শরীয়তপুরে চিয়া চাষে আগ্রহ বাড়ছে

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

শরীয়তপুরে চাষ হচ্ছে সুপার ফুড হিসেবে পরিচিত ‘চিয়া সিড’। জেলার গোসাইরহাট ও জাজিরা উপজেলায় পরীক্ষামূলক চাষে সফলতাও পেয়েছেন কৃষক। কৃষক পর্যায়ে এ সিড ৬০০-১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

জেলার গোসাইরহাট উপজেলার পূর্ব কোদালপুর গ্রামের শিক্ষিত বেকার ইমরান হোসেন। সমাজকর্মে স্নাতকোত্তর পাসের পর কোনো চাকরি না পেয়ে গ্রামে এসে চাষাবাদ শুরু করেন মেক্সিকান উচ্চ মূল্যের ফসল চিয়া সিড। নিজেদের ৩৬ শতক জমিতে চাষ করে সফলও হন তিনি। অন্য ফসলের চেয়ে খরচ অনেক কম কিন্তু ওষধিগুণ সমৃদ্ধ এ ফসলটি বিক্রি করে লাখ টাকার স্বপ্ন এখন ইমরানের। সঠিক প্রশিক্ষণ পেলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা যাবে বলে মনে করেন তিনি।

ইমরান হোসেন বলেন, ইউটিউবে চিয়াসিড সম্পর্কে জানার পর পরীক্ষামূলকভাবে ৩৬ শতাংশ জমিতে চাষ করেছি। কিন্তু উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের চিয়াসিড সম্পর্কে তেমন ধারণা না থাকায় তারা সঠিক পরামর্শ দিতে পারেন নি। সরকার যদি আমাদের সঠিক প্রশিক্ষণ ও কৃষিঋণের ব্যবস্থা করে দেয় চিয়াসিড চাষ করে অনেক লাভবান হতে পারবো।

তিনি আরও বলেন, ৩৬ শতাংশ জমিতে চিয়া বীজ রোপণ করি। বোনা থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলা পর্যন্ত ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ২০০ কেজি চিয়াসিড পেয়েছি। যার বর্তমান পাইকারি বাজার মূল্য এক লক্ষ বিশ হাজার টাকারও বেশি।

ইমরানের মতো জাজিরা উপজেলার অনেকে সিয়া সিড চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সংগৃহীত চিয়া বীজ চাষ করা যায় তিন শতক জমিতে। সার, সেচ আর কীটনাশাক খরচ নেই বললেই চলে। কিন্তু ফলন হয়েছে ভালো। চাষাবাদ খরচ কম এবং বাজার মূল্য বেশি থাকায় স্থানীয় কৃষকদের মাঝে বেশ সাড়া পড়েছে। প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে আসছেন কৃষক। নতুন এ ফসল চাষে তাদের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।

জাজিরার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (সেনেরচর) নজরুল ইসলাম বলেন, শরীয়তপুরের মাটি ও আবহাওয়া চিয়া চাষের জন্য বেশ উপযোগী। নতুন ফসল হিসেবে এ অঞ্চলে চিয়া শস্যের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জামাল হোসেন বলেন, বাজারে এ শস্যের দাম বেশি। চাষিদের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টি হলে কৃষক যেমন লাভবান হবেন তেমনি কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে চিয়া শস্যের আমদানি নির্ভরতা কমে আসবে।

এ বিষয়ে পুষ্টিবিদ ডা. শাহিনুর নাজিয়া জাগো নিউজকে বলেন, চিয়াতে প্রচুর পরিমাণে অমেগা থ্রি, ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। এ শস্য দানা ওজন কমানো, ডায়েবেটিসের ঝুঁকি মোকাবেলা ও পুষ্টি নিরাপত্তাসহ মানবদেহের জন্য উপকারী।