপ টেস্টের আওতায় আনতে হবে। এতে মাদকের চাহিদা কমবে। ফলে দেশে মাদকের প্রবেশও কমবে। ডোপ টেস্ট কার্যক্রম সফল ও আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।

সভাপতির বক্তব্যে স্কাস চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা বলেন, সারাদেশে মাদক পাচার ও বেচাকেনার ক্ষেত্রে নারীদের ব্যবহার করা হচ্ছে। ব্যবসার কৌশল বদলে মাদক কারকারিরা এখন নারী ও শিশুকে ব্যবহার করছে, যা খুবই দুঃখজনক ও উদ্বেগের বিষয়।