মুরগি ও ডিমের দামে ফের অস্থিরতা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ৩ years ago

রাজধানীর খুচরা বাজারে মুরগি ও ডিমের দামে ফের অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সরবরাহ ঠিক থাকলেও সাত দিনের ব্যবধানে ব্রয়লার ও দেশি মুরগির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। পাশাপাশি খুচরা পর্যায়ে প্রতি ডজন ফার্মের ডিম ৯-১০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজার পণ্য মূল্য তালিকা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ৬.৪৫ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি হালি (৪ পিস) ফার্মের ডিমের দাম বেড়েছে ৯.২১ শতাংশ। রাজধানীর খুচরা বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৭০ টাকা, যা সাত দিন আগে ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি দেশি মুরগি ১০ টাকা বেড়ে ৫৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

কাওরান বাজারের খুচরা বিক্রেতা মো. আরিফ বলেন, গত মাসের প্রথমদিকে পাইকারদের সিন্ডিকেটের কারণে ডিমের দাম বাড়ে। তারা অতি মুনাফা করতে বেশি দামে বিক্রি করে। যে কারণে সেসময় প্রতি ডজন ডিম ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে।

পাশাপাশি প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ টাকার ওপরে বিক্রি করেছি। ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানে পাইকার সিন্ডিকেট চিহ্নিত হয়। তারা দাম কমিয়ে বিক্রি করতে শুরু করে। এজন্য গত সপ্তাহেও প্রতি ডজন ডিম ১২০ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন পাইকারি বাজারে আবারও দাম বাড়ার কারণে বেশি দামে এনে বেশি দামে প্রতি ডজন ১৩০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।

জানতে চাইলে তেজগাঁও বহুমুখী ডিম ব্যবসায়ী সমিতির প্রচার সম্পাদক নাসির উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, প্রশাসনের অভিযানের পর ডিমের দাম অযৌক্তিকভাবে কমে যায়। এখন দাম স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার চেষ্টা চলছে। কয়েকদিন আগে দাম অনেক বেড়েছিল।

এর ভেতরে ভোক্তা অধিদপ্তর অভিযান শুরু করে। তখন বাজারে দাম অনেক পড়ে যায়। বিক্রেতারা লস দিয়ে ডিম বিক্রি করে। সেসময় প্রতি পিস ডিম পাইকারি পর্যায়ে সাড়ে ৮ টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু উৎপাদন খরচ ৯ টাকার ওপরে।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি সিম, টম্যাটো ও গাজর ১২০-১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি প্রতি পিস লাউ বিক্রি হয়েছে ৬০-৭০ টাকা। প্রতি কেজি বরবটি ৮০-৯০, করলা ৮০, বেগুন ৬০-৭০, পটোল ৪০-৫০, ধুন্দল ৬০, ঝিঙা ৪০-৫০, ঢ্যাঁড়স ৪০ এবং প্রতি কেজি শসা বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা।

মাছবাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি রুইমাছ বিক্রি হয়েছে ৩২০-৪৫০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙাশ মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে ১৬০-২০০ টাকায়। প্রতি কেজি শিংমাছ ৩৫০-৪৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি কইমাছ বিক্রি হয়েছে ২০০-২৫০ টাকা। আর পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হয়েছে ৩৫০-৫০০ টাকা।

রাজধানীর কাওরান বাজারে পণ্য কিনতে আসা রবিউল ইসলাম বলেন, বাজারে ডিমের দাম আবারও বাড়তে শুরু করেছে। সঙ্গে ব্রয়লার মুরগির দামও বেড়েছে। এছাড়া সবজি ও মাছের দামে যেন আগুন। পরিস্থিতি এমন-কেজিতে ৫০ টাকার নিচে মিলছে না কোনো সবজি। এমন পরিস্থিতিতে বাজারে কঠোর তদারকি করতে হবে।

বগুড়া ব্যুরো জানায়, বগুড়ায় ডিমের দাম আবারো বাড়ছে। জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির পর ডিমের মূল্য প্রতি হালি ৪৪-৪৮ টাকা হয়েছিল। প্রশাসনের অভিযানে ৩৬ টাকায় নেমে এলেও গত এক সপ্তাহ ধরে ডিমের মূল্যে ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার প্রতি হালি পাইকারি ৩৮ টাকা ও খুচরা ৪০-৪২ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রশাসনের কঠোর নজরদারীর অভাবে বড় প্রতিষ্ঠানগুলো আবারো ডিমের দাম বৃদ্ধি করেছে। ডিমের দাম বাড়লেও আশপাশের জেলায় কম থাকায় তারা লসে ডিম বিক্রি করছেন।