তীব্র তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ইউরোপের মানুষের জনজীবন। কেবল স্পেন আর পর্তুগালেই এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৭০০ জনেরও বেশি মানুষের। সেখানে এখন যে দাবদাহ চলছে, তা আরো নিয়মিত আর স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। এই প্রবণতা চলবে অন্তত ২০৬০-এর দশক পর্যন্ত। জাতিসংঘ মঙ্গলবার এসব কথা জানিয়ে দাবদাহ নিয়ে বিশ্ববাসীকে সতর্ক করেছে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) বলছে, বায়ুমণ্ডলে বেশি কার্বন ডাই-অক্সাইড নির্গত করে, এমন দেশগুলোর জন্য বর্তমান তাপপ্রবাহটি একটি সতর্ক সংকেত। যদি কার্বন নির্গমন বন্ধ করা না হয়, তাহলে বিশ্বকে এর চূড়ান্ত মুহূর্তটি দেখতে হতে পারে।
স্পেনের কার্লোস থ্রি ইনস্টিটিউটের মতে, গত সপ্তাহ তথা ১০ থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৬৭৮ জনের। পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে, মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যাও নির্ণয় করা যাচ্ছে না। এ দুই দেশে এ অবস্থা আগামী সপ্তাহ বা তারও বেশি সময় ধরে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যে সর্বকালের উচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভাঙছে।
এদিকে, দাবানল অব্যাহত থাকলেও এক দিনের ব্যবধানে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সে তাপমাত্রা নেমে এসেছে অর্ধেকে। এরই মধ্যে ফ্রান্সের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ভয়াবহ দাবানল নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে। ফ্রান্সে মঙ্গলবার রেকর্ড করা ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রা থেকে নেমে গতকাল বুধবার ২০ ডিগ্রিতে দাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের তাপমাত্রাও অনেকটাই কমেছে, যা গত মঙ্গলবার ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যায়। গ্রিসে রাজধানী এথেন্সের উত্তর-পূর্বে মাউন্ট পেন্টেলিতে প্রায় ৫০০ অগ্নিনির্বাপণ কর্মী দাবানল নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। এর আগে বড় ধরনের দাবানল ইতালিতেও প্রভাব ফেলেছে। ফলে আজ দেশটিকে সর্বোচ্চ তাপদাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
তাপদাহ উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হওয়ায় গতকাল বুধবার জার্মানির কিছু অংশে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এতে পরিবহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সাগর ও নদীতে পানির স্তর কমে যাওয়ায় দেশটির কার্গো জাহাজগুলোতে মালপত্র কম বোঝাই করতে হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।