মোটরসাইকেল চালিয়ে তাক লাগাচ্ছেন ইলিয়াস

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১ বছর আগে

মোটরসাইকেল সাধারণত উপরে বসেই চালাতে হয়। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার শশই গ্রামের ইলিয়াস শিকদার মোটরসাইকেলের উপরে দাঁড়িয়ে, দুই পা উপরে তুলে বসে, শুয়ে এমনকি তিনি মোটরসাইকেলের হ্যান্ডেল বারে হাত না রেখে, ফুটব্রেক বা গিয়ার প্যাডে দুই পা না রেখেই চলন্ত মোটরসাইকেলের উপর দাঁড়িয়ে পরিবর্তন করছেন তার নিজের পোশাক।

মোটরসাইকেলকে নিজের আয়ত্বে এনে নানা ধরনের কসরত প্রদর্শন করে থাকেন তিনি। এভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টার দীর্ঘ পথ অতিক্রম করসহ চলন্ত মোটরসাইকেলে দাঁড়িয়ে গায়ের টিশার্ট খুলে নানা অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করতে পারেন তিনি। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মোটরসাইকেল চালানোর ভিডিও দেখে অনেকেই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। ইলিয়াস শিকদারের ইচ্ছে ব্যতিক্রম এই মোটরসাইকেল চালানোর মাধ্যমে বিশ্বের বুকে নিজের পাশাপাশি বাংলাদেশকে তুলে ধরা।

জানা যায়, ছোটবেলা থেকেই মোটরসাইকেলে চড়ার নেশা ছিল তার। সেই নেশা থেকেই মোটরসাইকেলের প্রতি তার ধীরে ধীরে আগ্রহ বাড়তে থাকে। জেলার বিজয়নগর উপজেলার কাজী মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম কলেজ এইচএসসি পাশ করে চলে যান কর্ম জীবনে। রাজধানীর রামপুরা-বনশ্রী এলাকায় তিনি এসি-টিভি ও ফ্রিজ বিক্রি এবং সার্ভিসিং সেন্টার গড়ে তুলেন। পরে কাস্টমারদের সঙ্গে মার্কেটিং করতে গিয়ে মোটরসাইকেলের অবাধ ব্যবহার করেছেন তিনি।

এর পরই মূলত তিনি মোটরসাইকেলকে পুরোপুরিভাবে রপ্ত করেন তিনি। পরে কাজের ফাঁকে ফাঁকে খোলা জায়গায় মোটরসাইকেলের উপর দাঁড়িয়ে চালানোর চেষ্টাকালে কেটে যায় প্রায় তিন বছর। তিন বছর পর সফল হন ইলিয়াস। এর পর তিনি রাজধানীর বাড্ডা, কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম মিঠামইন হাওরের উপর নির্মিত সড়ক, হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়া চা বাগান এলাকায় মোটরসাইকেলের উপর দাঁড়িয়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেন। তার এই কার্যক্রম দেখে খুশি দর্শকসহ তার বন্ধুরা।

ইলিয়াসের বন্ধু বিজয়নগর উপজেলার ইসলামপুর এলাকার সোহেল আল মাহমুদ বলেন, ইলিয়াস শিকদারকে নিয়ে আমাদের এলাকার মানুষ ও আমাদের বন্ধু মহল গর্বিত ও আনন্দিত। কারণ আমাদের এলাকার ইলিয়াস শিকদার মোটরসাইকেলের উপর দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিভিন্ন কসরত দেখাচ্ছেন। এখন সেটা সারা বিশ্বের মানুষ দেখতে পারছে। আমরা আশা করি ইলিয়াস তার এই প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে গিনেস বুকে নাম লেখাতে পারবে।

মো. জিহাদ নামে ইলিয়াসের আরেক বন্ধু বলেন, ইলিয়াস দীর্ঘদিন ধরে মোটরসাইকেলে নান্দনিকভাবে বিভিন্ন কসরত দেখান। তার এ প্রভিতা দেশ বিদেশে ছড়িয়ে পড়ছে এখন। আমরা তার সফলতা কামনা করছি।

মোটরসাইকেল চালক ইলিয়াস শিকদার বলেন, ছোটবেলা থেকেই মোটরসাইকেল চড়া ও চালানোর শখ ছিল আমার। মোটরসাইকেল চালানোর সময় আমি খেয়াল করি মানুষ এই মোটরসাইকেল দিয়ে বিভিন্ন স্টান করেন। তবে স্টানের শব্দটা আমার ভালো লাগে না। স্টান অনেক ভালো লাগে আমার। দেশ-বিদেশে মানুষ অনেক রকম স্টান করে। তখন আমি চিন্তা করি, এমন একটা স্টান করবো যেটাতে মানুষের আরো ভালো লাগবে, মানুষ তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবে। তখন আমি মোটারসাইকেলের উপর দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। দাঁড়ানোটা অল্প সময়ে হয়ে গেলেও, চলন্ত মোটরসাইকেল নিজ নিয়ন্ত্রণে রাখা শিখতে আমরা অনেক সময় লেগেছে।

তিনি আরো বলেন, ব্যতিক্রমী কিছু করার চিন্তা ভাবনা থেকেই এই প্রয়াস। মৃত্যুর ঝুঁকি থাকায় তিনি তার মতো করে মোটরসাইকেলের উপর দাঁড়িয়ে মোটরসাইকেল কেউ যেন না চালায়।

ইলিয়াস ব্যবসার পাশাপাশি লেখালেখিও করেন। তার লেখা ‘প্রেম তুমি কি’ নামে একটি উপন্যাস খ্যাতি অর্জন করেছে।