মেয়ের মৃত্যুর দুই সপ্তাহ পর মারা গেলেন মা

নিউজ ডেস্ক।।
প্রকাশ: ২ মাস আগে
ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার শওকত হাসান

ঘরে ঢুকে একসঙ্গে ছুরিকাঘাত করা হয় মা পারভিন আক্তার (৩৮) ও মেয়ে উম্মে হাফছাকে (১৮)। আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মেয়ে উম্মে হাফছাকে মৃত ঘোষণা করেন। ছুরিকাঘাতের ঘটনার ১৪ দিন পর আজ শুক্রবার ভোরে মৃত্যু হয়েছে মা পারভিন আক্তারেরও।

নিহত পারভিন আক্তার কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভার মজিদিয়া মাদ্রাসা পাড়া এলাকার আবদুল হামিদের স্ত্রী। ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

এর আগে ১৭ জানুয়ারি মা-মেয়েকে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। উম্মে হাফছার স্বামী শওকত হাসান দুজনকে ছুরিকাঘাত করেন বলে স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের সূত্রে জানা গেছে। ছুরিকাঘাতের ঘটনার পর রাতেই পার্শ্ববর্তী লামা উপজেলা থেকে শওকত হাসানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ৮ মাস আগে উম্মে হাফছাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে বিয়ে করেন শওকত হাসান। এ ঘটনার পর হাফছার পরিবার থানায় অভিযোগ করলে হাফছাকে নির্যাতন শুরু করেন শওকত ও তাঁর পরিবারের লোকজন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত ৫ ডিসেম্বর উম্মে হাফছা বাপের বাড়িতে চলে আসেন। ১৬ জানুয়ারি রাতে শওকত হাসান শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে উম্মে হাফছাকে নিয়ে যেতে চাইলে বাধা দেন পরিবারের সদস্যরা। ওই সময় উম্মে হাফছাকে মারধর করেন শওকত। পরদিন ১৭ জানুয়ারি দুপুরে শওকত বাড়িতে ঢুকে স্ত্রী উম্মে হাফছা ও শাশুড়ি পারভিন আক্তারকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান।

এজাহারে এ ছাড়া বলা হয়েছে, জুমার নামাজ শেষে বাড়ি ফিরে পারভিন ও উম্মে হাফছাকে রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন বাড়ির অন্য সদস্যরা। দুজনকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে হাফছাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। আহত অবস্থায় পারভিন আক্তারকে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালের চিকিৎসক হুমায়ুন কবির বলেন, ছুরিকাঘাতে পারভিন আক্তারের প্রচুর রক্তক্ষরণ হয় এবং নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায়। পাঁচ দিন ধরে আইসিইউতে ছিলেন পারভিন। ১৪ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে আজ ভোর পাঁচটার দিকে মারা গেছেন তিনি।

জানতে চাইলে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনজুর কাদের ভূঁইয়া বলেন, ছুরিকাঘাতে হতাহতের ঘটনায় উম্মে হাফছার বাবা আবদুল হামিদ বাদী হয়ে এর আগে মামলা করেছেন। মামলায় হাফছার স্বামী শওকত হাসান, শ্বশুর আবুল হাশেম, শাশুড়ি মমতাজ বেগম, স্বামীর বোন সুমাইয়া আকতার ও প্রতিবেশী আবদুল হাকিমকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার শওকত হাসান ১৮ জানুয়ারি হত্যার ঘটনায় দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অন্য আসামিদের ধরতে চেষ্টা করছে পুলিশ।