সংবাদ প্রকাশ করায় উপাচার্যের রোষানলের শিকার সাংবাদিক

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২ years ago

কুবি প্রতিনিধি ।। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসির) নির্দেশনার পরও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় নাম পাল্টে উইকেন্ড প্রোগ্রাম চালু রাখা সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশের পর ওই প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড এ এফ এম আবদুল মঈনের রোষানলের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) উপাচার্যের কার্যালয়ে অন্য একটি সংবাদের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য নিতে গেলে দেশ রুপান্তর পত্রিকার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নাঈমুর রহমান রিজভীকে বিভিন্ন তীর্যক মন্তব্য করেন উপাচার্য।

এসময় উপাচার্য দেশ রুপান্তরের প্রতিবেদককে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তুমি এটা কী রিপোর্ট করেছো, বলো আমাকে? কীসের জন্য করেছো এই রিপোর্ট? কোনো অসুবিধা হইছে বিশ্ববিদ্যালয়ের? তোমাদের পারপাস (উদ্দেশ্য) কী? বিশ্ববিদ্যালয়র সুনাম নষ্ট করা? তোমরা বসে আছো বিশ্ববিদ্যালয়র মান সম্মান নষ্ট করার জন্য।

উপাচার্য এসময় পাশে থাকা অন্যান্য প্রতিবেদকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, তোমরা একটি নিউজ করেছো, উপাচার্য সুদুত্তর দিতে পারে নাই। আমি তো সব উত্তর দিয়েছি, তোমরা বলেছো সুদুত্তর দেয়নি। হাউ ডিয়ারিং দিস গাইস আর (এদের কত বড় সাহস)। হু পেইস ইউ ফর দিস (এসবের জন্য কে তোমাদেরকে টাকা দেয়)? আমি তোমাদের কোনো ইটারভিউ দেব না। তোমাদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় নাই।

এসময় সংবাদের বিষয়ে প্রতিবেদকদের বক্তব্য না দিয়ে বিভিন্ন ক্ষোভ প্রকাশ করে নিজের কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান উপাচার্য।

এ বিষয়ে দেশ রুপান্তর পত্রিকার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি নাঈমুর রহমান রিজভী বলেন, একটি সংবাদের বক্তব্য নিতে আমি উপাচার্যের কার্যালয়ে গেলে তিনি দেশ রুপান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত ‘নাম বদলে সান্ধ্যকালীন কোর্স’ শিরানামে সংবাদের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, তোমাদের কে পেমেন্ট করে? তোমাদের কে চালাচ্ছে? তোমাদের এত সাহস? এমন বিভিন্ন তীর্যক মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে গত ১০ সেপ্টেম্বর দেশ রুপান্তর পত্রিকায় ‘নাম বদলে সান্ধ্যকালীন কোর্স’  শিরানামে একটি প্রতিবদন প্রকাশিত হয়। ইউজিসি থেকে এসব প্রোগ্রাম বন্ধ রাখার নির্দেশনা থাকলেও নাম বদল করে ‘উইকেন্ড প্রোগ্রাম’ নামে কোর্স চালু রেখেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে। এর মধ্যে ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের উইকেন্ড ১৮তম ব্যাচের এমজিটি-৫০৭ এন্ট্রারপ্রেনিউর ডেভেলপমেন্ট কোর্সের ক্লাস নিয়েছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মঈন। ইউজিসির নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে খোদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যই এসব প্রোগ্রামে ক্লাস নেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

সাংবাদিক হেনস্তার বিষয়ে উপাচার্যের মন্তব্য জানতে গতকাল সন্ধ্যা থেকে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। দুয়েকবার কল রিসিভ করলেও ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে কল কেটে দিয়েছেন। উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, আমি মনে করি সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকর্মীদের উচিৎ পেশাদারিত্ব বজায় রাখা এবং উপাচার্যেরও উচিৎ আচরণে পেশাদারিত্ব সমুন্নত রাখা।