সামনেও যত উজান হোক, নৌকা এগিয়ে যাবে: শেখ হাসিনা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১ বছর আগে

নৌকা মার্কা স্বাধীনতা এনেছে, নৌকা মার্কায় যত উন্নয়ন দিয়েছে, সামনেও যত উজান ঠেলে হোক, নৌকা মার্কা এগিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) কালশী মোড় বালুর মাঠে আয়োজিত কালশী ফ্লাইওভার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটের অধিকারে বিশ্বাস করে। অনেক সংগ্রামের পথ বেয়ে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছি। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় আছি বলেই উন্নয়ন করতে পেরেছি। আর আগামীর বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ। আমরা সম্মানের সঙ্গে বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলতে চাই। কারো কাছে হাত পাতবো না। এজন্য সামনে যে খাদ্য সংকট আছে, সেজন্য ফসল উৎপাদন করেন। নিজেদের চাহিদা পূরণ করবো। দরকার হলে অন্যদের সহযোগিতা করবো।

শেখ হাসিনা বলেন, কেউ যদি ভোট চুরি করে, এদেশের মানুষ মেনে নেয় না। ৯৬ সালে কিন্তু ১৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া ভোট চুরি করেছিল। পরে জনগণের আন্দোলনের ফলে খালেদা জিয়া পদত্যাগে বাধ্য হয়েছিল। এরপর ২০০১ সালে দুর্নীতি আর জঙ্গিবাদে বাংলাদেশের মর্যাদা ধুলিস্যাত করেছে। ২০০৮ এর নির্বাচনে তারা ৩০০ সিটের মধ্যে মাত্র ৩০ সিটি পেয়েছে। আর আমরা মানুষের মন জয় করে তাদের ভোটে ক্ষমতায় এসেছি। মানুষের ভোট ও সমর্থনের মর্যাদাও রেখেছি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে দেশে ও দেশের বাইরে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছি। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। নৌকা মার্কা স্বাধীনতা এনেছে, নৌকা মার্কায় যত উন্নয়ন দিয়েছে, সামনেও যত উজান ঠেলে হোক, নৌকা মার্কা এগিয়ে যাবে।

এ সময় ঢাকায় বসবাসরত উর্দু ভাষি অবাঙালিদের উন্নত জীবনযাপনের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ফ্ল্যাট করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, উর্দু ভাষিদের জন্য উন্নত মানের ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য নির্দেশ দিয়েছি। সুন্দরভাবে যেন এই অবাঙালিরা বসবাস করতে পারে, সেই ব্যবস্থা করে দেব।

তিনি বলেন, আমরা জনগণের সুবিধার দিকে লক্ষ্য করেই পরিকল্পনা করি। ঢাকা সিটি করপোরেশনকে বিভক্ত করে দেই। বিভক্তির পর দুই সিটিতে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা খরচ করে নানা উন্নয়ন প্রকল্প করা হয়েছে। দক্ষিণে পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য ফ্ল্যাট করে দিয়েছি। উত্তরেও করে দেবো। উর্দু ভাষিদের জন্যও সেটি হবে। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে একটি মানুষও ভূমিহীন ও গৃহহীন থাকবে না।

যায়গা পেলেই ভবন নির্মাণের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমাদের কিছু লোক আছে, একটু যায়গা খালি পেলেই ভবন নির্মাণ করতে আসে। এই যে কালশী বালুর মাঠ; এটা বিনোদন পার্ক হবে। এখানে ছেলেমেয়েদের খেলাধুলার ব্যবস্থা হবে। শিশুদের জন্য পার্ক করা হবে। যুবকদের জন্য ক্রিকেট ও ফুটবল খেলার ব্যবস্থা ও প্রশিক্ষণের জন্য ব্যবস্থা থাকবে। প্রবীণদের জন্য হাঁটার ব্যবস্থাও রাখা হবে। তবে এই মাঠ যেন মাঠ থাকে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যমুনা নদীর ওপর সেতু করতে যাই। তখন রেল সেতুও সংযুক্ত করতে চাই। বিশ্বব্যাংক বাধা দিয়েছিল। তারা বলেছে, সেটা লাভজনক হবে না। এখন আবার বিশ্বব্যাংকই ফিরে এসেছে, যমুনা নদীতে রেল সেতু করতে। আমি অনুমতি দিয়েছি। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে। দেশটা আমাদের। কোথায় কী হবে, হবে না। কী লাগবে, লাগবে না। এটা আমরাই ভালো বুঝি। এই ধারণাটা আমাদের থাকতে হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা উত্তর সিটি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, চিফ অব আর্মি স্টাফ জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ ও স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিম।

সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কালশী মোড় সংলগ্ন বালুরমাঠ, মিরপুর, ঢাকায় ইসিবি চত্বর থেকে মিরপুর পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন এবং কালশীমোড়ে নির্মিত ফ্লাইওভার এর নামফলক উন্মোচন করেন। এরপর থেকে এটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। ১ হাজার ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি সম্পন্ন করেছে বিএনসিসি ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।