মুরাদনগরে সড়ক উন্নয়নে পাল্টে যাচ্ছে গ্রামীন জনপদ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

এন এ মুরাদ ।। কুমিল্লার মুরাদনগরে আধুনিকতার সঙ্গে তাল মেলাচ্ছে গ্রাম। শহরের সুবিধা পৌঁছে যাচ্ছে গ্রামেও। বদলে গেছে গ্রামীণ জীবন। গ্রামীণ রাস্তাঘাট উন্নয়নের ফলে শহরের সব সুবিধা পাওয়া যায় গ্রামে। জেলার এই বৃহৎ এ উপজেলায় ২২টি ইউনিয়ন ও ৩০৮ টি গ্রাম নিয়ে গঠিত। এখানে কাঁচা পাকা সড়ক আছে ৭৪০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৩২৪ কিলোমিটার পাকা সড়ক।
উপজলোর সর্ব দক্ষিণ সীমানা- বাবুটি পাড়া ইউনিয়নের ইলিয়টগঞ্জ – বাখরাবাদ হয়ে মুরাদনগর সড়কটি ২৪ কিলোমিটার ঢাকা -চট্টগ্রাম মহাসড়কের গোমতা ইসহাকীয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কৃষ্ণপুর হয়ে মুরাদনগর সদর পর্যন্ত প্রায় ২২ কিলোমিটার দৈর্ঘ এ দুটি পাকা সড়ক মুরাদনগরকে ঢাকার সাথের দূরত্ব কমিয়ে দিছে।

এছাড়াও উপজেলার সর্ব উত্তরে অদের খাল, যেই অদের খাল মুরাদনগরকে নবীনগরের সাথে বিভাজন করেছে। সেই অদের খাল তথা ( মালাই বাঙ্গরা) থেকে কোম্পানীগঞ্জ হয়ে মুরাদনগর ২৪ কিলোমিটার সোজা সড়ক। উপজেলার সবচেয়ে বড় বাজেটের সড়ক নবীপুর থেকে – শ্রীকাইল হয়ে রামচন্দ্রেরপুর পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার এটি প্রায় ৮০ কোটি টাকা ব্যায়ে পুননির্মাণ করেছেন বর্তমান সাংসদ আলহাজ্ব ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন। এই সড়কটির ফলে অবহেলিত উত্তর অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রায় আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে।
মুরাদনগর-রামচন্দ্রপুর ১০ কিলোমিটার, মুরাদনগর- তিতাস ১১ কিলোমিটার, পান্নারপুল- বাখরাবাদ ১০ কিলোমিটার, দারোরা-সুবলারচর-১৫ কিলোঃ, কোম্পনাীগঞ্জ – মুরাদনগর ৪ কিঃমিঃ এই প্রধান সড়কগুলো পাকা হওয়ায় মুরাদনগর উপজেলা সদরের সাথে সবদিক থেকে যোগাযোগ ব্যাবস্থার উন্নয়ন ঘটেছে। যার ফলে- শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থানসহ নানা বিধ দৈনন্দিন কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে করা সম্ভব হচ্ছে।
এভাবে উপজলোর সকল গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশা-পাশি গ্রামের অলিগলিতে সড়ক পাকা হওয়ায় মুরাদনগর উপজেলার গ্রামগুলো শহরের রুপ নিচ্ছে।
উপজেলাবাসী জানায়, ১৫ বছর আগেও উপজেলার ৮০ ভাগ রাস্তা ভাঙ্গা ছিলো। বর্ষায় সময় ভাঙা রাস্তাগুলো চলাচলের অনুপযোক্ত হয়ে পড়তো। গ্রামের সাধারণ মানুষের সাথে রোগী ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে দুর্ভোগের শেষ ছিলো না। বর্তমানে ৭০ ভাগের উপর সড়ক পাকা হওয়ায় শহরের মতো মানুষের জীবনব্যাবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। উন্নয়নের নেপথ্যে কাজ করছেন আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ও বর্তমানে মুরাদনগরের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন (এফসিএ)।

কাজের অগ্রগতি ও মান পরিদর্শনে তিনি নীজেই যাচ্ছেন সরেজমিন। সম্প্রতি উপজেলার কোম্পানীগঞ্জ বাজার ও কুমিল্লা – সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রসস্ত করণে (সওজের) কাজ পরিদর্শন করেন এই এমপি।
এছাড়াও মেটংঘর- শ্রীকাইল (এলজিইডি) সড়কের মেরামত কাজের ভিত্তি প্রস্তর উদ্বোধন করেন এবং কাজের মান ঠিক রাখতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ প্রদান করেন।

২নং আকবপুর ইউনিয়নের ঘোড়াশাল গ্রামের রজ্জব হোসেন রাজু বলেন, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হওয়ায় মানুষের নানা ধরনের কাজ বেড়েছে। এতে আয়ও বেড়েছে। রাস্তা ভালো হওয়ায় এলাকার ছেলেমেয়ে সহজে স্কুলে যেতে পারে। যারা অন্যের জমিতে কাজ করতেন তাদের অনেকেই ছোটখাটো ব্যবসা বা বিভিন্ন ধরনের ফসল আবাদ করছেন। কেউ কেউ অটোরিকশা বা ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালিয়েও জীবিকা নির্বাহ করছেন।
নবীপুর পূর্ব ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য রামপ্রসাদ দেব বলেন, বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ছোঁয়ায় নগড়পাড় একটি আদর্শ গ্রামে পরিণত হয়েছে। এখনে শতভাগ গ্যাস,কারেন্ট ও আবাসন ব্যাবস্থা থাকায় পুরো গ্রামটি ছোট শহরে রুপ নিয়েছে।

এ বিষয়ে নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন, বর্তমান সরকারের সময় নবীপুর পশ্চিম ইউনিয়নে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে । এখন আর গ্রামের কোন চিহ্ন নেই উত্তর ত্রিশ। ছোট- খাটো সব সড়কই পাকা।
এই গ্রামে মুরাদনগর কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজ ও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স দিয়েছেন এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন। একারণে গ্রামটি এখন আর গ্রাম মনে হয়না। যেন পরিপাটি সাজানো ছোট শহর।

নবীপুর পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদের তিন বারের চেয়ারম্যান কাজী আবুল খায়ের বলেন,
পল্লী সড়ক উন্নয়ন বর্তমান সরকারের একটি অগ্রাধিকার প্রাপ্ত প্রকল্প। এই প্রকল্পসহ অন্যান্য প্রকল্প থেকে কাজ এনে মুরাদনগরে প্রান্তিক পর্যায়ে রাস্ত- ঘাটের উন্নয়ন করছেন এমপি ইউসুফ হারুন। যোগাযোগ ব্যাবস্থার উন্নয়ন হওয়ায় মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন হয়েছে। উন্নত যোগাযোগ ব্যাবস্থা শতভাগ বিদ্যুৎ, আর বাসা বাড়িতে লাইনের গ্যাস থাকায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের “গ্রাম শহর” হয়েছে।